Quantcast
Channel: Truth Revealer
Viewing all articles
Browse latest Browse all 358

আওয়ামীলীগ ও মহাজোট নেতাদের হলফনামায় দেওয়া অস্বাভাবিক সম্পদের খতিয়ান (সংকলিত )

$
0
0
১) শেখ হাসিনা : সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি টাকার 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পদ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে দুই কোটি দুই লাখ ৪৩ হাজার ১৩৫ টাকা। নির্বাচন কমিশনে শেখ হাসিনার দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া ২০০৮-০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণী অনুযায়ী শেখ হাসিনার নিট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৯০৪ টাকার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে দেখা যায়, তাঁর নিট সম্পদ পাঁচ কোটি ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯ টাকার।হলফনামার তথ্য অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নামে ছয় একর কৃষিজমি রয়েছে, যার আনুমানিক দাম ছয় লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এখান থেকে তাঁর বছরে আয় হয় ৭৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া মত্স্য খামার থেকে তাঁর আয় বছরে চার লাখ ৫০ হাজার টাকা। গাছ বিক্রি থেকে বছরে তাঁর আয় ১০ লাখ টাকা। ব্যাংকে তাঁর নগদ টাকার পরিমাণ চার লাখ ৯৮ হাজার। আর ব্যাংকে প্রধানমন্ত্রীর স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রয়েছে পাঁচ কোটি টাকার কিছু বেশি।
প্রধানমন্ত্রীর একটি গাড়ি রয়েছে যেটি দানে পাওয়া। তাঁর কাছে থাকা স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথরনির্মিত অলংকারাদির মূল্য ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আসবাবপত্র রয়েছে সাত লাখ ৪০ হাজার টাকার।  
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/102178/%E0


২) আব্দুল মান্নান খান (ঢাকা-১)সম্পত্তি বেড়েছে ১০৭ গুন 
আব্দুল মান্নান খান ছিলেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী। একসময়ের বাম রাজনীতি করা আব্দুল মান্নান খান পাঁচ বছরেই অস্বাভাবিক অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনকে তিনি যে হলফনামা দিয়েছিলেন, তাতে দেখা যায়, নিতান্তই সাধারণ জীবন যাপন করতেন তিনি। কিন্তু পাঁচ বছরেই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে তাঁর।২০০৮ সালে এই আয় ছিল ২৬ লাখ ২৫ হাজার, নির্ভরশীলদের কোনো আয়ই ছিল না। পাঁচ বছর পর তিনি ও তাঁর স্ত্রী বা অন্য নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।আয়ের তুলনায় আব্দুল মান্নান খানের পরিবারের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে বহুগুণ। পাঁচ বছর আগে তাঁর সম্পদ ছিল প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকার। আর এখন সেই সম্পদ হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকার। পাঁচ বছরে ১০৭ গুণ বেশি সম্পদ বাড়ার এটি একটি নতুন রেকর্ড।

আব্দুল মান্নান খানের আয়ের বড় উৎস হচ্ছে মৎস্য ও প্রবাসী-আয়। এখান থেকে তাঁর আয় এক কোটি ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। একই খাতে তিনি নির্ভরশীলদের আয় দেখিয়েছেন এক কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এই আয়ের কোনো বিস্তারিত বিবরণ তিনি কোথাও দেননি।মান্নান খানের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নিজের ও স্ত্রীর কাছে নগদ ৫৫ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত হিসেবে নিজের নামে ৪৩ লাখ ও স্ত্রীর নামে সাড়ে ছয় লাখ টাকা এবং ৪৪ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি।সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া পাঁচ একর কৃষিজমি। এ ছাড়া নিজ নামে ৩১ লাখ ৭৪ হাজার এবং স্ত্রীর নামে এক কোটি ৬৪ লাখ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। তাঁর আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের মূল্য এক কোটি ৮১ লাখ টাকা। অ্যাপার্টমেন্টের দাম এক কোটি ৮১ লাখ টাকা। মাছের খামার পাঁচটি থাকলেও তার মূল্যমান উল্লেখ করেননি। 


