Quantcast
Channel: Truth Revealer
Viewing all 358 articles
Browse latest View live

স্ত্রীকে লেখা আব্দুল কাদের মোল্লার শেষ চিঠি(মুল কপি)

$
0
0

16 Dec, 2013
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম 
প্রিয়তমা জীবন সাথী পেয়ারী,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

আজ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর খুব সম্ভব আগামী রাত বা আগামীকাল জেলগেটে আদেশ পৌছানোর পরই ফাঁসির সেলে আমাকে নিয়ে যেতে পারে। এটাই নিয়ম। সরকারের সম্ভবত শেষ সময়। তাই শেষ সময়ে তারা এই জঘন্য কাজটি দ্রুত করে ফেলার উদ্যোগ নিতে পারে। আমার মনে হচ্ছে তারা রিভিউ পিটিশন গ্রহণ করবে না। যদি করেও তাহলে তাদের রায়ের কোন পরিবর্তন হওয়ার দুনিয়ার দৃষ্টিতে কোন সম্ভাবনা নেই।মহান আল্লাহ যদি নিজেই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সিদ্ধান্ত কার্যকর করেন, তাহলে ভিন্ন কথা। অথচ আল্লাহর চিরন্তন নিয়মানুযায়ী সব সময় এমনটা করেন না। অনেক নবীকেও তো অন্যায়ভাবে কাফেররা হত্যা করেছে। রাসূলে করীম (স:) এর সাহাবায়ে কেরাম এমনকি মহিলা সাহাবীকেও অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। আল্লাহ অবশ্য ঐ সমস্ত শাহাদাতের বিনিময়ে সত্য বা ইসলামকে বিজয়ী করার কাজে ব্যবহার করেছেন। আমার ব্যাপারে আল্লাহ কি করবেন তা তো জানার উপায় নেই। গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং এসে আওয়ামী লীগকে শুধু সাহসই দেন নাই, হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদকে চাপও দিয়েছেন। এবং সতর্ক করার জন্য জামায়াত শিবিরের ক্ষমতায় আসার ভয়ও দেখিয়েছেন। এতে বুঝা যায় যে জামায়াত এবং শিবির ভীতি এবং বিদ্বেষ ভারতের প্রতি রক্তকনায় কিভাবে সঞ্চারিত। আমি তো গোড়া থেকেই বলে আসছি, আমাদের বিরুদ্ধে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে এটার সবটা ছকই ভারতের অঙ্কন করা। আওয়ামী লীগ চাইলে এখান থেকে পেছাতে পারবে না। কারণ তারা ভারতের কাছে আত্মসমর্পনের বিনিময়েই এবার ক্ষমতায় পেয়েছে। অনেকেই নীতি নৈতিকতার প্রশ্নে কথা বলেন, আমাকে সহ জামায়াতের সকলকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে যে কায়দায় জড়ানো হয়েছে এবং আমাদের দেশের প্রেসের প্রায় সবগুলোই সরকারকে অন্যায় কাজে সহযোগিতা করছে, তাতে সরকারের পক্ষে নীতি নৈতিকতার আর দরকার কি? বিচারকরাই স্বয়ং যেখানে জল্লাদের ভূমিকায় অত্যন্ত আগ্রহভাবে নিরপরাধ মানুষকে হত্যার নেশায় মেতে উঠেছে তাতে স্বাভাবিক ন্যায় বিচারের আশা অন্তত এদের কাছ থেকে করা কোনক্রমেই সমীচিন নয়। তবে একটি আফসোস, যে আমাদেরকে বিশেষ করে আমাকে যে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে, তা জাতির সামনে বলে যেতে পারলাম না। 

গণমাধ্যম বৈরী থাকায় এটা পুরাপুরি সম্ভবও নয়। তবে জাতি পৃথিবীর ন্যায়পন্থী মানুষ অবশ্যই জানবে এবং আমার মৃত্যু এই জালেম সরকারের পতনের কারণ হয়ে ইসলামী আন্দোলন অনেক দূর এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কালই সূরা আত-তাওবার ১৭ থেকে ২৪ আয়াত আবার পড়লাম। ১৯ নং আয়াতে পবিত্র কাবা ঘরের খেদমত এবং হাজীদের পানি পান করানোর চাইতে মাল ও জান দিয়ে জেহাদকারীদের মর্যাদা অনেক বেশি বলা হয়েছে। অর্থাৎ স্বাভাবিক মৃত্যুর চাইতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আল্লাহর দেয়া ন্যায়ভিত্তিক ব্যবস্থা অর্থাৎ ইসলাম প্রতিষ্ঠার জেহাদে মৃত্যুবরণকারীদের আল্লাহর কাছে অতি উচ্চ মর্যাদার কথা আল্লাহ স্বয়ং উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ নিজেই যদি আমাকে জান্নাতের মর্যাদার আসনে বসাতে চান তাহলে আমার এমন মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত। কারণ জালেমের হাতে অন্যায়ভাবে মৃত্যু তো জান্নাতের কনফার্ম টিকেট। সম্ভবতঃ ১৯৬৬ সালে মিসরের জালেম শাসক কর্নেল নামের সাইয়্যেদ কুতুব, আব্দুল কাদের আওদাসহ অনেককে ফাঁসি দিয়েছিলেন। “ইসলামী আন্দোলনের অগ্নি পরীক্ষা” নামক বিষয়ে বিভিন্ন শিক্ষা শিবিরে বক্তব্য শুনেছি। একাধিক বক্তব্যে অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব বাম হাতটা গলার কাছে নিয়ে প্রায়ই বলতেন, ‘ঐ রশি তো এই গলায়ও পড়তে পারে’। আমারও হাত কয়েকবার গলার কাছে গিয়েছে। এবার আল্লাহ যদি তার সিদ্ধান্ত আমার এবং ইসলামের অগ্রগতির সাথে সাথে জালেমের পতনের জন্য কার্যকর করেন, তাহলে ক্ষতি কি? শহীদের মর্যাদার কথা বলতে গিয়ে রাসূলে করিম (সঃ) বারবার জীবিত হয়ে বারবার শহীদ হওয়ার কামনা ব্যক্ত করেছেন। 






















যারা শহীদ হবেন, জান্নাতে গিয়ে তারাও আবার জীবন এবং শাহাদাত কামনা করবেন। আল্লাহর কথা সত্য, মুহাম্মদ (সঃ) এর কথা সত্য। এ ব্যাপারে সন্দেহ করলে ঈমান থাকে না। এরা যদি সিদ্ধান্ত কার্যকর করে ফেলে তাহলে ঢাকায় আমার জানাযার কোন সুযোগ নাও দিতে পারে। যদি সম্ভব হয় তাহলে মহল্লার মসজিদে এবং বাড়িতে জানাযার ব্যবস্থা করবে। পদ্মার ওপারের জেলাগুলোর লোকেরা যদি জানাযায় শরীক হতে চায়, তাহলে আমাদের বাড়ীর এলাকায়ই যেন আসে। তাদেরকে অবশ্যই খবর দেয়া দরকার। কবরের ব্যাপারে তো আগেই বলেছি আমার মায়ের পায়ের কাছে। কোন জৌলুষপূর্ণ অনুষ্ঠান বা কবরের বাধানোর মত বেদআত যেন না করা হয়। সাধ্যানুযায়ী ইয়াতিম খানায় কিছু দান খয়রাত করবে। ইসলামী আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতা করবে। বিশেষ করে আমার গ্রেফতার এবং রায়ের কারণে যারা শহীদ হয়েছে, অভাবগ্রস্থ হলে ঐসব পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিতে হবে। হাসান মওদূদের পড়াশুনা এবং তা শেষ হলে অতি দ্রুত বিবাহ শাদীর ব্যবস্থা করবে। নাজনীনের ব্যাপারেও একই কথা। 

পেয়ারী, হে পেয়ারী, 

তোমাদের এবং ছেলেমেয়ের অনেক হকই আদায় করতে পারিনি। আল্লাহর কাছে পুরষ্কারের আশায় আমাকে মাফ করে দিও। তোমার জন্য বিশেষভাবে দোয়া করেছি যদি সন্তান-সন্ততি এবং আল্লাহর দ্বীনের জন্য প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আল্লাহ যেন আমার সাথে তোমার মিলিত হওয়ার ব্যবস্থা করেন। এখন তুমি দোয়া করো, যাতে আমাকে দুনিয়ার সমস্ত মায়া-মহব্বত আল্লাহ আমার মন থেকে নিয়ে শুধু আল্লাহ এবং রাসূলে করীম (সঃ) এর মহব্বত দিয়ে আমার সমস্ত বুকটা ভরে দেন। ইনশাআল্লাহ, জান্নাতের সিড়িতে দেখা হবে। সন্তানদেরকে সবসময় হালাল খাওয়ার পরামর্শ দিবে। ফরজ, ওয়াজিব, বিশেষ করে নামাজের ব্যাপারে বিশেষভাবে সকলেই যত্মবান হবে। আত্মীয়-স্বজনদেরকেও অনুরূপ পরামর্শ দিবে। আব্বা যদি ততদিন জীবিত থাকেন তাকে সান্তনা দিবে। 
তোমাদেরই প্রিয় 
আব্দুল কাদের মোল্লা


বাংলাদেশ নামের জেলখানা

$
0
0
ফাইল ছবিনির্বাচন প্রক্রিয়াকে সুকৌশলে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর শীর্ষ ৬ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একই সময়ে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আয়কর ফাঁকি দেয়া ও পুলিশের বিরুদ্ধে হামলা উস্কে দেয়া। তাদের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এর অর্থ হলো নির্বাচনে তাদেরকে অংশগ্রহণ করতে না দেয়া। বিরোধীদলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এভাবে অভিযোগ এনে তাদেরকে নীরব করে দেয়া একটি পরিচিত খেলা। গতকাল বৃটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত ‘দ্য প্রিজন দ্যাট ইজ বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। শিরোনামটির বাংলা করলে দাঁড়ায়- বাংলাদেশ নামের জেলখানা। এর লেখক জন পিলজার। এতে তিনি আরও লিখেছেন, সমপ্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের হাতে নিয়েছেন আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর অর্থ হলো, তার দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় এসব শীর্ষ নেতা নির্বাচন করতে পারবেন নাকি তাদেরকে জেলেই ভুগতে হবে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার মালিক প্রধানমন্ত্রী নিজে।
এরই মধ্যে নির্বাচনে নিবন্ধিত হওয়ার তারিখ পেরিয়ে গেছে। ফলে বিরোধী নেতারা নির্বাচনের সুযোগ হারিয়েছেন। নির্বাচনী শিডিউল ঘোষণার অল্প পরেই এসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের একজন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তার পিটুইটারি গ্রন্থিতে রয়েছে টিউমার। তিনি অসুস্থ। এ কথা বিবেচনায় নিয়ে কমপক্ষে তাকে এখনই মুক্তি দেয়া উচিত। জন পিলজার লিখেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সমর্থন করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এখন তিনি অসুস্থ। জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে দমন- পীড়ন চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই অংশ হিসেবে মওদুদ আহমদ জেলে রয়েছেন। তিনি আরও লিখেছেন, ১৯৭১ সালের অন্ধকার এক রাত। পাকিস্তানি সেনারা তখনকার পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ)-এ যেসব গ্রামে ধর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল সে সব গ্রাম পার হয়ে যাচ্ছিলাম আমি। আমাকে মোমবাতি হাতে নিয়ে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন মওদুদ আহমদ। তখন স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছিল। মওদুদ আহমদ তখন একজন যুবক আইনজীবী। তিনি পক্ষ নিয়েছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের। ওই বছর যখন পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল তখন আমি লন্ডনের ডেইলি মিরর পত্রিকায় একটি রিপোর্ট লিখেছিলাম। প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ওই রিপোর্টের শিরোনাম ছিল ‘বার্থ অব এ নেশন’। স্বাধীনতা ঘোষণা করা হলে মওদুদ সেই পত্রিকাটি হাতে নিয়ে র‌্যালি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন- আমরা বেঁচে আছি। কিন্তু এখনও আমরা স্বাধীন নই। জন পিলজার আরও লিখেছেন, একবার যখন শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় এলেন তিনি নিজেই গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়ে ওঠেন। শুরু হয় গ্রেপ্তার ও লোকদেখানো বিচার। তখন মওদুদ ছিলেন অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজেও গ্রেপ্তার হন। জেল ও পার্লামেন্টের মধ্যে যখন মওদুদের জীবন এগোতে থাকে তখন হত্যাকাণ্ড, অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটতে থাকে। ১৯৮০’র দশকে তাকে প্রধানমন্ত্রী বানানো হয়। এখানে বলা ভাল যে, তখন বাংলাদেশের বয়স কম। সে সময়েই সামন্ততন্ত্রী ও গণতন্ত্রীদের মধ্যে সংঘাতে অনেকটা ক্ষতি হয়ে যায়। বর্তমানে সে ক্ষতি হচ্ছে কট্টরপন্থিদের কারণে। আগামী ৫ই জানুয়ারি জাতীয় সংসদের নির্বাচন। শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি দেশকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থাকে যথেচ্ছ ব্যবহার করেছেন। বর্তমানে মওদুদ অসুস্থ। তার স্ত্রী কবি হাসনা জসীম উদ্‌দীন মওদুদ এক সময় বলেছিলেন, দেশ একটি জেলখানায় পরিণত হয়েছে। এ কথা বিশ্বকে জানতেই হবে।
http://mzamin.com/details.php?mzamin=MzEzNA%3D%3D&s=Mg%3D%3D#.Uq5N4fj66-E.facebook

আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির তীব্র নিন্দা জাতিসংঘের

$
0
0
সংগ্রাম ডেস্ক : জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। একইসঙ্গে সব পক্ষকে শান্ত ও সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রাইম নিউজ।
এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বান কি মুনের মুখপাত্র মার্টিন নেসিরকি বলেছেন, কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব। তিনি বলেন, মহাসচিব ফাঁসি কার্যকর করাকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে স্পর্শকাতর মুহূর্তে এমন মৃত্যুদ- না দিতে বলেছিলেন তিনি। এছাড়া যে কোনো পরিস্থিতিতে মৃত্যুদ-ের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধের ক্ষেত্রেও জাতিসংঘ মৃত্যুদ-ের বিরুদ্ধে বলে জানিয়েছেন নেসিরকি।

সেভ বাংলাদেশে সুইডেনের প্রতিবাদ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদ জানিয়েছে সেভ বাংলাদেশ, সুইডেন নামের একটি সংগঠন। সেই সাথে এই ফাঁসিকে পরিকল্পিত ও ন্যক্কারজনক জুডিশিয়াল কিলিং বলে অভিহিত করেছে সংগঠনটি। গত শনিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে রাজধানী স্টকহোমের প্রাণকেন্দ্র মেদবরিয়ার প্লাতসেনের চত্বরে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি করেছেন বক্তাগণ। শীর্ষ নিউজ।
‘সেভ বাংলাদেশ’ সুইডেনের ব্যানারে আয়োজিত এই বিক্ষোভ সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুণ সুইডেনের স্থানীয় রাজনীতিবিদ আব্দুল ওয়াহিদ।
বিক্ষোভ সমাবেশে মিসর, তুরস্ক, সিরিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের লোকেরা অংশগ্রহণ করেন। বিদেশীদের মধ্য থেকে অনেকেই বক্তব্য দেন এ বিক্ষোভ সমাবেশে। বক্তব্য রাখেন মুসলিম এসোসিয়েশন ইন সুইডেনের নেতা আব্দুল্লাহ সালেহ, সুইডিশ মুসলিম পিচ এন্ড জাস্টিস-এর সভাপতি ইয়াসরি খান, সুইডিশ ইয়াং মুসলিম-এর অন্যতম নেতা ও সুইডেনের সাংবাদিক নেতা রাশিদ মুসা, স্থানীয় ইসলামী নেতা, আমার দেশ পাঠক মেলা সুইডেনের আহ্বায়ক রেজাউল হক, সাংবাদিক ও কমুনিটি নেতা নিয়ামত উল্লাহ মিয়া প্রমুখ।

কাদের মোল্লার রায় নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর বিবৃতি ও শাহবাগী মিথ্যাচার

$
0
0
গত কয়েকদিন আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, তাদের মিডিয়া এবং শাহবাগী তরুণ প্রজন্ম প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মানুষকে এমনটা বুঝাতে চেয়েছে যে জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আসলে নীতিগত কারণে মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে, এমনিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। শাহবাগীদের এমন দাবী আসলে সত্যের সম্পূর্ণ অপলাপ।

যেমন, হিউম্যান ওয়াচ তাদের বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলেছে, "Accused Should Have Right to Appeal in Case Rife with Fair Trial Problems."

