Quantcast
Channel: Truth Revealer
Viewing all articles
Browse latest Browse all 358

সাহারার আসনে শেষ বিকেলে ‘ভোট’ উৎসব

$
0
0
শামসুজ্জামান নাঈম
আরটিএনএন
ঢাকা: দিনভর অপেক্ষা। নেই ভোটার। বসে বসে খোশগল্পে বিভোর। একটি ভোটের পর আরেকটির জন্য অপেক্ষা। তীর্থের কাকের মত। এভাবে চলেছে বিকেল ৩টা।

হঠাৎ বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বাইরে লাইনে কেউ না থাকলেও বুথ ঘিরে ভীড়। একজনের হাতে একাধিক ব্যালট। প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা যেন কিছুই দেখছেন না।

সারা দিনে যেখানে ২/৩ শতাংশও ভোট পড়েনি। নিমিষে তা বেড়ে কয়েকশ’ গুণ। ঘটনাটি ঘটেছে দেশের প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের ঢাকা-১৮ আসনে।


বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অন্তত তিনটি কেন্দ্র ঘুরে এই প্রতিবেদক যা দেখেছেন, তা বিস্ময় জাগানিয়া। শিউরে ওঠার মত। কেন্দ্রের বাইরে ক্ষমতাসীন নেতারা চেয়ার পেতে বসে গল্পে মেতে উঠেছেন। ভেতরে কাজ সারছেন তাদের অনুসারিরা। লড়াই একটাই ভোট সংখ্যা কতটা বাড়ানো যায়।

নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘যা দেখলেন আমাদের মত আপনিও এখানেই হজম করে মায়ের কোলে ফিরে যান। শব্দ কইরেন না। আমাদেরও সমস্যা হবে।’

এই আসনের আফতাব উদ্দিন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র। এর রিটার্নিং অফিসার একেএম কাশেম। তিনি বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৩৩৩ জন। বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।

বিকেল ৩টার পরে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে একটি বুথ ঘিরে পোলিং এজেন্ট ছাড়াও ৭/৮ জনের ভিড়। এক একজনের হাতে ৪/৫টি ব্যালট। কে কার আগে সেগুলো বক্সে ফেলবেন তা নিয়ে হৈ হুল্লোড়। জানতে চাওয়া মাত্র চোখ বাকা করে নির্দেশ বাইরে যারা বসে আছেন, তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেন। আমরা শুধু হুকুমের গোলাম।

একই আসনের মঈনার টেক উচ্চ বিদ্যালয়। এখানে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে চার্জে আছেন আবুল খায়ের। তিনি জানান, ২টার আগে পর্যন্ত এখানে ৭৮ জন ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

এরপর এই ভোট মহূর্তে হয়েছে ২৭৮টি। কীভাবে হয়েছে তার জবাব তার কাছে নেই। তবে এই ভোটের মধ্যে সত্যিকারের ভোট ৩৫/৪০ টি হবে বলে অন্যরা জানান।

রাজাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের চার্জে আছেন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার কবির হোসেন। তিনি কোনো বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখানে মোট ভোটার ২৪৪৩। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কাস্ট হয়েছে ২৭ শতাংশ। তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব ভোটের মধ্যে ৭৭/৭৮টি সঠিক ভোটার এসে দিতে পেরেছেন।

এই আসনের বেশিরভাগ কেন্দ্রেই শেষ বিকেলে জাল ভোটের মহোৎসব দেখা গেছে। সেগুলো হয়েছে নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সামনেই। সবগুলো বুথে একাধিক ব্যক্তি জড়ো হয়ে ভোট দিয়েছেন। তাদের অমোচনীয় কালি কিংবা পরিচয়পত্র কোনো কিছুর দরকার পড়েনি। অনেকেই এক বুথে ভোট দিয়ে আরেক বুথে গেছেন ভোট দিতে। দেখেও কেউ দেখার নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এই আসনে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতির হার খুবই কম। এক নামের মহিলা অন্য নামে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্রে উপস্থিত মহিলা লীগের নেত্রীদের হুমকির মুখে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না প্রিজাইডিং অফিসাররা।

স্বপ্না রানী নামে এক মহিলা দুটি আইডি কার্ড নিয়ে এসেছেন। একটি নিজের, অপরটি রহিমা খাতুনের। মহিলা লীগের নেত্রী তাকে সবার সামনেই বলেছেন, তুমিই স্বপ্না, তুমিই রহিমা।

Viewing all articles
Browse latest Browse all 358

Trending Articles