৩) মির্জা আজম (জামালপুর-৩): আওয়ামী লীগের এই সাংসদের নামে বিভিন্ন সময়ে মোট নয়টি মামলা থাকলেও সব কটি মামলা থেকে খালাস অথবা অব্যাহতি পেয়েছেন। তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম মির্জা রাইস মিল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ট্রেডিং ও মির্জা পোলট্রি অ্যান্ড ফিশ ফিড ট্রেডার্স।মির্জা আজমের বার্ষিক আয় কৃষিতে ৬৬ হাজার, মাছ থেকে ছয় লাখ ৩৭ হাজার, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে দুই লাখ ৯৫ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর আয় ছিল চার লাখ ৪৮ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে মির্জা আজম ও তাঁর স্ত্রীর কাছে নগদ ১৮ লাখ টাকা করে জমা আছে। ব্যাংকে আছে ১১ লাখ টাকা। পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। স্থায়ী আমানত হিসাবে রয়েছে ৮৪ লাখ টাকা। তাঁদের গাড়ির মূল্য ৮৩ লাখ টাকা। অন্যান্য সম্পদের পরিমাণ ২৩ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮০ লাখ টাকার মতো। তবে পুঁজিবাজারে তাঁর কোনো বিনিয়োগ ছিল না।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমির মূল্য ২০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে চার একর জমির মূল্য নয় লাখ ৯৫ হাজার টাকা, অকৃষিজমির মূল্য দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকা, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের মূল্য এক কোটি ২১ লাখ এবং অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য তিন কোটি ৭১ লাখ টাকা। ঋণের পরিমাণ ১১ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ছিল ২০ লাখ টাকার মতো।সব মিলিয়ে ২০০৮ সালে মির্জা আজম ও তাঁর স্ত্রীর মোট সম্পদ ছিল এক কোটি ৯১ লাখ টাকার। আর এখন সেই সম্পদ বহুগুণ বেড়ে হয়েছে ১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার। 


৪) নুর-ই-আলম চৌধুরী (মাদারীপুর-১):পাঁচ বছরে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় নূর-ই-আলম চৌধুরী। তাঁর স্ত্রীও তাঁরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সম্পদশালী হয়েছেন। 
বর্তমানে বার্ষিক আয় ১০ কোটি টাকার মতো। অথচ ২০০৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল মাত্র চার লাখ ৪৮ হাজার টাকা। আবার ২০০৮ সালে দেওয়া হলফনামায় তাঁর স্ত্রীর কোনো আয় ছিল না। আর এখন তাঁর স্ত্রীর আয় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। বর্তমানে তাঁর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ২২ কোটি টাকার মতো। একই খাতে ২০০৮ সালে তাঁর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ২৭ লাখ টাকার মতো। বর্তমানে তাঁর স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য এক কোটি ৬০ লাখ টাকার মতো। ২০০৮ সালে এই খাতে তাঁর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ১০ লাখ টাকার মতো। 


৫) জাহাঙ্গীর কবির নানক (ঢাকা-১৩):সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের নামে বিভিন্ন সময়ে ১৪টি মামলা ছিল। বর্তমান সরকারের মেয়াদে তিনি সব মামলা থেকে অব্যাহতি অথবা খালাস পেয়েছেন। মন্ত্রী হওয়ার পর পাঁচ বছরে তিনিও যথেষ্ট সমৃদ্ধিশালী হয়েছেন। তবে তাঁকেও ছাড়িয়ে গেছেন তাঁর স্ত্রী।পাঁচ বছর আগেও এই দম্পতির সম্পদ ছিল এক কোটি টাকারও কম। এখন সেই সম্পত্তির পরিমাণ হয়েছে সোয়া আট কোটি টাকা। এর মধ্যে স্ত্রীর সম্পদ হচ্ছে পাঁচ কোটি টাকা। অথচ এর আগের হলফনামা অনুযায়ী, সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর ছিল মাত্র ৫২ লাখ টাকা।জাহাঙ্গীর কবির নানকের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে নগদ ১১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা এবং সঞ্চয়ী আমানত ২৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। তাঁর যানবাহনের আর্থিক মূল্য ৬৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রীর নামে নগদ ৮১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৭৯ লাখ, পুঁজিবাজারে এক কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল সাত লাখ ৪৩ হাজার টাকা। একই সময়ে তিনি ও তাঁর স্ত্রীর কাছে নগদ ছিল ১১ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ছিল আড়াই লাখ, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ছিল ছয় লাখ টাকা। 
নানকের স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমি দুই একর (মূল্য অজানা)। তাঁদের আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের দাম এক কোটি ৩০ লাখ, স্ত্রীর নামে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অগ্রণী ব্যাংকে তাঁদের দেনার পরিমাণ দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর কোনো বাণিজ্যিক বা আবাসিক ভবনের উল্লেখ ছিল না।  