লিংকঃ http://www.hrw.org/news/2013/12/08/bangladesh-halt-execution-war-crimes-accused

জাতিসংঘের হাই কমিশনার নাভি পিল্লাইয়ের বিবৃতিতে বিষয়টা এসেছে এভাবে, "The High Commissioner urged the Bangladeshi Government not to proceed with the death penalty in cases before the International Crimes Tribunal, particularly given concerns about the fairness of the trials."

লিংকঃ http://www.un.org/apps/news/story.asp?NewsID=46704&Cr=death+penalty&Cr1#.Uq2dVt98Lv4

এই দুই বিবৃতিতে তারা স্পষ্টভাবে ট্রাইব্যুনালের fairness নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু শাহবাগীরা সুচতুরভাবে এসব বিষয় এড়িয়ে যায়। 



হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং জাতিসংঘ খুব ভাল করেই জানে, মোমেনা বেগমের সাক্ষ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে এবং আব্দুল কাদের মোল্লার ডিফেন্স সাক্ষীদের বক্তব্য অনুযায়ী কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় ফরিদপুরে ছিলেন এমনকি মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং পর্যন্ত নিয়েছিলেন বলে যে সাক্ষ্য এসেছে তা ট্রাইব্যুনাল মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেনি কিন্তু রায় লেখার সময় এসব সাক্ষ্য একদম আমলেই আনেনি। অর্থাৎ সত্য সাক্ষ্য আব্দুল কাদের মোল্লার পক্ষে থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ মিথ্যা সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তাই এসব বিশ্বখ্যাত মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আপত্তি যতটুকু না মৃত্যুদণ্ড নিয়ে, তার থেকে বেশি আপত্তি একজন নির্দোষ মানুষকে কেবলমাত্র তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায় হত্যা করা নিয়ে।

জামায়াত শিবির কি জাসদের ভাগ্য বরণ করবে না আরো শক্তিশালী হবে ?

$
0
0


অনেক ভাইকে স্টাটাস দিতে দেখেছি , তাদের কনসার্ন হলো জামায়াত কি জাসদের ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছে ? তারা উদাহরণ দিচ্ছেন শেখ মুজিবের রক্ষী বাহিনীর মত বাংলাদেশের কসাই হাসিনা ও র্যাব দিয়ে নিরপরাধ জামায়াত কর্মীদের হত্যা করছে। আসলে আমাদের এতো তাড়াতাড়ি এই রকম জাস্টিফিকেশনে যাওয়া উচিত না। আমাদের বুঝতে হবে জামায়াত আর জাসদের আদর্শ এক না। জামায়াত আল্লাহর উপর নির্ভর করে ইসলামিক আন্দোলন করেতেছে আর জাসদ নাস্তিকতার উপর।অন্যদিকে কসাই হাসিনার এখন শেষ সময়। তাই মরার আগে একটু বেশি লাফাচ্ছে। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নাই। 

আর যারা দুনিয়ার ইসলামিক আন্দোলনের খোজ খবর রাখেন তাদের বুঝা উচিত বর্তমান জামায়াত শিবির থেকে ও বিশ্বের অন্যান্য ইসলামিক আন্দোলনগুলো আরো বেশি ত্যাগ করেছে , ধৈর্য্য ধরেছে। কই মুসলিম ব্রাদারহুডের তো একে পার্টির মত অবস্থা হয়নি ? তুরুস্কের একে পার্টি ক্ষমতায়। মুর্সিকে জোর করে ক্ষমতা থেকে সরালে ও মিশরের ৬৮ % মানুষ মূর্সিকে এখনো ক্ষমতায় চায়। মুর্সিকে যখন ক্ষমতা থেকে সরানোর প্রতিবাদে রাবেয়া স্কয়ারে অবস্থানরত মুসলিম ব্রাদারহুডের উপর চালানো হয়েছিলো ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা। শহীদ হয় ৩০০০ মানুষ। জামায়াতের মত তাদের সব সিনিয়র নেতারা জেলে। কই তারা তো হতাশ হয়নি। উল্টো দ্বিগুন উত্সাহে প্রত্যেক দিন সেনাদের বুলেটের মুখে বিক্ষোভ করছে। দিন দিন তাদের মিছিলের সারি লম্বা হচ্ছে। 

বাংলাদেশ বতমানে যেই ত্যাগ তিতিক্ষা দেখাচ্ছে মিশরের ব্রাদারহুড সেটা ৭০ এর দশকে দেখিয়েছে। বুঝতে হবে জামায়াত শিবির এখনো ব্রাদারহুড থেকে ৪০ বছর পিছিয়ে আছি। আগামী ৪০ বছরে বাংলাদেশের ইসলামিক আন্দোলন আরো বেশি বেগবান হবে এবং যদি কিছু কৌশল অবলম্বন করে তাহলে তারাই ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে থাকবে এটা আমার বিশ্বাস। 

বাংলাদেশের গত ৫ বছরের প্রেক্ষাপট দেখুন না। জামায়াত শিবিরের উপর এতো অত্যাচার জুলুমের পর ও কি আন্দোলন থেমে গেছে ? নাকি আগের চেয়ে ও বেশি সাধারণ মানুষ জামায়াত শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে আন্দোলন করছে। কথিত যুদ্বাপরাধের অভিযোগে নেতাদের অভিযুক্ত করার পর ৫০ জন সাধারণ মানুষ সরকারের এই ট্রাইবুনালের বিরুদ্বে প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেছে। প্রত্যেক দিন জামায়াত শিবিরের শহীদের তালিকা যেমন দীর্ঘ হচ্ছে তেমনি শহীদ হওয়ার পিপাসায় এই আন্দোলনে আরো বেশি মানুষ সম্পৃক্ত হচ্ছে। তাহলে এই ক্ষুদ্র সময়ে জাসদের মত জাস্টিফিকেশনে যাওয়া কি ঠিক ??? 

জনাব কাদের মোল্লাকে আওয়ামীলীগ পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে হত্যা করার পর কাদের মোল্লার রক্ত কিন্তু কথা বলা শুরু করেছে। অনলাইনে যাদেরকে কখনোই দেখি নাই জামায়াত শিবির নিয়ে একটি কথা বলতে , আজ তারা শহীদ কাদের মোল্লার জন্য ফেসবুকে স্টাটাস দেয় , ব্লগ লিখে। যারা জামায়াত শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত না , এই রকম হাজারো মানুষ শহীদ কাদের মোল্লার জন্য নফল রোজা ও নামাজ পড়ে কেদেছে। 



লন্ডনে যাদেরকে এক সময় দেখতাম শাহবাগীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলো তারা আজ শহীদ কাদের মোল্লার জন্য আফসুস করতেছে। ফোন দিয়ে জামায়াত শিবিরের লোকদের সান্তনা দিচ্ছে। তাহলে বুঝুন কাদের মোল্লাকে শহীদ করে এই পার্থিব দুনিয়াতে হাসিনার অর্জন কিন্তু একেবারে শুন্য , পরকালের টা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম। 

আরেকটি বিষয় গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের যেইসব জেলাতে ইসলামিক আন্দোলনের কর্মীদের রক্ত ঝরেছে সেই সব এলাকাতে জামায়াত শিবিরের শক্তি বাড়ার কারণে,আওয়ামীলীগ ও পুলিশ সব সময় আতঙ্কে থাকে। অন্যদিকে যে শাহবাগ জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্বের কথা বলে তারা এখন সমাজে ঘৃণার পাত্র। তাই হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আর আল্লাহ তো বলেছেন,তারা চায় মুখের ফুত্কারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে কিন্তু আল্লাহ তার দ্বীনের বাতিকে জ্বালিয়ে রাখবেন।

আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিবেন। কিসের ভিত্তিতে ??

$
0
0


আব্দুল কাদের মোল্লাকে চিনিয়ে দেওয়ার কিছু নাই। বাংলাদেশের এমন কোনো মানুষ নেই যারা কাদের মোল্লাকে চিনে না। যিনি মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আজ আসমানি ফয়সালার সামনে দাড়িয়ে। 

কাদের মোল্লার বিরুদ্বে আন্তর্জার্তিকভাবে বিতর্কিত ট্রাইবুনাল গত ফেব্রুয়ারী মাসে যাবজ্জ্বীবন কারাদন্ড দেয়। তারপর কাদের মোল্লার ফাসির দাবিতে শুরু হয় শাহবাগের কথিত গণজাগরণ। তারপর সংসদে দাড়িয়ে হাসিনা বলেছিলেন আশা করি জনগনের আশা আকাঙ্খার দিকে তাকিয়ে বিচারকরা রায় দিবেন। জামায়াতের সাথে স্ট্রং দরকষাকষিতে যেতে হলে হাসিনার দরকার একটি ফাসির রায়। পরিবর্তন করা হয় আইন।


তারপর আপিল বিভাগ নির্লজ্বভাবে যাবজ্জ্বীবন থেকে ফাসির রায় দিয়ে হাসিনার আশা পূরণের জন্য আদালতের সাজা বাড়িয়ে সুপ্রিমকোর্ট বিচার বিভাগের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করে। 

যেই সাক্ষীর ভিত্তিতে কাদের মোল্লাকে ফাসি দেওয়া হয় তার নাম হলো মোমেনা বেগম। তিনি তিন জায়গায় টি রকম সাক্ষী দিয়েছিলেন। তিনি আসলে কি বলেছিলেন দেখুন নিউ এইজ পত্রিকার সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের রিপোর্টে...

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রথমত. গত ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের এক গবেষককে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাক্ষী মোমেনা বেগম এটাও বলেছেন- যখন তার পরিবারের সদস্যদের গণহারে হত্যা করা হয়, তখন তিনি সেখানে ছিলেন না। ঘটনার দুদিন আগেই তিনি ওই এলাকা ত্যাগ করেন 

দ্বিতীয়ত. গত ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তাকে দেয়া জবানবন্দিততে মোমেনা, ১৯৭১ সালে যার বয়স ছিল ১৩ বছর, বলেন- ওই দিন তাদের বাসায় যারা প্রবেশ করেছিল, তারা সবাই ছিল বিহারী এবং পাকিস্তানি সেনা সদস্য। সেখানে কোনো বাঙালির উপস্থিতির কথা বলা হয়নি। আদালতে দেয়া মোমেনার মৌখিক সাক্ষ্য আগের দেয়া সাক্ষাৎকার এবং জবানবন্দির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। 

সূত্র : http://chairmanbd.blogspot.co.uk/2013/10/blog-post_2937.html


দেখেন এখানে স্পট মোমেনা বেগম বলেছেন এখানে কাদের মোল্লা তো দুরের কথা , কোনো বাংলাদেশী ও ছিলো না।


যে মোমেনা বেগমকে নিয়ে এত বিতর্ক তিনি কি আসলেই ট্রাইবুনালে গিয়েছেন ? এটা নিয়েই এখন খোদ প্রশ্ন উঠেছে। 

শারীরিক গঠনে আসল মোমেনা বেগমের সাথে ট্রাইবুনালে মুখ ঢাকা মোমেনা বেগমের প্রচুর পার্থক্য যা সন্দেহ আরো বাড়িয়ে দেয়। ছবিতে বিস্তারিত :



এই নিয়ে খোদ অভিযোগ করেছেন কাদের মোল্লার স্ত্রী। 

সত্যিই কি মোমেনা বেগম ট্রাইবুনালে গিয়েছে না কাউকে সাজানো হয়েছে। এর আগে মাওলানা নিজামীর বিরুদ্বে নান্নু মিয়াকে জোর করে সাক্ষী বানানোতে এই সন্দেহ আরো তীব্র হচ্ছে মানুষের মাঝে । 

সূত্র : http://www.bdtomorrow.com/newsdetail/detail/200/58016 

এবার দেখি মুক্তিযুদ্বের দলিলপত্র ও ট্রাইবুনালে মোমেনা বেগমের সাক্ষ্যের বৈপরিত্য :

ট্রাইব্যুনাল এবং মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে রক্ষিত ডকুমেন্টের বৈপরীত্য

ট্রাইব্যুনালে মোমেনা বেগমের সাক্ষ্য এবং মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে সংরক্ষিত প্রতিবেদনে সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী তথ্য রয়েছে।

যেমন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী মোমেনা বেগম তার সাক্ষ্যে বলেছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
খাটের নিচে লুকিয়ে থেকে পরিবারের সদস্যদের হত্যা এবং তার বোনকে ধর্ষণের ঘটনা দেখেছেন। এক পর্যায়ে তিনি নিজেও ধর্ষণের শিকার হন এবং পরে অচেতন হয়ে পড়েন।


অপরদিকে, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে রক্ষিত প্রতিবেদনে দেখা যায় মোমেনা বেগম ঘটনার দুই দিন আগে তার শ্বশুর বাড়িতে চলে যান। ফলে তিনি প্রানে বেঁচে যান এ ঘটনা থেকে।

মোমেনা বেগমের সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর কর্তৃপক্ষের তৈরি করা ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মোমেনা বেগম তাদের পরিবারের হত্যার জন্য বিহারীদের দায়ী করেছেন।

সেখানে কাদের মোল্লার কোন নাম গন্ধই নেই। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে মোমেনা বেগম তার জবানবন্দিতে বলছেন আবদুল কাদের মোল্লার উপস্থিতিতে এবং নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কাদের মোল্লা এবং আক্তার গুণ্ডা তার বাবাকে ধাওয়া করে ঘর পর্যন্ত নিয়ে আসে। এরপর ঘরে ঢুকে তার বাবাকে শার্টের কলার ধরে বাইরে নিয়ে যায়। 

সূত্র : http://www.timenewsbd.com/law---court/2013/12/09/18815#sthash.Xmj3E6GB.dpuf 

এবার ও কি এটা সুস্পস্ট নয় কাদের মোল্লাকে অন্যায় ভাবে হত্যা করা হচ্ছে ?

তার আরো কিছু প্রমান শুনুন আইনজীবী তাজুল ইসলামের কাছে। 




এই ধরনের বিচার বিশিস্টজনেরা ও পারছেন না নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে। যাতে আবার ট্রাইবুনালের অপমান না হয়। অন্যদিকে বিদেশীদের মুখ বন্ধ করতে সরকার খরচ করছে অনেক টাকা। 

সূত্র:http://www.rtnn.net//newsdetail/detail/1/1/71010#.UkgLcIZ6ZVK

কাদের মোল্লাকে যখন যাবজ্জ্বীবন দেওয়া হলো সেই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দেশের মানুষ কিছু প্রশ্ন তুলেছিলো। সেই রকম কিছু ভিডিও দেখুন 


http://www.youtube.com/watch?v=dCYe31gZtrI

শুধু মাত্র গুরুত্বপূর্ন শক্তি হিসাবে জামায়াত আবির্ভুত হওয়ার কারণে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। 


http://www.youtube.com/watch?v=mzYYP5g9Sj8

আরেকটি প্রশ্ন হলো কাদের মোল্লা কি সত্যিই কসাই কাদের ? এই ব্যাপারে জনাব জাফুরুল্লার মুখেই শুনি 

http://www.youtube.com/watch?v=n8HKcWHRm44


এবার দেখুন আওয়ামী এমপি গোলাম মাওলা রনি কি বলেন ? কসাই কাদের ও কাদের মোল্লার ব্যাপারে 

এ মামলার প্রথম বিচার্য বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে কাদের মোল্লা বনাম কসাই কাদের নিয়ে। প্রসিকিউশনের দাবি, মিরপুরের কুখ্যাত খুনি কসাই কাদেরই আজকের কাদের মোল্লা। প্রমাণ হিসেবে অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণের সঙ্গে তৎকালীন পত্রিকায় প্রকাশিত কসাই কাদেরের একটি ছবি উপস্থাপন করা হয়েছে। চশমা চোখে দেওয়া কসাই কাদের পাকিস্তানি সেনাকমান্ডার নিয়াজীর পাশে দাঁড়ানো।

অন্যদিকে কাদের মোল্লা তার জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি যুদ্ধকালীন তার জন্মভূমি ফরিদপুর জেলার সদরপুরে ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়েছেন। সেখানকার বিখ্যাত মীর ধলামিয়া সাহেবের বাড়িতে থাকতেন এবং তার দুই মেয়েকে পড়াতেন। আমি ধলামিয়া পীর সাহেবকে চিনতাম এবং তার দুই মেয়েকেও চিনি। পীর ধলামিয়া সাহেব মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির সমর্থক। তার বড় মেয়ের জামাই একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বুয়েট থেকে পাস করা ইঞ্জিনিয়ার। সরকারের এলজিইডি বিভাগে তিনি উঁচুপদে চাকরি করতেন এবং পিডি বা প্রজেক্ট ডিরেক্টর হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন। গাফফার ইঞ্জিনিয়ার নামের এই কর্তাব্যক্তি এখনো এলজিইডির বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করে থাকেন। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘকালীন সাধারণ সম্পাদক এসএম নুরুন্নবী যিনি কিনা এখন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তিনিও তার সহযোদ্ধা হিসেবে একসঙ্গে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন 

কাদের মোল্লার জবানবন্দি মতো প্রসিকিউশন যদি এসব বরেণ্য ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসেবে হাজির করতে পারতেন তাহলে বিচারকার্য নিয়ে প্রতিপক্ষ টুঁ-শব্দটি উচ্চারণ করতে পারতেন না। অন্যদিকে আসামি উল্লেখ করেছেন, তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়ন মতিয়া গ্রুপ করতেন। এক্ষেত্রে তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নের দুই কর্ণধার বর্তমান সরকারের কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকেও সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করা যেত।

কাদের মোল্লা উল্লেখ করেছেন, তিনি সদরপুরে আরও ৩০-৩৫ জনের একদল যুবককে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়েছেন! কি ভয়াবহ বক্তব্য। প্রসিকিউশনের উচিত ছিল যথাযথ যুক্তিপ্রমাণ উত্থাপন করে এ বক্তব্যটিকে মিথ্যা প্রমাণ করা। 

এবার আসি অন্য একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে। তিনি বলেছেন, যুদ্ধকালীন পুরোটা সময় তিনি পীর সাহেবের বাড়িতে ছিলেন। তার টাকা দিয়ে তিনি চৌদ্দরশি বা সাড়ে সাতরশি বাজারে ব্যবসা করতেন পীর সাহেবের দোকানঘরে বসে। (দৈনিক কালের কণ্ঠ)। চৌদ্দরশি বাজার ফরিদপুর জেলার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ বাজার। স্বাধীনতার সময়ও এই বাজার বসত প্রতি শনি এবং মঙ্গলবার। কম করে হলেও ৫০ হাজার লোকের আগমন ঘটত হাটের দিনে। পীর সাহেবের দোকানটি ছিল সবচেয়ে বড় এবং বাজারের একমাত্র দ্বিতল টিনের ঘর। পীর সাহেবের মেজ ছেলে রহিচ ব্যবসা-বাণিজ্য দেখতেন। পরবর্তীতে তিনি ডাকাতের গুলিতে মারা যান। কাজেই মুক্তিযুদ্ধের সময় কাদের মোল্লা যদি ওই বাজারে ব্যবসা করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে অন্তত এক লাখ লোককে সাক্ষী হিসেবে পাওয়া যাবে। 

সূত্র : http://chairmanbd.blogspot.co.uk/2013/12/blog-post_10.html

এবার বলুন গোলাম মাওলা রনির মোট হাজারো মানুষের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কে দিবেন ?


আর সবাই জানেন কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্বের পর ঢাকা ইউনিতে পড়তেন এবং শেখ মুজিবের সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কাজ করতেন। তারপর উদয়ন স্কুল ও পরে রাইফেলস স্কুলে চাকুরী করেন ? 

তাহলে একজন কসাই কিভাবে এই সব করতে পারেন ?

কাদের মোল্লার সংক্ষিপ্ত জীবনী দেখুন এখানে 




এবার রায় দেখলে বুঝা যাবে কিভাবে আদালত হাসিনার নির্দেশে রায় দিয়েছে কাদের মোল্লার বিরুদ্বে। 



৪ জন বিচারপতি সম্পুর্ন অন্ধভাবে ফাসির রায়ে একমত হয়েছেন। কিন্তু ভিন্নমত পোষনকারী বিচারপতি ওহাব মিয়া কি বলেছে তার রায়ে দেখুন...

ট্রাইব্যুনালের রায়ে আবদুল কাদের মোল্লাকে ১ নম্বর অভিযোগ যথা মিরপুরে পল্লব হত্যার দায়ে ১৫ বছর জেল দেয়া হয়েছে। আপিল বিভাগ এ রায় বহাল রেখেছেন। অপরদিকে বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা তার রায়ে এ অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন কাদের মোল্লাকে। তিনি বলেছেন রাষ্ট্রপক্ষ এ অভিযোগ প্রমানে ব্যর্থ হয়েছে এবং ট্রাইব্যুনাল অন্যায়ভাবে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।

আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ২ নং অভিযোগ তথা কবি মেহেরুন্নেসা হত্যার অভিযোগে ১৫ বছর দণ্ড দেয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। আপিল বিভাগের রায়ে ট্রাইব্যুনালের এ দণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা এ অভিযোগেও আপিল বেঞ্চের অপর চার বিচারপতির সাথে ভিন্নমত পোষণ করে আবদুল কাদের মোল্লাকে খালাস দিয়েছেন। তিনি রায়ে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমান করতে পারেনি।

আবদুল কাদের মোল্লাকে ৩ নং অভিযোগ যথা সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব হত্যার অভিযোগে ১৫ বছর সাজা দেয়া হয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ে এ দণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা এ অভিযোগেও আপিল বিভাগের চার বিচারপতির সাথে ভিন্নমত পোষণ করে আসামীকে খালাস দিয়েছেন অভিযোগ থেকে।

৪ নং অভিযোগ যথা কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর হত্যাকান্ডের অভিযোগ থেকে আবদুল কাদের মোল্লাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। আপিল বিভাগ এ অভিযোগে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আবদুল কাদের মোল্লাকে। কিন্তু বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ট্রাইব্যুনালের দেয়া খালাস রায় বহাল রেখেছেন।

৫ নং অভিযোগ যথা মিরপুর আলুবদি হত্যাকান্ডের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের রায়ে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। আপিল বিভাগ এ রায় বহাল রেখেছেন। কিন্তু বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা এ অভিযোগ থেকেও মোল্লাকে খালাস দিয়ে লিখেছেন, আব্দুল কাদের মোল্লা সেখানে উপস্থিত ছিল এবং এ গনহত্যায় কোন সহযোগিতা করেছে এ মর্মে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমান করতে পারেনি। ট্রাইব্যুনাল ভুল করেছে এ সাজা দিয়ে।

সূত্র : http://www.bdtomorrow.com/newsdetail/detail/31/57589 

এই হচ্ছে বিচারের নমুনা। এবার দেখুন এই সব বিচারকদের দম্ভোক্তি। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াতের নায়েবে আমীর একেএম ইউসুফের আইনজীবীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘আমরা ভুল আদেশ দিলেও তার কোনো আপিল করার সুযোগ নেই।’ 

সূত্র : http://www.newsevent24.com/?p=88855 

তাহলে কি এরা ইচ্ছে করেই এই সব রায় দিচ্ছে ?? আমরা কি বলবো এই সব লোক অপরাধী ? মিথ্যা অভিযোগে এদের ফাসি দিলে কি আওয়ামীলীগ চিরজীবন ক্ষমতায় থাকবে ??? 

কাদের মোল্লার ফাঁসিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের দুঃখ প্রকাশ

$
0
0
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। একই সঙ্গে এ ঘটনার পর বাংলাদেশের সব পক্ষকে শান্ত থাকার ও সহিংসতা পরিহারেরও আহ্বান জানান তিনি। বান কি মুনের মুখপাত্র মার্টিন নেসারকি শুক্রবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়ার আগে এই দণ্ড কার্যকর না করতে জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দণ্ড কার্যকরের পর কোন কর্মকর্তা কেন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি- এমন প্রশ্নের জবাবে মার্টিন বলেন, আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরে মহাসচিব দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বান কি মুন আগেও এই পদক্ষেপকে নিরুৎসাহিত করেছেন।
http://mzamin.com/details.php?mzamin=MzE0OA==&sMQ==

ধরা না খাইলে শিবির , ধরা খাওয়ার পর দেখি আওয়ামীলীগ :P

$
0
0




প্রত্যেকদিন দেশে হিন্দুদের উপর হামলা হচ্ছে , পেট্রোল বোমা, ককটেল ফুটানো হচ্ছে। কিন্তু এই সবের জন্য আসল ঘটনা উদঘাটন না করে সবাই মুখস্তভাবে জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করা হচ্ছে। এই সব কাজের জন্য প্রধানত দায়ী হচ্ছে নতুন প্রজন্মের এইচ ডি বিটিভিগুলো। গত কয়েকদিনের কিছু ঘটনা দেখি। আমরা কিন্তু দোষ দিচ্ছি জামায়াত শিবিরের , কিন্তু ধরা খাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে এই সব কাজ করতেছে আওয়ামীলীগ। 


- বিচারপতির বাড়িতে হামলার সময় ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৩

http://www.bdtomorrow.com/newsdetail/detail/41/58726

- হিন্দুর বাড়িতে আগুন দিয়ে পালানোর সময় যুবলীগ নেতা আটক

http://www.bdtomorrow.com/newsdetail/detail/41/58710

-ফেনীতে শিবিরের মিছিল থেকে নাশকতাকারী যুবলীগ কর্মী আটক

http://www.dailysangram.com/news_details.php?news_id=133651

ফেনীতে পেট্রোল বোমা তৈরিকালে ঝলসে গেছে ৪ যুবলীগ ক্যাডার

http://awamicrime.blogspot.co.uk/2013/12/blog-post_7.html 

-খুলনায় রেলের ফিসপ্লেট খোলার সময় হাতে নাতে ধরা পড়েছে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর 

http://www.dailysangram.com/news_details.php?news_id=133650

-বিএনপি-জামায়াতের নামে স্লোগান দিয়ে গাড়ি ভাংচুরকালে ৩ যুবলীগ কর্মী আটক 

http://timenewsbd.com/politics/2013/10/31/14643

-বরিশালে মন্দির ও বাড়িতে আগুন দেয় ছাত্রলীগকর্মীরা!

http://awamicrime.blogspot.co.uk/2013/11/blog-post_6845.html

-Minority attack in Pabna :Some attackers seen with Tuku 

http://awamicrime.blogspot.co.uk/2013/11/some-attackers-seen-with-tuku.html 

খেয়াল আছে যখন গণজাগরণ মঞ্চ তুঙ্গে ছিলো তখন বগুড়াতে শহীদ মিনার ভেঙ্গেছিলো কিছু লোক। সবাই বললো জামায়াত শিবিরের কাজ। পরে দেখা গেলো আওয়ামীলীগ জড়িত। পরে তাকে পাগল বলে সম্বোধন করেছিল আওয়ামীলীগ। 

ভাগ্যিস এতগুলো বিটিভির মাঝে ও কিছু আসল খবর আসতেছে। যদি নিরপেক্ষভাবে যদি খবর প্রচার হত , অধিকাংশ ঘটনায় আওয়ামীলীগের লোকজন জড়িত হবে বলে প্রমাণিত হত। 



শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা আর কসাই কাদের কি এক ? ছবি কি বলে ?

$
0
0

উপরের ছবিটি ট্রাইব্যুনালে সংরক্ষিত সরকার পক্ষের কৌসুলিদের জমা দেয়া কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মহা গুরুত্বপুর্ন একটি ডকুমেন্ট। ছবিতে জেনারেল এ এ কে নিয়াজীর পিছনে দাঁড়ানো মিরপুরের বিহারী 'কসাই কাদেরকে'আব্দুল কাদের মোল্লা বলে চালানো হয়েছে। 
নিচের ছবিতে ৯২ সালের রোকন সম্মেলনে তৎকালীন আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের পাশে দাঁড়ানো আব্দুল কাদের মোল্লা।

বিশ্লেষণঃ ১৯৭১ সালে-

নিয়াজীঃ উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী নিয়াজীর বয়স ছিল ৫৭ বছর। উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি।
কাদের মোল্লাঃ বিভিন্ন সুত্রের তথ্যানুযায়ী কাদের মোল্লার বয়স ছিল ২২/২৩ বছর। উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি।
কসাই কাদেরঃ অসমর্থিত সুত্র এবং বিশ্লেষণ অনুযায়ী কসাই কাদেরের বয়স ছিল ৪৮ বছর। পাশে দাঁড়ানো নিয়াজীর সাথে তুলনা করলে বিহারী কসাই কাদেরের উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি।

প্রশ্ন-১: ৯২ সালে নিচের ছবিতে অধ্যাপক গোলাম আযমের পাশে দাঁড়ানো ৪৩/৪৪ বছর বয়স্ক কাদের মোল্লাকে যদি ২১ বছর আগে কল্পনা করা হয় তাহলে কি নিয়াজীর পাশে দাঁড়ানো ৪৮ বছর বয়স্ক 'কসাই কাদেরের'মতো মনে হবে?


প্রশ্ন-২: হিসাব অনুযায়ী নিয়াজীর চেয়ে প্রায় পৌনে ১ ফুট কম উচ্চতার কাদের মোল্লাকে নিয়াজীর পাশে দাড় করালে তাকে কি (কসাই কাদেরের মতো) প্রায় নিয়াজী বরাবর মনে হওয়ার কথা?

বংগবীর কাদের সিদ্দীকি বীরউত্তম, শাহবাগ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী তার এক কলামে বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ্য করে স্যাটায়ার করে লিখেন-

"পিতা, কাদের মোল্লাকে নিয়ে দেশ এখন উত্তাল, পুরা দেশে এক নাম- কাদের মোল্লা! তার ফাঁসির দাবী চলছে। কিন্তু পিতা তুমি হয়তো এই কাদের মোল্লাকে চিনোনা, কারন আমাদের সময়ে যাদের যাদের বিচারের লিষ্ট আমরা বানিয়েছিলাম তাতে এই কাদের মোল্লা ছিলোনা। তুমি কীভাবে চিনবে, আমরাই তো কেউ চিনতাম না।"

খালেদা জিয়াকে ভারতের লোভনীয় প্রস্তাব: প্রত্যাখান করলেন খালেদা জিয়া

$
0
0
ভারত সরকার খালেদা জিয়াকে গতকাল মঙ্গল বার একটি প্রস্তাব দিয়েছে, ভারতীয় সাংবাদিকের একটি প্রতিনিধি দল খালেদা জিয়া এবং বিএনপির সাথে দেখা করেছে। প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন ................

১. শুভজিত রায় (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস) 
২. জয়ন্ত জেকব (হিন্দুস্তান টাইমস)
৩. ইন্দ্রানী দত্ত (দ্যা হিন্দু) 
৪. গৌতম লাহিড়ি ( সংবাদ প্রতিদিন) 
৫. দেবিরুপা মিত্রা (নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস) 
৬. রায়দেন দিসৌজা (দুরদর্শন)
৭. দীপাঞ্জন রায় চৌধুরী (ইকনমিক টাইমস) 
৮. অগ্নি রায় (আনন্দ বাজার পত্রিকা) 

এছাড়া র'এর ডেপুটি চিপ এবং ইন্ডিয়ান সরকারের ডেপুটি সেক্রেটারিও খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেছে। বিএনপির কাছে তাদের প্রস্তাব ছিল নিম্নরূপ।.....