৬) ফজলে নূর তাপস (ঢাকা-১০):সাংসদ ফজলে নূর তাপসের বার্ষিক আয় দুই কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। অথচ ২০০৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ২২ লাখ টাকা। পেশায় আইনজীবী ফজলে নূরের আয় হয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ টাকা। অন্যান্য আয় এসেছে কৃষি খাত, পুঁজিবাজার ও অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে।
তাপসের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ছয় কোটি দুই লাখ ৭৬ হাজার টাকা, ব্যাংকে ছয় কোটি দুই লাখ ৩৯ হাজার, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ৩২ কোটি ১৪ লাখ এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ তিন কোটি তিন লাখ টাকা। এ ছাড়া রয়েছে ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার। আসবাবের মূল্য ১১ লাখ। তাপসের স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ২৪ লাখ ৭২ হাজার এবং পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে ৭০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর কাছে নগদ ছিল ৮৯ লাখ টাকা। ব্যাংকে ছিল এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ছিল তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা।
তাপসের স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমির পরিমাণ দুই বিঘা (মূল্য উল্লেখ নেই), মতিঝিলে একটি ভবন (মূল্য উল্লেখ নেই), ১০ কাঠা অকৃষিজমির মূল্য দুই কোটি ৪৬ লাখ, অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য এক কোটি চার লাখ এবং চা ও রাবার বাগানের মূল্য ১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। তাঁর স্ত্রীর নামে ধানমন্ডিতে একটি প্লটের মূল্য এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা, রাবার ও চা-বাগানের মূল্য এক কোটি দুই লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাপস বা তাঁর স্ত্রী কোনো অ্যাপার্টমেন্ট এবং চা বা রাবার বাগানের মালিক ছিলেন না। 


৭) হাছান মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৭):পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদের তুলনায় বেশি সম্পদশালী হয়েছেন তাঁর স্ত্রী। হাছান মাহমুদের বার্ষিক আয় ১৮ লাখ টাকার বেশি। আর স্ত্রীর আয় প্রায় দুই কোটি টাকা। ২০০৮ সালে তাঁদের বার্ষিক আয় ছিল ১৯ লাখ টাকার কিছু বেশি।হাছান মাহমুদের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ছয় লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা আট লাখ, নয় লাখ টাকার শেয়ার, ৬৬ লাখ টাকার একটি গাড়ি ইত্যাদি। তাঁর স্ত্রীর কাছে রয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার। ২০০৮ সালে তাঁর স্ত্রীর কাছে নগদ ও ব্যাংকে জমা মিলিয়ে মোট ৬০ হাজার টাকা ছিল, কোনো স্থাবর সম্পত্তি ছিল না। বর্তমানে তাঁর স্থাবর সম্পত্তির দাম চার কোটি টাকার মতো। 


৮) ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ (ঢাকা-১৬): সরকারদলীয় সাংসদ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ পাঁচ বছর আগে কৃষি থেকে ২১ লাখ টাকা আয় করলেও এখন কৃষি থেকে তাঁর কোনো আয় নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর আয় ছিল ৩০ লাখ টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। এ টাকা তিনি মৎস্য প্রকল্প থেকে আয় করেছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। আগে বাড়িভাড়া থেকে কোনো আয় না হলেও বর্তমানে ২৮ লাখ টাকার বেশি আয় করেন। বর্তমানে এই সাংসদের মোট বার্ষিক আয় পাঁচ কোটি ৪২ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৬ টাকা।
পাঁচ বছর আগে ইলিয়াস মোল্লাহ্র অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল এক কোটি পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। পাঁচ বছরে তা বেড়ে হয়েছে সাত কোটি ৮৮ লাখ ৭১ হাজার ৯৩৩ টাকা। আগে কোনো গাড়ি না থাকলেও এখন তিনি দুটি গাড়ির মালিক। হলফনামায় গাড়ি দুটির নিবন্ধন নম্বর দেওয়া হলেও মূল্য লেখা হয়নি। এর আগের হলফনামায় স্ত্রী বা নির্ভরশীলের নামে ৭৫ লাখ নগদ টাকা দেখানো হলেও এবারের হলফনামায় স্ত্রীর নামে কোনো নগদ অর্থ দেখানো হয়নি।