১. দশম জাতীয় নির্বাচন মেনে নিন.
২. এই নির্বাচন পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে ভারত একাদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্তা করবে। 
৩. একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভারত বিএনপিকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে (এখন যেমন আওয়ামীলীগকে করছে) 
৪. বর্তমান জামাত নেতাদের (ট্রাইবুনালের মাধ্যমে ফাঁসি দিয়ে) হত্যা করা হবে এবংপরবর্তী নতুন নেতারা ভারতের পৃষ্ঠপোষকতা বা আজ্ঞাবহ হয়ে থাকবে। 
৫. বর্তমান সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক যত চুক্তি আছে সব সম্পন্ন করবে। 


কিন্তু খালেদা জিয়া একটি প্রস্তাবেও রাজি হননি। এই প্রতিনিধি দল অব: জেনারেল এরশাদের সাথেও সাক্ষাৎ করেছে, তাঁকেও কিছু প্রস্তাব দেয়া হয় তবে সম্পুর্ন্ন ভিন্ন। 

১.নির্বাচন হবে ৬ মাসের ভিতর, তবে দুই লেডিকে মাইনাস করে এরশাদকে প্রাইমমিনিস্টার বানানো হবে. 
২. এর মধ্যে জামাতকে উপড়িয়ে ফেলা হবে. 
৩. এবং বিএনপি হয়ে যাবে মেরুদন্ডহীন একটি দলে আর বিএনপির অনকে নেতা-কর্মী এরশাদের সাথে যোগ দিবে। 
৪. এরশাদের উচিত হবে দেশ ত্যাগ করা এবং চুপচাপ দশম জাতীয় নির্বাচন মেনে নেয়া।

Please expose the following as widely as possible. It has to become public knowledge:

The Indian govt made a proposal to Khaleda Zia yesterday. A delegation of journalists met BNP and Khaleda Zia yesterday. They included the following people:
1. Mr. Shubhajit Roy (Indian Express)
2. Mr. Jayanth Jacob (Hindustan Times)
3. Ms. Indrani Dutta (The Hindu)
4. Mr. Gautam Lahiri (Sangbad Pratidin)
5. Ms. Devirupa Mitra (New Indian Express)
6. Mr. Royden D'Souza (Doordarshan)
7. Mr. Dipanjan Roy Chaudhury (Economic Times)
8. Mr. Agni Roy (Anand Bazar Patrika)

This delegation was a cover for two additional persons who met and spoke to Khaleda Zia. These two persons were the deputy chief of RAW and a Deputy Secretary of the govt of India. 

Their proposal to BNP was as follows:
1. accept the 10th parliament
2. India will ensure election to 11th parliament in 6 months
3. India would patronise BNP in those elections
4. Current jamaat leaders will be executed and new leadership of Jamaat will be under patronage of India
5. India will fulfil all bilateral commitments made to present govt

Khaleda Zia did not agree to the proposal. 

The same team met with Gen Ershad at CMH. But they gave a different proposal to him:

1. In next elections held within six months, both ladies would be out and Ershad as India's candidate will become PM.
2. Jamaat would be uprooted by then.
3. BNP'S backbone would be broken by then and most BNP people would join Ershad.
4. Ershad should just leave the country and quietly accept election to 10th election. 

সূত্র : ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকা একজন দেশপ্রেমিক সাংবাদিক 

প্রধানমন্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে দুই কোটি টাকা

$
0
0
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পদ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে দুই কোটি দুই লাখ ৪৩ হাজার ১৩৫ টাকা। নির্বাচন কমিশনে শেখ হাসিনার দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া ২০০৮-০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণী অনুযায়ী শেখ হাসিনার নিট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৯০৪ টাকার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে দেখা যায়, তাঁর নিট সম্পদ পাঁচ কোটি ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯ টাকার।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নামে ছয় একর কৃষিজমি রয়েছে, যার আনুমানিক দাম ছয় লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এখান থেকে তাঁর বছরে আয় হয় ৭৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া মত্স্য খামার থেকে তাঁর আয় বছরে চার লাখ ৫০ হাজার টাকা। গাছ বিক্রি থেকে বছরে তাঁর আয় ১০ লাখ টাকা। ব্যাংকে তাঁর নগদ টাকার পরিমাণ চার লাখ ৯৮ হাজার। আর ব্যাংকে প্রধানমন্ত্রীর স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রয়েছে পাঁচ কোটি টাকার কিছু বেশি।

প্রধানমন্ত্রীর একটি গাড়ি রয়েছে যেটি দানে পাওয়া। তাঁর কাছে থাকা স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথরনির্মিত অলংকারাদির মূল্য ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আসবাবপত্র রয়েছে সাত লাখ ৪০ হাজার টাকার। হলফনামা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/102178/%E0

আওয়ামীলীগ নেতাদের ফুলে-ফেঁপে উঠেছে সম্পদ..সুধাসদন যখন দুর্নীতির আখড়া

$
0
0
নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা থেকেই ক্ষমতায় থেকে সম্পদশালী হওয়ার অসংখ্য উদাহরণ পাওয়া যাচ্ছে।নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা থেকেই ক্ষমতায় থেকে সম্পদশালী হওয়ার অসংখ্য উদাহরণ পাওয়া যাচ্ছে।মন্ত্রী-সাংসদদের একটি অংশ পাঁচ বছরে অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হয়েছে। ক্ষমতা নামের আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ বদলে দিয়েছে তাঁদের স্ত্রীদেরও। অথচ দৃশ্যমান তেমন কোনো আয় অনেকেরই নেই।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার শর্ত হিসেবে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামা থেকে তাঁদের স্বেচ্ছায় ঘোষিত এই সম্পদের হিসাব জানা গেছে। ১৪ ডিসেম্বর থেকে এসব তথ্য সাধারণের জন্য কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
নতুন এই তথ্যের সঙ্গে আগের নির্বাচনের সময় ২০০৮ সালে দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মন্ত্রী-সাংসদদের অনেকেই অতি দ্রুত সম্পদশালী হয়েছেন। কেউ কেউ পাঁচ বছরে একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছেন। এই সরকারের পাঁচ বছরে শেয়ারবাজারে যত বড় কেলেঙ্কারিই ঘটুক, মন্ত্রী-সাংসদদের একটি অংশ সেখানে বিনিয়োগ করতেও পিছপা হয়নি।

আব্দুল মান্নান খান (ঢাকা-১): আব্দুল মান্নান খান ছিলেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী। একসময়ের বাম রাজনীতি করা আব্দুল মান্নান খান পাঁচ বছরেই অস্বাভাবিক অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনকে তিনি যে হলফনামা দিয়েছিলেন, তাতে দেখা যায়, নিতান্তই সাধারণ জীবন যাপন করতেন তিনি। কিন্তু পাঁচ বছরেই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে তাঁর।
২০০৮ সালে এই আয় ছিল ২৬ লাখ ২৫ হাজার, নির্ভরশীলদের কোনো আয়ই ছিল না। পাঁচ বছর পর তিনি ও তাঁর স্ত্রী বা অন্য নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।
আয়ের তুলনায় আব্দুল মান্নান খানের পরিবারের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে বহুগুণ। পাঁচ বছর আগে তাঁর সম্পদ ছিল প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকার। আর এখন সেই সম্পদ হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকার। পাঁচ বছরে ১০৭ গুণ বেশি সম্পদ বাড়ার এটি একটি নতুন রেকর্ড।
আব্দুল মান্নান খানের আয়ের বড় উৎস হচ্ছে মৎস্য ও প্রবাসী-আয়। এখান থেকে তাঁর আয় এক কোটি ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। একই খাতে তিনি নির্ভরশীলদের আয় দেখিয়েছেন এক কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এই আয়ের কোনো বিস্তারিত বিবরণ তিনি কোথাও দেননি।
মান্নান খানের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নিজের ও স্ত্রীর কাছে নগদ ৫৫ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত হিসেবে নিজের নামে ৪৩ লাখ ও স্ত্রীর নামে সাড়ে ছয় লাখ টাকা এবং ৪৪ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া পাঁচ একর কৃষিজমি। এ ছাড়া নিজ নামে ৩১ লাখ ৭৪ হাজার এবং স্ত্রীর নামে এক কোটি ৬৪ লাখ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। তাঁর আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের মূল্য এক কোটি ৮১ লাখ টাকা। অ্যাপার্টমেন্টের দাম এক কোটি ৮১ লাখ টাকা। মাছের খামার পাঁচটি থাকলেও তার মূল্যমান উল্লেখ করেননি।
মির্জা আজম (জামালপুর-৩): আওয়ামী লীগের এই সাংসদের নামে বিভিন্ন সময়ে মোট নয়টি মামলা থাকলেও সব কটি মামলা থেকে খালাস অথবা অব্যাহতি পেয়েছেন। তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম মির্জা রাইস মিল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ট্রেডিং ও মির্জা পোলট্রি অ্যান্ড ফিশ ফিড ট্রেডার্স।
মির্জা আজমের বার্ষিক আয় কৃষিতে ৬৬ হাজার, মাছ থেকে ছয় লাখ ৩৭ হাজার, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে দুই লাখ ৯৫ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর আয় ছিল চার লাখ ৪৮ হাজার টাকা। 
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে মির্জা আজম ও তাঁর স্ত্রীর কাছে নগদ ১৮ লাখ টাকা করে জমা আছে। ব্যাংকে আছে ১১ লাখ টাকা। পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। স্থায়ী আমানত হিসাবে রয়েছে ৮৪ লাখ টাকা। তাঁদের গাড়ির মূল্য ৮৩ লাখ টাকা। অন্যান্য সম্পদের পরিমাণ ২৩ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮০ লাখ টাকার মতো। তবে পুঁজিবাজারে তাঁর কোনো বিনিয়োগ ছিল না।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমির মূল্য ২০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে চার একর জমির মূল্য নয় লাখ ৯৫ হাজার টাকা, অকৃষিজমির মূল্য দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকা, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের মূল্য এক কোটি ২১ লাখ এবং অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য তিন কোটি ৭১ লাখ টাকা। ঋণের পরিমাণ ১১ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ছিল ২০ লাখ টাকার মতো।
সব মিলিয়ে ২০০৮ সালে মির্জা আজম ও তাঁর স্ত্রীর মোট সম্পদ ছিল এক কোটি ৯১ লাখ টাকার। আর এখন সেই সম্পদ বহুগুণ বেড়ে হয়েছে ১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার।
নুর-ই-আলম চৌধুরী (মাদারীপুর-১): পাঁচ বছরে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় নূর-ই-আলম চৌধুরী। তাঁর স্ত্রীও তাঁরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সম্পদশালী হয়েছেন। 
বর্তমানে বার্ষিক আয় ১০ কোটি টাকার মতো। অথচ ২০০৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল মাত্র চার লাখ ৪৮ হাজার টাকা। আবার ২০০৮ সালে দেওয়া হলফনামায় তাঁর স্ত্রীর কোনো আয় ছিল না। আর এখন তাঁর স্ত্রীর আয় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। বর্তমানে তাঁর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ২২ কোটি টাকার মতো। একই খাতে ২০০৮ সালে তাঁর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ২৭ লাখ টাকার মতো। বর্তমানে তাঁর স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য এক কোটি ৬০ লাখ টাকার মতো। ২০০৮ সালে এই খাতে তাঁর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ১০ লাখ টাকার মতো।
জাহাঙ্গীর কবির নানক (ঢাকা-১৩): সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের নামে বিভিন্ন সময়ে ১৪টি মামলা ছিল। বর্তমান সরকারের মেয়াদে তিনি সব মামলা থেকে অব্যাহতি অথবা খালাস পেয়েছেন। মন্ত্রী হওয়ার পর পাঁচ বছরে তিনিও যথেষ্ট সমৃদ্ধিশালী হয়েছেন। তবে তাঁকেও ছাড়িয়ে গেছেন তাঁর স্ত্রী।
পাঁচ বছর আগেও এই দম্পতির সম্পদ ছিল এক কোটি টাকারও কম। এখন সেই সম্পত্তির পরিমাণ হয়েছে সোয়া আট কোটি টাকা। এর মধ্যে স্ত্রীর সম্পদ হচ্ছে পাঁচ কোটি টাকা। অথচ এর আগের হলফনামা অনুযায়ী, সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর ছিল মাত্র ৫২ লাখ টাকা।
জাহাঙ্গীর কবির নানকের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে নগদ ১১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা এবং সঞ্চয়ী আমানত ২৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। তাঁর যানবাহনের আর্থিক মূল্য ৬৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রীর নামে নগদ ৮১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৭৯ লাখ, পুঁজিবাজারে এক কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল সাত লাখ ৪৩ হাজার টাকা। একই সময়ে তিনি ও তাঁর স্ত্রীর কাছে নগদ ছিল ১১ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ছিল আড়াই লাখ, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ছিল ছয় লাখ টাকা। 
নানকের স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমি দুই একর (মূল্য অজানা)। তাঁদের আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের দাম এক কোটি ৩০ লাখ, স্ত্রীর নামে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অগ্রণী ব্যাংকে তাঁদের দেনার পরিমাণ দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর কোনো বাণিজ্যিক বা আবাসিক ভবনের উল্লেখ ছিল না। 
ফজলে নূর তাপস (ঢাকা-১০): সাংসদ ফজলে নূর তাপসের বার্ষিক আয় দুই কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। অথচ ২০০৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ২২ লাখ টাকা। পেশায় আইনজীবী ফজলে নূরের আয় হয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ টাকা। অন্যান্য আয় এসেছে কৃষি খাত, পুঁজিবাজার ও অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে।
তাপসের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ছয় কোটি দুই লাখ ৭৬ হাজার টাকা, ব্যাংকে ছয় কোটি দুই লাখ ৩৯ হাজার, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ৩২ কোটি ১৪ লাখ এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ তিন কোটি তিন লাখ টাকা। এ ছাড়া রয়েছে ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার। আসবাবের মূল্য ১১ লাখ। তাপসের স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ২৪ লাখ ৭২ হাজার এবং পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে ৭০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর কাছে নগদ ছিল ৮৯ লাখ টাকা। ব্যাংকে ছিল এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ছিল তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা।
তাপসের স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমির পরিমাণ দুই বিঘা (মূল্য উল্লেখ নেই), মতিঝিলে একটি ভবন (মূল্য উল্লেখ নেই), ১০ কাঠা অকৃষিজমির মূল্য দুই কোটি ৪৬ লাখ, অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য এক কোটি চার লাখ এবং চা ও রাবার বাগানের মূল্য ১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। তাঁর স্ত্রীর নামে ধানমন্ডিতে একটি প্লটের মূল্য এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা, রাবার ও চা-বাগানের মূল্য এক কোটি দুই লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাপস বা তাঁর স্ত্রী কোনো অ্যাপার্টমেন্ট এবং চা বা রাবার বাগানের মালিক ছিলেন না। 
হাছান মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৭): পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদের তুলনায় বেশি সম্পদশালী হয়েছেন তাঁর স্ত্রী। হাছান মাহমুদের বার্ষিক আয় ১৮ লাখ টাকার বেশি। আর স্ত্রীর আয় প্রায় দুই কোটি টাকা। ২০০৮ সালে তাঁদের বার্ষিক আয় ছিল ১৯ লাখ টাকার কিছু বেশি।
হাছান মাহমুদের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ছয় লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা আট লাখ, নয় লাখ টাকার শেয়ার, ৬৬ লাখ টাকার একটি গাড়ি ইত্যাদি। তাঁর স্ত্রীর কাছে রয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার। ২০০৮ সালে তাঁর স্ত্রীর কাছে নগদ ও ব্যাংকে জমা মিলিয়ে মোট ৬০ হাজার টাকা ছিল, কোনো স্থাবর সম্পত্তি ছিল না। বর্তমানে তাঁর স্থাবর সম্পত্তির দাম চার কোটি টাকার মতো।
ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ (ঢাকা-১৬): সরকারদলীয় সাংসদ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ পাঁচ বছর আগে কৃষি থেকে ২১ লাখ টাকা আয় করলেও এখন কৃষি থেকে তাঁর কোনো আয় নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর আয় ছিল ৩০ লাখ টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। এ টাকা তিনি মৎস্য প্রকল্প থেকে আয় করেছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। আগে বাড়িভাড়া থেকে কোনো আয় না হলেও বর্তমানে ২৮ লাখ টাকার বেশি আয় করেন। বর্তমানে এই সাংসদের মোট বার্ষিক আয় পাঁচ কোটি ৪২ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৬ টাকা।
পাঁচ বছর আগে ইলিয়াস মোল্লাহ্র অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল এক কোটি পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। পাঁচ বছরে তা বেড়ে হয়েছে সাত কোটি ৮৮ লাখ ৭১ হাজার ৯৩৩ টাকা। আগে কোনো গাড়ি না থাকলেও এখন তিনি দুটি গাড়ির মালিক। হলফনামায় গাড়ি দুটির নিবন্ধন নম্বর দেওয়া হলেও মূল্য লেখা হয়নি। এর আগের হলফনামায় স্ত্রী বা নির্ভরশীলের নামে ৭৫ লাখ নগদ টাকা দেখানো হলেও এবারের হলফনামায় স্ত্রীর নামে কোনো নগদ অর্থ দেখানো হয়নি।
নজরুল ইসলাম (নারায়ণগঞ্জ-২): নির্বাচনী হলফনামা অনুসারে তাঁর বার্ষিক আয় ৯৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে মৎস্য চাষ থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৪৩ লাখ ২০ হাজার এবং কৃষি খাত থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ছিল বার্ষিক আয় পাঁচ লাখ ৩২ হাজার টাকা। এর মধ্যে স্ত্রীর নামে রয়েছে এক লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখানো হয়েছে এক কোটি ৫৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ছিল ১৭ লাখ টাকা। আর স্থাবর সম্পত্তি তিন কোটি ৮২ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ জমি, যার মূল্য দেখানো ছিল চার লাখ ৬০ হাজার টাকা।
দীপংকর তালুকদার (রাঙামাটি): পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের বার্ষিক আয় ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। আয়ের উৎস ব্যবসা ও বাড়িভাড়া। ২০০৮ সালে এই আয় ছিল সাত লাখ টাকা।
প্রতিমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য দুই কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে নগদ অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে নগদ ছয় লাখ ৭৩ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা এবং মোটরযানের দাম ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল মাত্র সাত লাখ ৭৯ হাজার টাকা।
দীপংকর তালুকদারের স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য এক কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এর মধ্যে আছে পূর্বাচল নতুন শহরে ১০ কাঠা জমি (৩১ লাখ ৪০ হাজার ) এবং রাঙামাটির চম্পকনগরের পাঁচতলা বাড়ি (৮৯ লাখ ৩২ হাজার)। ২০০৮ সালে স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে চম্পকনগরের বাড়িটি। বর্তমানে তাঁর স্ত্রীর সম্পদের মূল্য ৬০ লাখ টাকার বেশি। অথচ ২০০৮ সালে তাঁর স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৪৯ হাজার টাকা ও ২৫ ভরি স্বর্ণ (দুই লাখ ৫০ হাজার)।
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আব্দুল মান্নান খান, মির্জা আজম, নূর-ই-আলম চৌধুরী ও ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হলেও তাঁরা কেউ ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা দেওয়া হলেও কোনো উত্তর তাঁরা দেননি।
[প্রতিবেদন তৈরি করেছেন হারুন আল রশীদ, মানসুরা হোসাইন, মোশতাক আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, পার্থ শঙ্কর সাহা, কুন্তল রায় ও মোছাব্বের হোসেন।]
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/103741/%E0%A6%AB%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%87_%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%81%E0%A6%AA%E0%A7%87_%E0%A6%89%E0%A6%A0%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A7%87_%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%A6

আওয়ামীলীগ এমপি বদির আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ

$
0
0
বদিবদিস্ত্রী-ভাই-বোন ও নিজের কর্মচারীর কাছ থেকে আট লাখ টাকা ধার করে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহ করেছিলেন কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাংসদ আবদুর রহমান বদি। জীবনে প্রথম সাংসদ হয়ে পাঁচ বছরে তাঁর আয় বেড়ে গেছে ৩৫১ গুণ। আর নিট সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুণের বেশি।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত এই সাংসদের জমা দেওয়া হলফনামা ও আয়কর বিবরণী পর্যালোচনা করে তাঁর আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, হলফনামায় সাংসদ বদি কেবল আয়কর বিবরণীতে প্রদর্শিত অর্থ ও সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন। এর বাইরে অপ্রদর্শিত অনেক অর্থ-সম্পদ রয়েছে।
সাংসদ বদি এবারও একই আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী। তিনি গত ২ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া দলের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামার মাধ্যমে আয়বিবরণী ও সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, গত পাঁচ বছরে আয় করেছেন ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪০ টাকা। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ও টেকনাফে জ্বালানি তেলের ব্যবসা করে এ টাকা অর্জন করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। 

হলফনামা অনুযায়ী, সাংসদ বদির এখন বার্ষিক আয় সাত কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। আর বার্ষিক ব্যয় দুই কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ টাকা। এর আগে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় বলেছেন, তখন তাঁর বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ১০ হাজার ৪৮০ টাকা। আর ব্যয় ছিল দুই লাখ ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা। 
তখন (২০০৮) বিভিন্ন ব্যাংকে আবদুর রহমানের মোট জমা ও সঞ্চয়ী আমানত ছিল ৯১ হাজার ৯৮ টাকা। পাঁচ বছরের মাথায় এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট কোটি পাঁচ লাখ ১০ হাজার ২৩৭ টাকা। তাঁর হাতে ২০০৮ সালের নভেম্বরে নগদ টাকা ছিল দুই লাখ সাত হাজার ৪৮ টাকা। আর এখন ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া এখন স্ত্রীর কাছে নগদ টাকা আছে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ২৬৫ টাকা।
২০০৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, ওই নির্বাচনের ব্যয় মেটাতে বদি তাঁর স্ত্রী শাহীন আকতারের কাছ থেকে চার লাখ টাকা এবং বোন নাজমা আকতার, ভাই আমিনুর রহমান, আবু তাহের ও নিজের কর্মচারী মং উইন মিনথের কাছ থেকে এক লাখ টাকা করে নিয়েছিলেন। তখন তিনি দোকান ও বাড়ি ভাড়া থেকে বার্ষিক আয় দেখান এক লাখ ৭৬ হাজার ৮৮০ টাকা। ব্যবসা থেকে কোনো আয় ছিল না। 
আর, এবারের (২০১৩) হলফনামায় বলেছেন, তিনি এখন বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে বার্ষিক আয় করছেন দুই কোটি আট লাখ ১৩ হাজার ৩২ টাকা। আর ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় পাঁচ কোটি ৩২ লাখ ৩১ হাজার ১১৬ টাকা। 
পাঁচ বছর আগে তাঁর দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা দামের একটি অকেজো ল্যান্ড রোভার গাড়ি ছিল। এখন ওই গাড়ি ছাড়াও তাঁর ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার একটি জিপ গাড়ি রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন। 
গত ২১ নভেম্বর কক্সবাজার কর সার্কেলে দাখিল করা আয়কর বিবরণীতে বদি তাঁর মোট আয় দেখিয়েছেন সাত কোটি ৩৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮০৮ টাকা। আর নিট সম্পদের পরিমাণ বলা হয়েছে নয় কোটি ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৩ টাকার। পাঁচ বছর আগে ২০০৮ সালের আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, তখন তাঁর বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ১০ হাজার ৮৮০ টাকা। আর নিট সম্পদ ছিল ৪৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৩ টাকার। 
আওয়ামী লীগের স্থানীয় একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় বদির কাছে নগদ টাকা ছিল না। নির্বাচন করার জন্য তখন তিনি ১০ লাখ টাকা চেয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছিলেন। সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি টেকনাফ স্থলবন্দরের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। নিজের চার ভাইসহ নিকটাত্মীয়দের কাজে লাগিয়ে বৈধ-অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। 
এ ছাড়া টেকনাফ সীমান্তে তৎপর মাদকদ্রব্য ইয়াবা চোরাচালান চক্রের সঙ্গে সাংসদ ও তাঁর নিকটাত্মীয়দের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়টি পাঁচ বছর ধরেই গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও মাদক চোরাচালানের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাংসদ বদি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম এসেছে। গত ১০ ডিসেম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দেড় লাখ ইয়াবা বড়িসহ কয়েকজন চোরাকারবারিকে আটক করে। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সাংসদ বদির ভাই আবদুস শুক্কুরকে আসামি করে থানায় মামলা করে বিজিবি।
অবশ্য আবদুর রহমান বদি প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ইয়াবা চোরাচালানে তিনি বা তাঁর পরিবারের কেউ জড়িত নয়। মাদক কারবারিরা নিজেরা রক্ষার জন্য এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ স্থলবন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, মিয়ানমারের আকিয়াব থেকে টেকনাফকেন্দ্রিক চোরাই কাঠের ব্যবসা ও চিংড়ি ব্যবসাও নিয়ন্ত্রণ করেন সাংসদ বদি। এসব অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। তাঁর দাবি, তিনি বৈধ ব্যবসা করে কোটিপতি হয়েছেন। শীর্ষস্থানীয় করদাতা হিসেবে পর পর দুবার সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন।

জিতবে আওয়ামী লীগ হারবে বাংলাদেশ

$
0
0
 বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রক্রিয়ায় তার ক্ষমতার মেয়াদ বাড়াতে চাইছেন, তাকে একজন ইউরোপীয় কূটনৈতিক ধাপে ধাপে সংঘটিত অভ্যুত্থান হিসেবে বর্ণনা করেছেন। প্রধান বিরোধী দল ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করছে। সুতরাং এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত। বৈধতার বিষয়টি অবশ্য আলাদা।
লন্ডনের বিখ্যাত ম্যাগাজিন দি ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। শুক্রবারের মুদ্রণ সংস্করণে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হবে। তা এরই মধ্যে অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম করা হয়েছে- ‘দ্য ক্যাম্পেন ট্রেল: দ্য রুলিং পার্টি উইল উইন বাংলাদেশ’স্‌ ইলেকশন, দ্য কান্ট্রি উইল লুজ’।

এ প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার অজনপ্রিয় সরকার দেশের বৃহৎ অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, জামায়াতের সব নেতার ফাঁসি কার্যকর করতে শেখ হাসিনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ফাঁসি কার্যকর না করতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সমঝোতা শেখ হাসিনার স্টাইল নয়। 
তিনি ৫ বছর আগের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিলেন। ২০১১ সালে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে ছেঁটে ফেলা হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে নির্বাচনকালীন সরকারের এ ব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত হয়েছিল। এ সংশোধনী বাংলাদেশে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। আগামী নির্বাচনের সবচেয়ে বড় অসুবিধার দিক হচ্ছে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪ আসনেই কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। বিএনপি এবং তাদের জোটের ১৭টি দল নির্বাচন বয়কট করেছে। নির্বাচন বয়কট করায় দেশের তৃতীয় বৃহত্তম দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে হাসপাতালে বন্দি করে রাখা হয়েছে। দেশের এর পরের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল জামায়াতের নির্বাচনে অংশ নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দলটির গঠনতন্ত্রের ধর্মীয় বিধান বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে দলটির ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ হয়তো নির্বাচনে জিতবে। ৫ই জানুয়ারি যা-ই হোক না কেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে বরণ করার সংসদ সদস্যের অভাব হবে না। দেশে ও বিদেশে এ নির্বাচন বৈধতার সঙ্কটে পড়বে। যদিও বাংলাদেশের বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতই একমাত্র বিদেশী শক্তি যারা একদলীয় নির্বাচন সমর্থন করছে। নির্বাচনের আগেই ফল নিশ্চিতের (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ ধরনের ব্যবস্থা চালু করেন) নির্বাচনী ব্যবস্থার পৃষ্ঠপোষকতার ভারতীয় সিদ্ধান্ত অপরিণামদর্শী প্রমাণ হতে পারে। বাংলাদেশে এরই মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব জোরদার হয়েছে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা দখলে ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকতা ভারতবিরোধীরা যা চায় সে সুযোগ করে দিতে পারে। এতে অধিক কট্টর এবং কম ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের উদ্ভব হতে পারে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী কোন পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী নয়। নির্বাচনকে নিজের পক্ষে নিতে ২০০৭ সালে চেষ্টা করেছিলেন খালেদা জিয়া। তখন সেনা সমর্থনে অনির্বাচিত টেকনোক্র্যাট সরকার ক্ষমতায় আসে। তারা দু’বছর ক্ষমতায় থাকে। তখন বিদেশী যেসব দেশ কৌশলগতভাবে তাদেরকে সমর্থন দিয়েছিল, এবার তেমনটা হবে না। ফলে মাসের পর মাস সংঘাত চলতে থাকবে। এক জনমত জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের শতকরা মাত্র ৩০ ভাগ মানুষ চায় সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করুক। উল্লেখ্য, যদি তারা তা করে এবং আরেকটি নির্বাচন করে, এক্ষেত্রে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মানুষ চায় সংঘাতে লিপ্ত দু’ নেত্রী মুক্ত রাজনীতি। কিন্তু তারা যেভাবে দেশ শাসন করুন না কেন দৃশ্যত তাদেরকে বাদ দিয়ে রাজনীতি হবে না।
ভোট নিয়ে সামপ্রতিক সহিংসতায় ১০০-এর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ১২ই ডিসেম্বর ইসলামপন্থি দল জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর সর্বশেষ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। শেখ হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি রাজপথে তার রাজনীতি পরিচালনা করছে। তারা একের পর এক অবরোধ কর্মসূচি আহ্বান করছে। এতে পরিবহন ব্যবস্থা এবং অর্থনীতি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। বিএনপির জোট সঙ্গী জামায়াত তাদের অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের রগকাটার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এখন হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে দলটি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকাশ্য গুলি করে তাদের জবাব দিচ্ছে। ১৬ই ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাতক্ষীরায় গুলি করে জামায়াতের ৫ কর্মীকে হত্যা করেছে। যেসব জেলায় জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে তার মধ্যে সাতক্ষীরা অন্যতম। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে জামায়াতের তরুণ কর্মীরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি এবং দোকানে হামলা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা প্রত্যন্ত অঞ্চল ছেড়ে রাজধানী ঢাকায় আশ্রয় নিয়েছে।
http://mzamin.com/detailsarchive.php?mzamin=MzY2Mg==&s=Mg==

৫ বছরেই হাইব্রিড হানিফের সম্পদের পাহাড়

$
0
0
..গত পাঁচ বছরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকায় ৭০ একর জমি কিনেছেন। এর মধ্যে ৬৬ একরই সুন্দরবনের পাশে বাগেরহাটের মংলা উপজেলার জয়মনিগোল গ্রামে। তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনটি নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গাজীপুরে কিনেছেন তিন একর জমি। হাতে আছে আরও প্রায় ৪৪ লাখ টাকা। স্ত্রী ও নিজের নামে শেয়ার কেনা আছে এক কোটি ২২ লাখ টাকার। এক কোটি ১৮ লাখ টাকায় দুটি গাড়িও কিনেছেন।
এই ‘সফল’ ব্যক্তিটি হলেন মাহবুব উল আলম হানিফ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। কিছুদিন আগ পর্যন্ত এ সরকারের প্রায় পুরো মেয়াদেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ছিলেন।
বিপুল এই সম্পদের হিসাব হানিফের নিজেরই দেওয়া। ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হলফনামায় হানিফ এ তথ্য দিয়েছেন। তবে এই হিসাবের বাইরে বেনামে আরও সম্পদ রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