৯) নজরুল ইসলাম (নারায়ণগঞ্জ-২):নির্বাচনী হলফনামা অনুসারে তাঁর বার্ষিক আয় ৯৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে মৎস্য চাষ থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৪৩ লাখ ২০ হাজার এবং কৃষি খাত থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ছিল বার্ষিক আয় পাঁচ লাখ ৩২ হাজার টাকা। এর মধ্যে স্ত্রীর নামে রয়েছে এক লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখানো হয়েছে এক কোটি ৫৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ছিল ১৭ লাখ টাকা। আর স্থাবর সম্পত্তি তিন কোটি ৮২ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ জমি, যার মূল্য দেখানো ছিল চার লাখ ৬০ হাজার টাকা।



১০) দীপংকর তালুকদার (রাঙামাটি):পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের বার্ষিক আয় ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। আয়ের উৎস ব্যবসা ও বাড়িভাড়া। ২০০৮ সালে এই আয় ছিল সাত লাখ টাকা।
প্রতিমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য দুই কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে নগদ অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে নগদ ছয় লাখ ৭৩ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা এবং মোটরযানের দাম ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল মাত্র সাত লাখ ৭৯ হাজার টাকা।দীপংকর তালুকদারের স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য এক কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এর মধ্যে আছে পূর্বাচল নতুন শহরে ১০ কাঠা জমি (৩১ লাখ ৪০ হাজার ) এবং রাঙামাটির চম্পকনগরের পাঁচতলা বাড়ি (৮৯ লাখ ৩২ হাজার)। ২০০৮ সালে স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে চম্পকনগরের বাড়িটি। বর্তমানে তাঁর স্ত্রীর সম্পদের মূল্য ৬০ লাখ টাকার বেশি। অথচ ২০০৮ সালে তাঁর স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৪৯ হাজার টাকা ও ২৫ ভরি স্বর্ণ (দুই লাখ ৫০ হাজার)।

সোর্স : http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/103741/%E0%A6%AB%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%87_%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%81%E0%A6%AA%E0%A7%87_%E0%A6%89%E0%A6%A0%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A7%87_%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%A6




১১) আবদুর রহমান বদি : বদির আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ
 স্ত্রী-ভাই-বোন ও নিজের কর্মচারীর কাছ থেকে আট লাখ টাকা ধার করে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহ করেছিলেন কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাংসদ আবদুর রহমান বদি। জীবনে প্রথম সাংসদ হয়ে পাঁচ বছরে তাঁর আয় বেড়ে গেছে ৩৫১ গুণ। আর নিট সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুণের বেশি।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত এই সাংসদের জমা দেওয়া হলফনামা ও আয়কর বিবরণী পর্যালোচনা করে তাঁর আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, হলফনামায় সাংসদ বদি কেবল আয়কর বিবরণীতে প্রদর্শিত অর্থ ও সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন। এর বাইরে অপ্রদর্শিত অনেক অর্থ-সম্পদ রয়েছে। হলফনামা অনুযায়ী, সাংসদ বদির এখন বার্ষিক আয় সাত কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। আর বার্ষিক ব্যয় দুই কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ টাকা। এর আগে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় বলেছেন, তখন তাঁর বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ১০ হাজার ৪৮০ টাকা। আর ব্যয় ছিল দুই লাখ ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা। তখন (২০০৮) বিভিন্ন ব্যাংকে আবদুর রহমানের মোট জমা ও সঞ্চয়ী আমানত ছিল ৯১ হাজার ৯৮ টাকা। পাঁচ বছরের মাথায় এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট কোটি পাঁচ লাখ ১০ হাজার ২৩৭ টাকা। তাঁর হাতে ২০০৮ সালের নভেম্বরে নগদ টাকা ছিল দুই লাখ সাত হাজার ৪৮ টাকা। আর এখন ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া এখন স্ত্রীর কাছে নগদ টাকা আছে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ২৬৫ টাকা।
২০০৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, ওই নির্বাচনের ব্যয় মেটাতে বদি তাঁর স্ত্রী শাহীন আকতারের কাছ থেকে চার লাখ টাকা এবং বোন নাজমা আকতার, ভাই আমিনুর রহমান, আবু তাহের ও নিজের কর্মচারী মং উইন মিনথের কাছ থেকে এক লাখ টাকা করে নিয়েছিলেন। তখন তিনি দোকান ও বাড়ি ভাড়া থেকে বার্ষিক আয় দেখান এক লাখ ৭৬ হাজার ৮৮০ টাকা। ব্যবসা থেকে কোনো আয় ছিল না। আর, এবারের (২০১৩) হলফনামায় বলেছেন, তিনি এখন বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে বার্ষিক আয় করছেন দুই কোটি আট লাখ ১৩ হাজার ৩২ টাকা। আর ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় পাঁচ কোটি ৩২ লাখ ৩১ হাজার ১১৬ টাকা। পাঁচ বছর আগে তাঁর দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা দামের একটি অকেজো ল্যান্ড রোভার গাড়ি ছিল। এখন ওই গাড়ি ছাড়াও তাঁর ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার একটি জিপ গাড়ি রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন। 
গত ২১ নভেম্বর কক্সবাজার কর সার্কেলে দাখিল করা আয়কর বিবরণীতে বদি তাঁর মোট আয় দেখিয়েছেন সাত কোটি ৩৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮০৮ টাকা। আর নিট সম্পদের পরিমাণ বলা হয়েছে নয় কোটি ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৩ টাকার। পাঁচ বছর আগে ২০০৮ সালের আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, তখন তাঁর বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ১০ হাজার ৮৮০ টাকা। আর নিট সম্পদ ছিল ৪৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৩ টাকার। 
আওয়ামী লীগের স্থানীয় একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় বদির কাছে নগদ টাকা ছিল না। নির্বাচন করার জন্য তখন তিনি ১০ লাখ টাকা চেয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছিলেন। সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি টেকনাফ স্থলবন্দরের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। নিজের চার ভাইসহ নিকটাত্মীয়দের কাজে লাগিয়ে বৈধ-অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। এ ছাড়া টেকনাফ সীমান্তে তৎপর মাদকদ্রব্য ইয়াবা চোরাচালান চক্রের সঙ্গে সাংসদ ও তাঁর নিকটাত্মীয়দের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়টি পাঁচ বছর ধরেই গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও মাদক চোরাচালানের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাংসদ বদি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম এসেছে। গত ১০ ডিসেম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দেড় লাখ ইয়াবা বড়িসহ কয়েকজন চোরাকারবারিকে আটক করে। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সাংসদ বদির ভাই আবদুস শুক্কুরকে আসামি করে থানায় মামলা করে বিজিবি। 




১২) আফম রুহুল হক :সাতক্ষীরা- ৩ ..রুহুল হকের স্ত্রীর ব্যাংক ব্যালেন্স বেড়েছে ১৬৫ গুণ...... সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স ৫ বছরে বেড়েছে ১০ গুণ। ব্যাংক ব্যালেন্সের অধিকাংশ তার স্ত্রী ইলা হকের নামে। নির্বাচন কমিশনে জমাকৃত সম্পদের বিবরণী সংক্রান্ত হলফনামা থেকে এ তথ্য বেরিয়েছে। ২০০৮ ও ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর প্রদত্ত দুটি হলফনামা যাচাই করার সময় সম্পদ বৃদ্ধির এ চিত্র পাওয়া গেছে।হলফনামা দুটি বলছে, পাঁচ বছর আগে নির্বাচনী মাঠে নামার সময় রুহুল হক এবং তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকা ছিল মাত্র ৯২ লাখ ৩৬ হাজার ১০৮ টাকা। এখন তাদের ব্যাংক ব্যালেন্সের পরিমাণ ১০ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৩ টাকা।
২০০৮ সালে স্ত্রী ইলা হকের নামে ব্যাংক ব্যালেন্স ছিল মাত্র ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩০ টাকা। এখন ৭ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা। এক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রায় ১৬৫ গুণ। অন্যদিকে রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স ২০০৮ সালে ছিল প্রায় ৮৮ লাখ টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। 