হলফনামায় হানিফ লিখেছেন, নতুন তিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে তাঁর কোনো আয় হয় না। প্রধান আয়ের উৎস হিসেবে তিনি মৎস্য খাতের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর দাবি, বছরে সেখান থেকে আয় তিন কোটি ৭০ লাখ টাকা। তবে মৎস্য খামারটি কোথায়, তার উল্লেখ করেননি।
জানতে চাইলে প্রথম আলোকে তিনি জানান, খুলনার দাকোপ ও পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালিতে তাঁর মাছের ঘের রয়েছে। সেখান থেকেই ওই আয় হয়। কিন্তু ওই দুই জায়গায় প্রথম আলো অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পারে, নব্বইয়ের দশকের দিকে তিনি সেখানে দুটি মাছের ঘের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দুটিই বর্তমানে বন্ধ। হানিফের দাবি, বেশ কয়েকটি খামারে তার অংশীদারি রয়েছে। সেখান থেকেও তাঁর আয় হয়।
পরিবেশ আইন ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সুন্দরবনের চারপাশে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন নিষিদ্ধ। কিন্তু হানিফের কেনা জমি সুন্দরবনের ২০০ মিটারের মধ্যে। সেখানে একটি শিপইয়ার্ড স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থানগত ছাড়পত্রও নিয়েছে হানিফের প্রতিষ্ঠিত সানমেরিন শিপইয়ার্ড লি.।
বর্তমান সরকারের আমলে ২০১০ সালে নিবন্ধন পাওয়া সানমেরিন শিপইয়ার্ড কোয়েস্ট গ্রুপ অব কোম্পানির একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। কোয়েস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহবুব উল আলম হানিফ। আর সানমেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁর ভায়রা কাজী হাসান শরীফ। তাঁর নামেও জয়মনিগোল গ্রামে ১৮০ একর জমি কেনা হয়েছে।
এই জমি কেনা এবং শিপইয়ার্ড স্থাপন সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহবুব উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জয়মনিতে খাদ্য বিভাগ গুদাম নির্মাণ করেছে। নৌবাহিনী একটি শিপইয়ার্ড তৈরি করছে। আমরাও বিদেশি বিনিয়োগ মাথায় রেখে সেখানে জমি নিয়েছি। সেখানে শিপইয়ার্ড স্থাপনের জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহও দেখিয়েছে। তবে কোনো আইন লঙ্ঘন করে বা সরকার অনুমোদন না দিলে সেখানে শিপইয়ার্ড স্থাপন করা হবে না।
আয়কর বিবরণীতে বলা হয়েছে, মাহবুব উল আলম ব্যবসায় এক কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। আরও চারটি প্রতিষ্ঠানে তাঁর শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে কোয়েস্ট ইন্টারন্যাশনালে তিন লাখ ২৫ হাজার টাকা, লুনা এভিয়েশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডে ১০ লাখ, সানমেরিন শিপইয়ার্ডে ৮০ লাখ, ব্লু লাইন এয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডে ১০ লাখ টাকা তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে।
ওয়েবসাইটে কোয়েস্ট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এইচআরএফ ইঞ্জিনিয়ারিং লি., এমবি ট্রেডার্স, কেসিওপিয়া ইনকের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এই তিন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেননি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ভবনের অষ্টম তলায় কোয়েস্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়।
ওয়েবসাইটে আছে, হলফনামায় ওই তিন প্রতিষ্ঠানের নাম নেই কেন? জানতে চাইলে হানিফ বলেন, ওয়েবসাইটে ভুলে তিন প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে তাঁর দাবি।
হলফনামায় হানিফের সম্পত্তি হিসেবে কোনো কৃষিজমি থাকার কথা উল্লেখ নেই। কিন্তু মংলা ভূমি নিবন্ধন কার্যালয় থেকে তাঁর জমির ৩০টি দলিলের অনুলিপি পাওয়া গেছে। মংলা উপজেলা ভূমি নিবন্ধন কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হানিফের নামে কেনা জমির পুরোটাই কৃষিজমি।
সম্পদ ও আয়: গাজীপুরে এক কোটি ৯৮ লাখ টাকায় তিন একর জমি, বাগেরহাটের মংলা উপজেলার জয়মনিতে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৬ টাকা দিয়ে ৬৬ দশমিক ৫৯৩ একর জমি, জয়মনিতেই দশমিক ৭০ একর জমি দুই লাখ ৮৬ হাজার টাকায়, কুষ্টিয়ার জোড়হাঁসে ১১ লাখ টাকায় জমি কিনে সেখানে ২০ লাখ টাকায় একটি বাড়ি নির্মাণ করছেন তিনি। এ ছাড়া সানমেরিন শিপইয়ার্ডে শেয়ার কেনা বাবদ অগ্রিম দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন এবং সুদমুক্ত ঋণ হিসেবে তিনি দিয়েছেন এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা।
হানিফ তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে হলফনামায় লিখেছেন, এক কোটি পাঁচ লাখ ও ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের দুটি গাড়ি রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া নগদ ও ব্যাংকে মিলিয়ে তাঁর মোট ব্যবসাবহির্ভূত অর্থের পরিমাণ ৪৪ লাখ ৬০ হাজার ৬২৮ টাকা। গত অর্থবছরে হানিফ মোট ২০ লাখ ৩০ হাজার ৪০৫ টাকা আয়কর দিয়েছেন। গত বছর মোট ব্যয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৩৬ লাখ ১৯ হাজার ৯৪৫ টাকা। ব্যাংকঋণ শোধ করেছেন ৩১ লাখ ১৫ হাজার ৩০৫ টাকা।
বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে তিনি বছরে সাত লাখ ২৩ হাজার ৮০০ টাকা আয় করেন। চাকরি বাবদ বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক সুদ বাবদ বছরে চার হাজার ৭৯৯ টাকা দেখানো হয়েছে।
এ ছাড়া হানিফের নামে ন্যাশনাল ব্যাংক কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ১২ কোটি ৫০ লাখ ও এক কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯৭ টাকা এবং রূপালী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখা থেকে ৩৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।
ব্যবসা শুরু: প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্যবসায়ী হিসেবে মাহবুব উল আলম হানিফের যাত্রা শুরু ১৯৮৬ সালে। সে সময় তিনি কুষ্টিয়া থেকে খুলনায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। খুলনার দাকোপ উপজেলায় একটি চিংড়িঘের স্থাপন করেন তিনি। ’৯০ সালের পর খুলনা ছেড়ে আবার কুষ্টিয়ায় ফিরে যান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় পরিচয়ই তাঁকে অল্প সময়ের মধ্যে দলের ভেতরে-বাইরে প্রভাবশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করে। ২০০৪ সাল পর্যন্ত হানিফ কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ সদস্য ছিলেন। ওই বছর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে মনোনয়ন চান তিনি। সেখানে মহাজোটের শরিক জাসদের (ইনু) সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে মহাজোটের প্রার্থী করা হয়।
মনোনয়ন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হানিফকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পান তিনি। পরে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও সংসদ নির্বাচনে অন্য এলাকা (কুষ্টিয়া-৩) থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আত্মীয়তার সম্পর্ক বড় ভূমিকা রেখেছে। হানিফের বড় ভাইয়ের সঙ্গে শেখ হাসিনার ফুফুতো বোনের বিয়ে হয়। ওই হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই হন হানিফ।
দলীয় ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার পর মাহবুব উল আলম হানিফ তাঁর প্রভাব কাজে লাগিয়ে অনেকগুলো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিপুল সম্পত্তির মালিক হন। এর মধ্যে নিজের নামে নিবন্ধিত ও ব্যাংকে গচ্ছিত সম্পত্তির হিসাব হলফনামায় উল্লেখ করলেও এর বাইরে বেনামে ও আত্মীয়স্বজনের নামে বিপুল সম্পত্তি কিনেছেন বলে অভিযোগ আছে।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করা হয় যে, বড় বড় সরকারি ক্রয়, টেন্ডার ও লেনদেনের ক্ষেত্রে হানিফ তাঁর প্রভাব কাজে লাগিয়ে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। এ ছাড়া সরকারি প্রকল্পে নিয়োগ-বদলির ক্ষেত্রে তদবিরকারী হিসেবে বর্তমান সরকারের পাঁচ বছরে আলোচিত-সমালোচিত হন তিনি।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/104538/%E0%A7%AB_%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%87_%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A7%9C

হলফনামার তথ্য এত সম্পদ!

$
0
0
22 Dec, 2013
মনোনয়নপত্র দাখিলের সঙ্গে জমা দেওয়া সরকারদলীয় সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের এবারের প্রার্থিতার হলফনামায় আয় বৃদ্ধির অবিশ্বাস্য চিত্র পাওয়া গেছে। হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খানের সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১৮০ গুণ, সরকারদলীয় এমপি ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৯১ গুণ, মির্জা আজমের সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৮০ গুণ। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হকের ৫ বছরে ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ বেড়েছে।
এ ছাড়া সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত
সেনগুপ্ত, সরকারদলীয় এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষেরও অস্বাভাবিক আয়ের পরিমাণ দেখা গেছে হলফনামায়।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেন ১১০৭ জন। এর মধ্যে ৫ ও ৬ ডিসেম্বর বাছাইয়ের পরে ৮৪৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী এসব প্রার্থীর হলফনামায় উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন, তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিবরণ ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের আয়ের হিসাব দেখানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কোনো প্রার্থীর হলফনামার তথ্যে গরমিল প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। এই তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। দেশের যে কোনো নাগরিকের এই তথ্যের ভিত্তিতে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগও রয়েছে।
মির্জা আজম : জামালপুর-৩ আসনের এমপি মির্জা আজম ২০০৮ সালে প্রার্থিতা দাখিলের সময় হলফনামায় তার যে সম্পদের বিবরণ দিয়েছিলেন তার মূল্য ছিল ২৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৭ টাকা। এ বছর হলফনামায় যে বিবরণ দিয়েছেন তাতে সম্পদের পরিমাণ ১৯ কোটি ৪৮ লাখ ২৫ হাজার ৪২৫ টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে তার সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৮০ গুণ।
২০০৮ সালে হলফনামায় সম্পদের বিবরণে মির্জা আজম তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ২৫ হাজার টাকা ও স্ত্রীর আয় ছিল ৯ হাজার ৬০০ টাকা। এবারে তার আয় হয়েছে ৬৬ হাজার টাকা ও স্ত্রীর কোনো আয়ের কথা উল্লেখ নেই। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানতে এবার আয় দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৫ টাকা। গতবার তা উল্লেখ ছিল না। ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ এবার দেখানো হয়েছে ১১ লাখ ১৮ হাজার ৪১৪ টাকা। স্ত্রীর নামে কোনো টাকা জমা নেই। ২০০৮ সালে তার হাতে নগদ ছিল ২৩ লাখ ৩২ হাজার ৬২৫ টাকা ও স্ত্রীর ছিল ১৯ লাখ ৫৬ হাজার ৬৮ টাকা। এবারে নিজের হাতে ১৮ লাখ ও স্ত্রীর হাতে ১৮ লাখ ৪ হাজার ৭১৯ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ার ২০০৮ সালে না থাকলেও এবার তার নামে বিভিন্ন কোম্পানির ২ লাখ ৭০ হাজার শেয়ার দেখানো হয়েছে। যার মূল্য ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে বিভিন্ন কোম্পানির ৫ হাজার ৮৫০টি শেয়ার দেখানো হয়েছে, যার মূল্য ১৯ লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে ২০০৮ সালে কোনো বিনিয়োগ না থাকলেও এবার দেখানো হয়েছে নিজ নামে ২৪ লাখ ও স্ত্রীর নামে ৬০ লাখ ৬২ হাজার ৯২২। স্ত্রীর নামে আগে ২০ ভরি স্বর্ণ থাকলেও এবারে দেখানো হয়েছে ৬২ ভরি। অকৃষি জমির মূল্য ২০০৮ সালের হলফনামায় ৬ লাখ ৯ ৬৫২ টাকা দেখানো হলেও এবার দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৮৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬২ টাকা। আগে একটিও না থাকলেও এবার আবাসিক বা বাণিজ্যিক দালানের সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৯টি, যার মূল্য ১ কোটি ২১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৯১ টাকা। ঢাকায় এবারে একটি বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৩ টাকা, যা ২০০৮ সালের হলফনামায় প্রযোজ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
আবদুল মান্নান খান : ঢাকা-১ আসনের এমপি প্রার্থী সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান। ২০০৮ সালে দেওয়া হলফনামার তুলনায় এবারের হলফনায় সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর আয় বেড়েছে প্রায় ১৮০ গুণ। গতবারের সম্পদ বিবরণীর মাত্র ৩ লাখ ২১ হাজার টাকার আয়ের বিবরণী পাঁচ বছরের ব্যবধানে পেঁৗছেছে ৫ কোটি ৮৫ লাখ ২৪ হাজার টাকায়। বার্ষিক আয় কৃষি খাতে দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার টাকা। পুঁজিবাজার বা সঞ্চয়পত্র থেকে আগে তার আয় না থাকলেও এবারে আয় ১ লাখ ১১ হাজার টাকা। পেশাগত আয় প্রায় সাড়ে তিনগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৭৩ হাজার। আগে মৎস্য খাত ও রেমিট্যান্স থেকে কোনো আয় না থাকলেও এবার হলফনামায় তা দেখানো হয়েছে আয় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
২০০৮ সালে নিজের ও স্ত্রীর হাতে নগদ মোট ৭৬ হাজার টাকা থাকলেও এবার নিজের হাতেই নগদ আছে ৪০ লাখ ও স্ত্রীর কাছে ১৫ লাখ টাকা। আয়ের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের কথা উল্লেখ করা হলেও এ খাতে কত টাকা তিনি তা উল্লেখ করেননি। তবে পুঁজিবাজারে স্ত্রীর নামে রয়েছে ২ লাখ টাকা। অতীতে সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত হিসেবে নিজের ও স্ত্রীর নামে কিছু না থাকলেও এবার নিজের নামে রয়েছে ৪৩ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে সাড়ে ৬ লাখ টাকা। মোটরগাড়ির দাম ৪৪ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ৬০ লাখ টাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টও।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৫ একর কৃষি জমি। নিজ নামে ২০০৮ সালের হলফনামায় গুলশানে ১ লাখ টাকার ও স্ত্রীর নামে গুলশানে মোট ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার অকৃষি জমির অর্জনকালীন মূল্য উল্লেখ ছিল। এবারের হলফনামায় তার নিজের ৩১ লাখ ৭৪ হাজার টাকার কৃষি জমি এবং স্ত্রীর নামে অকৃষি জমির দাম ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন অতীতে নেই উল্লেখ করা হলেও এবার 'নেই'র স্থলে উল্লেখ আছে ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এ ছাড়া তার মাছের খামার যুক্ত হয়েছে পাঁচটি।
ফজলে নূর তাপস : ঢাকা-১০ আসনের এমপি শেখ ফজলে নুর তাপসের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৯১ গুণ। গতবারের ৩ কোটি ৮১ লাখ ৪৮ হাজার ১১৩ টাকার সম্পদের পরিমাণ পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়ে হয়েছে ৩৪৭ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। হলফনামার সম্পদ বিবরণীতে এ বছর তার বার্ষিক আয় ২ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার। এর মধ্যে পেশাগত আয় ১ কোটি ১৪ লাখ। অন্যান্য আয়ের খাত কৃষি, শেয়ার, অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া। ২০০৮ সালের হলফনামায় তার কৃষি খাতে কোনো আয় ছিল না। এবার তার পেশাগত আয় বেড়েছে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৬ কোটি ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, যা ২০০৮ সালের হলফনামায় ছিল মাত্র ৮৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯১৭ টাকা। তখন তার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাত্র ১ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৬ টাকা থাকলেও এবার তা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ২ লাখ ৩৯ হাজার টাকায়। পুঁজিবাজারে আগে তার বিনিয়োগ ছিল ৩ লাখ ৩০ হাজার, যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ১৪ লাখ। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ৩১ লাখ ২০ হাজারের স্থলে হয়েছে ৩ কোটি ৩ লাখ। স্বর্ণালঙ্কারের দাম প্রায় চারগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ। ইলেকট্রনিকস ও আসবাবপত্রে দাম ৭ লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে আগে কোনো টাকা না থাকলেও এবার আছে ২৪ লাখ ৭২ হাজার। পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে স্ত্রীর নামে বিনিয়োগ আড়াই লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ লাখ টাকা। তাপসের সব স্থাবর সম্পদই যৌথ মালিকানায়। যৌথ মালিকানার এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে কৃষি জমির পরিমাণ ২ বিঘা সাড়ে ১০ কাঠা (দাম উল্লেখ নেই)। মতিঝিলে একটি ভবন (দাম উল্লেখ নেই)। ১০ কাঠা অকৃষি জমির দাম ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যার একই পরিমাণের অর্জনকালীন মূল্য ২০০৮ সালের হলফনামায় ছিল ৪৬ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামায় কোনো অ্যাপার্টমেন্ট উল্লেখ না থাকলেও এবার অ্যাপার্টমেন্টের দাম দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ। চা ও রাবার বাগান অতীতে না থাকলেও এবার দাম উল্লেখ করা হযেছে ১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে ধানমণ্ডিতে একটি পল্গটের দাম ১ কোটি ৬৬ লাখ, রাবার ও চা বাগানের দাম ১ কোটি ২ লাখ।
রুহুল হক : সাতক্ষীরা- ৩ (দেবহাটা, আশাশুনি এবং কালীগঞ্জের একাংশ ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক। বর্তমানে তার স্ত্রীর আয়ের কোনো উৎস নেই। তবে গত ৫ বছরে তার নিজের তুলনায় স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ। তাই বলে একেবারে থেমে ছিল না নিজেরটাও। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে রুহুল হকের দেওয়া হলফনামার তথ্যমতে, কৃষি খাত থেকে তার বার্ষিক আয় ১০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে আয় ৩৩ হাজার ৩০০ টাকা কমে ২২ লাখ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা হয়েছে। তবে নতুন করে শেয়ার থেকে তার বার্ষিক আয় হচ্ছে ৩৪ হাজার ২০ হাজার ৭৪১ টাকা। পেশা থেকে কোনো আয় না থাকলেও চাকরি থেকে তিনি গত পাঁচ বছরে আয় করেছেন ৬ লাখ ৩৭ হাজার ২০০ টাকা। তার ওপর নির্ভরশীল, এমনকি তার স্ত্রীর নামেও কোনো আয় নেই বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তবে অস্থাবর সম্পদের তালিকায় নিজের হাতে নগদ ২১ লাখ ৯৬ হাজার ১৭৪ টাকা কমে ২৯ হাজার ৪৩২ টাকা ও স্ত্রীর হাতে নগদ ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ২২৪ টাকা বেড়ে ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৪ টাকা আছে। নিজের নামে ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আছে ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৩ হাজার ৫২৩ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৭ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা, যা ২০০৮ সালের হলফনামায় ছিল যথাক্রমে ৮৭ লাখ ৭২ হাজার ৭৮ টাকা ও ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩০ টাকা। শেয়ার ও বন্ডে নিজের নামে আগে ১ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৬০ লাখ ২০ হাজার টাকা থাকলেও এবার শুধু নিজের নামে এ খাতে আছে ২ কোটি ৮০ লাখ ৩৩ হাজার ৫০৮ টাকা। সঞ্চয়পত্রে এবার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে নিজের নামে হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ ৬৫ হাজার ৯২২ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৩৪ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। নিজের নামে পুরাতন গাড়ির দাম উল্লেখ আছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
স্থাবব সম্পত্তির তালিকায় এবার ২০০৮ সালের সম্পত্তিই উল্লেখ আছে। তবে পরিবর্তন হয়েছে তার বাড়ির অর্জনকালীন মূল্য! ২০০৮ সালে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের অর্জনকালীন মূল্য ১ কোটি ২৮ লাখ ৭৬২ টাকা উল্লেখ করা হলেও এবার তিনি দিয়েছেন অর্ধেক মূল্য মাত্র ৫৬ লাখ টাকা। তবে এবার তিনি স্ত্রী ইলা হকের কাছে দেনা আছেন ১ কোটি টাকা।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত : সুনামগঞ্জ-২ আসনে আ'লীগের দলীয় প্রার্থী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের আয়ের উৎস কৃষি খাত, বাড়ি ভাড়া, শেয়ার ও পরিতোষিক ভাতা। কৃষি খাতে তার আয় প্রায় তিনগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। বাড়ি ভাড়া থেকে মাত্র ৫৫ হাজার ৩৭১ টাকা আয় বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার ৯১৮ টাকা। অতীতে মৎস্য খামারের ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক ৬ লাখ ৪৮ হাজার ২০০ টাকা আয় হলেও এবার তার ব্যবসা থেকে কোনো আয় নেই। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে তার আয় কমেছে। এ খাতে ২০০৮ সালে তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫৫ টাকা আয় হলেও এবার কোনো আয়ের উল্লেখ নেই।
অস্থাবর সম্পদ_ নিজের নামে অতীতে ২৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৯৯ টাকা ব্যাংকে থাকলেও এবার ওই ঘরটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ৯৯ হাজারের স্থলে বসেছে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯০৬ টাকা আর নির্ভরশীলদের ২ লাখ ৯২ হাজার ২৪ টাকার স্থলে বসেছে ক্রসচিহ্ন। শেয়ার বাজারে নিজের নামে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা। স্ত্রীর নামে অপরিবর্তিত আছে ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৪০০ টাকার শেয়ার। তবে সঞ্চয়পত্রে নিজের নামে ১১ লাখ ২০ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ২৫ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা। নিজের নামে ৩০ লাখ টাকার গাড়ির স্থলে হয়েছে ৯৫ লাখ ৯২ হাজার ৫৬৮ টাকা।
স্থাবর সম্পত্তিতে তার কৃষি জমির পরিমাণ কমেছে ৪২ একর, অকৃষি জমির ক্ষেত্রে অতীতে দশমিক ৯১ একর লেখা থাকলেও এবার উল্লেখ করেছেন '২টি'র মূল্য ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। দালান বা আবাসিক ভবনের অর্জনকালীন মূল্য ২০০৮ সালে ৫১ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৪ টাকা উল্লেখ করলেও এবার বলেছেন ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা! আগে তার ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি টিনশেড পাকা ঘর থাকলেও এখন সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন ৫৪ লাখ ৫ হাজার ১৮৪ হাজার টাকা। তার ২৮ একরের দুটি চা বাগানের মূল্য ২০০৮ সালে ২০ লাখ ৪৪ হাজার ৬৯ টাকা উল্লেখ থাকলেও এবার তা নেই উল্লেখ করা হয়েছে।
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ : মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষের পেশা ব্যবসা। তিনি ৬টি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার আয়ের উৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৩৮ লাখ ৩০৬ টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে আয় এক লাখ ২৩ হাজার ৭৩১ টাকা। এই খাতে নির্ভরশীলদের আয় ৩৮ লাখ ৩০৬ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ হাতে নগদ ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৪৯ টাকা। স্ত্রীর কাছে ৩১ লাখ ৩ হাজার ৫৫৬ টাকা। নির্ভরশীলদের রয়েছে ৫৭ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৬ টাকা। ব্যাংকে জমা নিজ নামে ১৪ লাখ ৭১০ টাকা। স্ত্রীর নামে ৯৮ লাখ ৮৭ হাজার ৩১০ টাকা। নির্ভরশীলদের ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৯২ টাকা। তালিকা ছাড়া শেয়ার আছে ৮ হাজার ৪১৫টি, যার মূল্য ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তালিকাভুক্ত শেয়ার আছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭৩টি, যার মূল্য ৩৫ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩০ টাকা। স্ত্রীর নামে শেয়ার আছে ১০ লাখ ৮১ হাজার ৬৩৬ টাকার। সঞ্চয়পত্র নিজ নামে ৭ লাখ ৯৫ হাজার ৬৪৫ টাকা ও স্ত্রীর নামে ২ কোটি ১৮ লাখ ৩২ হাজার ৯৬৯ টাকার। কোম্পানি ও নিজ নামে গাড়ির মূল্য ৭৭ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৯ টাকা। স্ত্রীর নামে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের গাড়ি আছে। স্বর্ণ নিজের ৫ ভরি, স্ত্রীর ১২ ভরি।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমির মূল্য ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৯১৬ টাকা। নির্ভরশীলদের নামে জমি ১৫ লাখ টাকার। অকৃষি জমি নিজ নামে গাজীপুরে ২৭ শতাংশ, নিকুঞ্জে ৩ কাঠা, মালিবাগে আড়াই কাঠা এবং স্ত্রীর নামে গাজীপুরে সাড়ে ৩২ শতাংশ, খিলগাঁওয়ে আড়াই কাঠা, জোয়ারসাহারায় ১০ কাঠা। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দালান একটি, যার মূল্য ৪০ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে বসুন্ধরা শপিংমলে একটি দোকান, যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা এবং ধানমণ্ডিতে ৪৮ লাখ ৪৭ হাজার ২৯ টাকার একটি বাড়ি রয়েছে। নির্ভরশীলদের নামে ধানমণ্ডিতে ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের আরও একটি বাড়ি আছে তার। তবে কোম্পানির যৌথ অংশীদার হিসেবে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ২৭ কোটি ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ টাকার তার দায়দেনা রয়েছে

পাঁচ বছরে দুর্নীতি-অনিয়মের এক লাখ কোটি টাকা পাচার

$
0
0
বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। অবৈধভাবে আয় ও দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করা এসব অর্থ পাচার করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে ছোট ও মধ্যম সারির নেতারাও। পাচারের সঙ্গে আছেন প্রশাসনের শীর্ষ ও মধ্যম শ্রেণীর কর্মকর্তারাও। মূলত নিজেদের ভবিষ্যত্ নিয়ে উদ্বেগের কারণ থেকেই অর্থ পাচার বাড়ছে। এক হিসেবে দেখা গেছে, বছরে গড়ে দেশ থেকে চলে যাচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। শুধু গত বছর বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে ৩০০ কোটি ডলার। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ২৪ হাজার কোটি। সরকারের শেষ সময়ে এসে অর্থ পাচার বেড়ে গেছে। হিড়িক পড়ে গেছে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি কেনার। এদিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) তাদের সাম্প্রতিক এক জরিপে জানিয়েছে, ২০১১ সালে আগের বছরের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার বেড়েছে ২৮ শতাংশ। সংস্থাটি অর্থ পাচারের এমন দৃষ্টান্তকে নজিরবিহীন উল্লেখ করেছে। জিএফআই’র হিসেবে এশিয়ার মধ্যে অর্থ পাচারের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থান দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশ। 
কোন গন্তব্যে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা, কারা পাচার করছেন এই অর্থ, বিনিয়োগ হচ্ছে কোথায়— এমন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে পাচার করা অবৈধ অর্থের সিংহভাগই গেছে মালয়েশিয়া, দুবাই ও সিঙ্গাপুরে। এই তিন গন্তব্য হয়ে পাচার করা অর্থ আবার যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে। পাচার করা অর্থের কিছু অংশ আবার বৈধ করতে রেমিট্যান্স হিসেবে দেশেও ঢুকছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে মালয়েশিয়ায় ‘সেকেন্ড হোম’ প্রকল্পে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশের তালিকায় শক্তিশালী অবস্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশীরা। সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আর বিদেশে পাড়ি জমানোর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের পছন্দের দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মালয়েশিয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর ব্যক্তিরা দেশের বাইরে নিরাপদ জায়গা খুঁজছেন। তুলনামূলক কম খরচে বাড়ি কেনা যায় বলে তাদের প্রথম পছন্দ মালয়েশিয়া। দুই বছর ধরে সেকেন্ড হোম কর্মসূচির ভিসা নেয়ার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান আগের ষষ্ঠ অবস্থান থেকে তিন নম্বরে উঠে এসেছে। এ সুবিধা পেতে মালয়েশিয়ার ব্যাংকে কোটি টাকা অঙ্কের অর্থ জমা রাখতে হয়। মালয়েশিয়া সরকারের তথ্যমতেই গত পাঁচ বছরেই এ খাতে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় পাচার হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার। তবে সেকেন্ড হোম প্রকল্পের বাইরে আরও অন্তত ৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে মালয়েশিয়ায়। এই টাকা বিনিয়োগ হয়েছে বাড়ি-গাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনায়। জানা গেছে, গত দুই বছর অর্থাত্ ২০১১ ও ২০১২ সালে বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে সুযোগ গ্রহণের মাত্রা যেমন বেড়েছে, তেমনি দেশটিতে বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনার হারও বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ পাচার নিয়ে গবেষণা করে থাকে গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি বা জিএফআই। সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়, ২০০২ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এক দশকে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক হাজার ৬০৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা এক লাখ ২৮ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা অবৈধভাবে বাইরে চলে গেছে। এর ফলে বিশ্বের যে ১৫০টি উন্নয়নশীল দেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে, সে দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৪৭তম। আর দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। এতে দেখা যায়, আলোচ্য সময়কালে গড়ে প্রতিবছর ১৬০ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ১২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা অবৈধ পথে বাংলাদেশের বাইরে স্থানান্তর করা হয়েছে। অস্বচ্ছ ব্যবসায়িক লেনদেন, দুর্নীতি ও কর ফাঁকির মাধ্যমে এ অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জিএফআই’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, আলোচ্য ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে গত ২০১১ সালেই। সংস্থাটির হিসেবে ২০১২ সালে এই অর্থের পরিমাণ আরও প্রায় ৩০ ভাগ বাড়বে।
কেন অর্থ পাচার বাড়ছে— জানতে চাইলে গ্লোবাল ইকোনমিস্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট এনায়েত করিম বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে আর্থিক খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে বর্তমান সরকারের গত পাঁচ বছরে। তিনি দাবি করেন, এই পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর সিংহ ভাগ অর্থ আবার গেছে পুঁজিবাজার থেকে লুট হওয়া টাকা থেকে। এর বাইরে টেলি যোগাযোগ খাতের লাইসেন্স বিক্রি ও জ্বালানি-বিদ্যুত্ খাত থেকে বিপুল অঙ্কের অবৈধ অর্থ পাচার হয়েছে। যার সঙ্গে সরকারের বেশ কয়েকজন শীর্ষ আমলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও মধ্যম সারির নেতারাও জড়িত রয়েছেন।’ তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে পাচার করা অর্থ বিনিয়োগ বেড়েছে মালয়েশিয়ায়। তার তথ্যমতে, দেশটিতে গত দুই বছরে বর্তমান সরকারদলীয় অন্তত এক হাজার দলীয় নেতা ও ব্যবসায়ী নেতা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছেন।
মালয়েশিয়ার পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম’ প্রকল্পের সরকারি ওয়েবসাইট থেকেও এ বিষয়ে একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, ২০০২ সালে এই কর্মসূচি শুরু হলেও সে বছর কোনো বাংলাদেশীর এ সুযোগ নেননি। ২০০৩ সালে প্রথমে এ সুযোগ নেন ৩২ জন। ২০০৭ সালে সেকেন্ড হোম সুবিধা নেন ১৪৯ জন, ২০০৮ সালে ৬৮, ২০০৯ সালে ৮৬ ও ২০১০ সালে ৭৪ জন। বর্তমান সরকারের শেষ দিকে এসে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ থেকে উঠে এসেছে তিন নম্বরে। ২০১১ সালে বাড়ি কেনেন ২৭৬ জন আর ২০১২ সালে এ সংখ্যা ৩৮৮। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বাড়ি কিনেছেন ৯৪ জন।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘এশিয়ান টিভি’র চেয়ারম্যান, বঙ্গবুন্ধ সৈনিক লীগের সহসভাপতি— আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যবসায়ী নেতা হারুনুর রশিদ সপরিবারে মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম সুবিধা নিয়েছেন সম্প্রতি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেকেন্ড হোম সুবিধা নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি জানালেন, ‘দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ খুব ভালো নয়, তাছাড়া মালয়েশিয়া ব্যবসার দিক থেকে নতুন সম্ভাবনাময় একটি দেশ।’ এ দুটি কারণ বিবেচনায় নিয়েই আমি এবং আমার পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম সুবিধা নিয়েছি। হারুনুর রশিদ এশিয়ান টেক্সটাইলেরও কর্ণধার। যে প্রতিষ্ঠানটি বিগত বিএনপি সরকারের আমলে বাড়তি অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

সম্পদ গড়ার রেকর্ড সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুবের

$
0
0


পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার সম্পদ গড়ার রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। গত পাঁচ বছরে ব্যাংকে জমাকৃত তার টাকা বেড়েছে ৫৮৬ দশমিক ৭৫ গুণ, জমি বেড়েছে ১৪৩ দশমিক ২৫ গুণ ও বার্ষিক আয় বেড়েছে ৭৯ দশমিক ২৩ গুণ। স্ত্রীর নামে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ গুণ। নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের সময় মাহবুবুর রহমান হলফনামায় ২০ একর কৃষি জমি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন, যার বাজার মূল্য ছিল ৫৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তার কৃষি জমির পরিমাণ ২ হাজার ৮৬৫ একর, যার বাজার দাম দেখানো হয়েছে ৭০ লাখ ১৪ হাজার ৪৪০ টাকা। পাঁচ বছরে তার জমির মালিকানা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪৩ দশমিক ২৫ গুণ। ২০০৮ সালে খণ্ডকালীন রাখি মালামাল থেকে আয় দেখিয়েছিলেন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এখানে তার নির্ভরশীলদের কোনো আয় দেখানো হয়নি। ২০১৩ সালের হলফনামায় তার চাকরি থেকে আয় দেখানো হয়েছে ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ টাকা এবং মৎস্য উৎপাদন ও বিক্রি থেকে আয় দেখানো হয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা।

পাঁচ বছরের ব্যবধানে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে ৭৯ দশমিক ২৩ গুণ। এছাড়াও হলফনামায় তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় দেখানো হয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। অন্যান্য সম্পদের ২০০৮ সালের হলফনামায় ব্যাংকে জমাকৃত টাকা দেখানো হয়েছিল ৮৩ হাজার ১১২। ২০১৩ সালের হলফনামায় ব্যাংকে জমাকৃত টাকা ৪ কোটি ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭২। ব্যাংকে জমাকৃত টাকা বেড়েছে ৫৮৬ দশমিক ৭৫ গুণ। এছাড়াও ২০০৮ সালে স্বর্ণ, গাড়ি, ইলেকট্রিক মালামাল ও আসবাবপত্রের মূল্য দেখানো হয়েছে ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ পাঁচ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে টাকা আগে না থাকলেও ২০১৩ সালের হলফনামায় ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫৮ টাকা দেখানো হয়েছে। স্ত্রীর নামে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ১৬ লাখ ১৪ হাজার ৩৪২ টাকা। ২০০৮ সালে গাড়ির অনুকূলে এইচএসবিসি ব্যাংক থেকে ঋণ ৩ লাখ ২০ হাজার ৩৫২ টাকা ২৯ পয়সা।
ওই বছর বার্ষিক আয় ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং ব্যয় ২ লাখ টাকা। ২০১৩ সালের হলফনামায় বাড়ির অনুকূলে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ এক কোটি টাকা এবং বিপুল হাওলাদার নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ ৫০ লাখ টাকা। - See more at: http://www.jugantor.com/first-page/2013/12/22/51970#sthash.raABWfFt.dpuf

কাদের মোল্লাকে হত্যা করা হয়েছে : ড. ইউসুফ আল কারযাবি

$
0
0
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে হত্যা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ইসলামিক স্কলারস ফোরামের চেয়ারম্যান এবং বিশ্বের প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওলামা পরিষদের সদস্য বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ড. ইউসুফ আল কারযাবি কাদের মোল্লার ফাঁসির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা মুসলিম দেশগুলোর দিকে নজর দিলে দেখতে পাই তারা অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করছে। বাংলাদেশ একটি বৃহৎ মুসলিম দেশ হওয়া সত্ত্বেও মুসলমানদের ওপর বর্বর নির্যাতন করা হচ্ছে। 

সরকার ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাদের প্রতিহতের ব্যবস্থা করেছে। অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বা ৪০ বছরের ইতিহাসে সত্যিকার অর্থে তাদের এমন কোনো অন্যায় নেই, যার দরুন তাদের ফাঁসি দিতে হবে। কাজেই মিথ্যা বানোয়াটভাবে ইসলামপন্থীদের হত্যায় মেতে উঠেছে সরকার। 
তিনি জালিম শাসক ও তাদের সমর্থনকারী মানুষের সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, আল্লাহ তায়ালা এই জালিমদের যথাযথ পাওনা যথাসময়ে অবশ্যই আদায় করবেন, কেননা আল্লাহ সর্বশক্তিমান। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের শাসকেরা যারা জালিমের মতো আচরণ করছেন আল্লাহ আপনাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে সম। আল্লাহর ক্রোধকে ভয় করুন। আল্লাহ তায়ালা সুবিচারকারী। তিনি সব মানুষের জন্য ন্যায়বিচার করেন। তা ছাড়া তিনি ন্যায় বিচারকারীদের ভালোবাসেন এবং জালিমদের তিনি পছন্দ করেন না। আর তিনি জালিম মানুষের দলকে হেদায়েতের পথও দেখান না। 
কাদের মোল্লাকে ফাঁসির প্রতিবাদে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া সাাৎকার এবং কাতারের জাতীয় মসজিদে দেয়া আল্লামা কারযাবির দেয়া খুতবা আরব বিশ্বের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক টুইটারে ফলাওভাবে প্রচার করা হয়েছে।

আওয়ামীলীগ নেতাদের অস্বাভাবিক সম্পদ

$
0
0
ফুলে ফেঁপে পাঁচ বছরে সম্পদ বেড়ে হয়েছে বহুগুণ। কারও কারও ক্ষেত্রে এ বৃদ্ধির পরিমাণ অবিশ্বাস্য। আবার কেউ কেউ অবাক করার মতো তথ্যও দিয়েছেন নিজেদের সম্পদ বিবরণীতে। দশম সংসদে প্রার্থী হয়েছেন এমন সংসদ সদস্যদের হলফনামায় দেয়া সম্পদ বিবরণী থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে

অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হয়েছেন নবম জাতীয় সংসদের অধিকাংশ সংসদ সদস্য। ফুলে ফেঁপে পাঁচ বছরে সম্পদ বেড়ে হয়েছে বহুগুণ। কারও কারও ক্ষেত্রে এ বৃদ্ধির পরিমাণ অবিশ্বাস্য। আবার কেউ কেউ অবাক করার মতো তথ্যও দিয়েছেন নিজেদের সম্পদ বিবরণীতে। দশম সংসদে প্রার্থী হয়েছেন এমন সংসদ সদস্যদের হলফনামায় দেয়া সম্পদ বিবরণী থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে অনেকে অস্বাভাবিক পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন যা হলফনামায় স্বীকারও করেছেন। 
প্রধানমন্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি
নির্বাচন কমিশনে দায়ের করা হলফনামা অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর মালিকানায় গত পাঁচ বছরে ২ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৩৫ টাকার সম্পদ বেড়েছে।
কমিশনে জমা দেয়া ২০০৮-০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণী অনুযায়ী শেখ হাসিনার নিট সম্পদ ছিল ৩ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৯০৪ টাকার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে তা বেড়ে হয়েছে পাঁচ কোটি ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯ টাকা। তথ্য অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নামে ৬ একর কৃষিজমি রয়েছে, যার আনুমানিক দাম ৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এখান থেকে তিনি বছরে ৭৫ হাজার টাকা পান। এছাড়া মৎস্য খামার থেকে বছরে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন।
গাছ বিক্রি থেকে বছরে তার আয় ১০ লাখ টাকা। ব্যাংকে তার ৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আছে। আর ব্যাংকে প্রধানমন্ত্রীর স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রয়েছে ৫ কোটি টাকার কিছু বেশি। দান সূত্রে পাওয়া তার একটি গাড়ি রয়েছে। তার কাছে থাকা স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথরনির্মিত অলঙ্কারাদির মূল্য ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আসবাবপত্র রয়েছে ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার। হলফনামা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ।
নিজের চেয়ে স্ত্রীর সম্পদ বেশি টুকুর
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর আইন পেশা থেকে বার্ষিক আয়ের উল্লেখ নেই এবারের হলফনামায়। ২০০৮ সালে এই পেশা থেকে তার আয় ছিল ২ লাখ ৫ হাজার টাকা। দানসূত্রে তিনি ২৫ লাখ টাকার ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। নিজের ও স্ত্রীর নামে পোস্টাল ও সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪২ টাকা। পূর্বে এ ধরনের কোন বিনিয়োগ তার ছিল না। পূর্বে তারা ব্যাংকের কাছে কোন প্রকার দায় না থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে তার দায় রয়েছে ৬৫ লাখ ৬৭ হাজার ৪০৯ টাকা। 
মোস্তফা কামালের বার্ষিক 
আয় বেড়েছে ৫ গুণ
কুমিল্লা-১০ আসনের সংসদ সদস্য আ হ ম মুস্তফা কামাল আইসিসি’র সহ-সভাপতি হিসেবে বাৎসরিক সম্মানী পেয়েছেন ২৯ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামা অনুসারে তার বাৎসরিক আয় ছিল ৫৩ লাখ ৭৯ হাজার ৫৯০ টাকা। ২০১৩ সালে এসে তার বাৎসরিক আয় দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬৪ টাকা। 
ইলিয়াস মোল্লার আয় বেড়েছে ১০ গুণ
ঢাকার সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ৫ বছর আগে কৃষি থেকে ২১ লাখ টাকা আয় করলেও এখন কৃষি থেকে তার কোন আয় নেই। ব্যবসা থেকে তার আয় ছিল ৩০ লাখ টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৫ কোটি টাকা। বাসা ও অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে কোন আয় না হলেও বর্তমানে ২৮ লাখ টাকার বেশি আয় করেন। বর্তমানে এই এমপি’র মোট বার্ষিক আয় ৫ কোটি ৪২ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৬ টাকা। 
আবদুল মান্নান খানের আয় বেড়েছে ১০৭ গুণ
আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী আবদুল মান্নান এবং তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ গত ৫ বছরে বেড়েছে ১০৭ গুণ। নির্বাচন কমিশনে দায়ের করা হলফনামা অনুযায়ী, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে এ মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ১০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। কিন্তু সম্প্রতি পেশ করা ২০১৩-১৪ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে অবিশ্বাস্যভাবে সে অর্থের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৩ লাখ টাকায়। কিন্তু, হলফনামায় আবদুল মান্নান তার সম্পদের উৎসের কথা বিশদ ও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি।
নূর-এ-আলম চৌধুরীর 
সম্পদ বেড়েছে ৬৭ গুণ
আওয়ামী লীগের আরেক আইনপ্রণেতা মহাজোটের শাসনামলে নূর-এ-আলম চৌধুরী লিটন ও তার স্ত্রী গত ৫ বছরে সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৬৭ গুণ বাড়িয়েছেন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি যে হলফনামা পেশ করেছিলেন, তাতে তাদের স্থাবর ও অস্থাবর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৬২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। কিন্তু, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নির্বাচন কমিশনে পেশ করা আয়কর বিবরণীর তথ্যানুযায়ী, গত ৫ বছরে এ দম্পতির যৌথ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ টাকায়। 
হাছান মাহমুদের সম্পদ বেড়েছে অস্বাভাবিক
পরিবেশ মন্ত্রী হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরান ফাতেমা ৫ বছর আগে সাধারণ একজন গৃহিণী ছিলেন। সে সময় তার সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু, বেড়ে পৌঁছেছে ১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকায়। হাছান মাহমুদের সর্বশেষ পেশ করা আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, ২০০৮ সালে তিনি ৩৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকার মালিক ছিলেন, যা ৪ গুণ বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭২ লাখ টাকায়। তিনি আরও দাবি করেছেন, স্ত্রী ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে তিনি ধার হিসেবে ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। অর্থাৎ, এ দম্পতির মোট স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ এখন ১৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে দুই জনের মিলিত সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৮ লাখ ১৭ হাজার টাকা, যা গত ৫ বছরে ৪০ গুণ বেড়েছে। 
বাবু’র সম্পদ বেড়েছে ২৪ গুণ
আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও তার স্ত্রী গত ৫ বছরে তাদের সম্পদের পরিমাণ ২৪ দশমিক ৭৮ গুণ বৃদ্ধি করেছেন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি যে হলফনামা পেশ করেছিলেন, তাদের স্থাবর ও অস্থাবর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। কিন্তু, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নির্বাচন কমিশনে পেশ করা আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, গত ৫ বছরে এ দম্পতির যৌথ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায়। 
নানকের চেয়ে স্ত্রীর সম্পদ বেশি
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও তার স্ত্রী গত ৫ বছরে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় করেছেন। যৌথভাবে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ হচ্ছে ৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাদের সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে নানকের স্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ ৫ কোটি ৭ লাখ টাকা, যা ৫ বছর আগে ছিল ৫২ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাদের বার্ষিক আয় ছিল ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। কিন্তু, নির্বাচিত হওয়ার পর তা দাঁড়ায় ৪৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকায়। অর্থাৎ, এ দম্পতি যৌথভাবে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ৮ গুণ বৃদ্ধি করেছেন। 
আবদুস শহীদের সম্পদ বেড়েছে ৩ গুণ
আওয়ামী লীগের আইনপ্রণেতা ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবদুস শহীদ ও তার স্ত্রী গত ৫ বছরে ৩ দশমিক ০২ গুণ সম্পদ বাড়িয়েছেন। মহাজোট ক্ষমতায় আসার আগে এ দম্পতির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। আর এখন তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। 
ব্যাংকে টাকা নেই সুরঞ্জিতের
সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নিজের নামে কোন ব্যাংকে টাকা জমা নেই। তবে স্ত্রীর নামে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯০৬ টাকা জমা আছে। তিনি বছরে কৃষিখাত থেকে ১ লাখ ১৮ হাজার, বাড়ি ভাড়া থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার ৯১৮ টাকা আয় করেন। শেয়ারবাজার থেকেও তার আয় আছে। তবে তা মাত্র ২৪ হাজার ১৯৯ টাকা।
ওবায়দুল কাদেরের নগদ 
অর্থ ৫৫ হাজার
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নগদ টাকার পরিমাণ মাত্র ৫৫ হাজার টাকা। প্রতি বছর ‘পেশা’ থেকে তিনি ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৭০০ টাকা আয় করেন। সাংবাদিকতা, বর্তমানে এমপি ও মন্ত্রী হিসেবে বেতন-ভাতা এবং বই ও পত্রপত্রিকায় লিখে তিনি এ টাকা পান বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া, তার নিজের নামে উত্তরায় ৫ কাঠা জমিসহ ২৫ তোলা স্বর্ণ আছে। হলফনামায় ৭৫ হাজার টাকা সমপরিমাণের আসবাবপত্রের কথাও উল্লেখ করেছেন যোগাযোগমন্ত্রী। 
টকশো থেকে ইনু’র আয় লাখ টাকা
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু কুষ্টিয়া-৩ সংসদীয় আসনের একমাত্র বৈধপ্রার্থী। টিভি টকশো থেকে প্রাপ্ত আয়ের তথ্য হলফনামার বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন তিনি। বছরে এ বাবদ তিনি আয় করেন ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তার বাৎসরিক আয় প্রায় ৮ লাখ টাকা। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং)। নগদ টাকার পরিমাণ ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রায়।
http://mzamin.com/details.php?mzamin=Mzk0Nw%3D%3D&s=Ng%3D%3D#.UrYYs9vJjuo.facebook
Viewing all 358 articles
Browse latest View live