নির্বাচন কমিশনে এবার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হক যে হলফনামা জমা দিয়েছেন তাতে দেখা যায়, সামগ্রিকভাবে ২০০৮ সালের তুলনায় তার অস্থাবর সম্পদ ৪ গুণ বেড়েছে। ২০০৮ সালে তিনি এবং তার স্ত্রীর মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি টাকার কিছু বেশি। ২০১৩ সালে সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ১০ কোটি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসাবে রাখা আছে। এককভাবে তার স্ত্রী ইলা হকের সম্পদের পরিমাণ বেড়ে গেছে ৮ গুণ। আগে তার নামে অস্থাবর সম্পত্তি ছিল মোট ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের। এখন তা ৮ কোটি ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে।
পাঁচ বছরে সম্পদ ফুলে-ফেঁপে বেড়ে যাওয়া সম্পর্কে বক্তব্য জানতে ডা. রুহুল হকের ব্যবহৃত মুঠোফোনে গতকাল বিকালে কয়েক দফা চেষ্টা করা হয়। কেউ ফোন রিসিভ করেননি..রুহুল হকের নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এফডিআরসহ অন্যান্য স্থায়ী বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আগে ছিল ১ কোটি ৩৩ লাখের কিছু বেশি। এখন তা ২ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে।পেশাগত জীবনে অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হক স্বনামধন্য অর্থোপেডিক সার্জন। ২০০৮ সালে পেশা হিসেবে লেখা হয়েছিল ‘ডাক্তার’.. এবারের হলফনামায় পেশার স্থানে কিছুই লেখা হয়নি। হলফনামায় ৬টি উৎস থেকে আয় দেখানো হয়েছে। কৃষি খাত থেকে বার্ষিক আয় দেখানো হয় ৫৫ হাজার টাকা। বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ আয় হচ্ছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে আয় হয় বছরে ২২ লাখ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে আয় ৩৪ লাখ ২০ হাজার ৭৪১ টাকা। পেশা থেকে গত পাঁচ বছরে আয়ের স্থলে লেখা হয়েছে ‘প্রযোজ্য নহে’.. সংসদ সদস্য হিসেবে চাকরি বাবদ আয় দেখানো হয়েছে ৬ লাখ ৩৭ হাজার ২০০ টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তি হিসাবে ২০০৮ সালের হলফনামায় যতটুকু উল্লেখ আছে এবার অবশ্য সেখানে খুব বেশি হেরফের দেখা যায়নি। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হকের এবারের হলফনামায় দায় হিসেবে স্ত্রী ইলা হকের কাছে ১ কোটি টাকা দায় দেখানো হয়েছে। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ডা. রুহুল হকের প্রদত্ত তথ্য বলছে, তার হাতে নগদ টাকা আছে ২৯ হাজার ৪৩২। ৩০ জুন ২০১৩ পর্যন্ত তার নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৩ হাজার ৫২৩ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ারের পরিমাণ ২ কোটি ৮০ লাখ ৩৩ হাজার ৫০৮ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ২ কোটি ৩০ লাখ ৬৫ হাজার ৯২২ টাকা। তার কাছে থাকা গাড়ির মূল্য বাবদ দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। স্বর্ণালংকার আছে ৮০ হাজার টাকা মূল্যের। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মূল্য ৬০ হাজার টাকা এবং আসবাবপত্রের মূল্য এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে নগদ টাকা, পোস্টাল সেভিংসসহ স্থায়ী বিনিয়োগ এবং স্বর্ণালংকার বাবদ প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা আছে। - See more at: http://www.jugantor.com/first-page/2013/12/24/52541#sthash.28Ethy5M.dpuf 


১৩) কালো বিড়াল খ্যাত  সুরুঞ্জিত সেনগুপ্ত : সুনামগঞ্জে সবচেয়ে ধনী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত : সুনামগঞ্জ-২ আসনে আ'লীগের দলীয় প্রার্থী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের আয়ের উৎস কৃষি খাত, বাড়ি ভাড়া, শেয়ার ও পরিতোষিক ভাতা। কৃষি খাতে তার আয় প্রায় তিনগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। বাড়ি ভাড়া থেকে মাত্র ৫৫ হাজার ৩৭১ টাকা আয় বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার ৯১৮ টাকা। অতীতে মৎস্য খামারের ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক ৬ লাখ ৪৮ হাজার ২০০ টাকা আয় হলেও এবার তার ব্যবসা থেকে কোনো আয় নেই। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে তার আয় কমেছে। এ খাতে ২০০৮ সালে তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫৫ টাকা আয় হলেও এবার কোনো আয়ের উল্লেখ নেই।
অস্থাবর সম্পদ_ নিজের নামে অতীতে ২৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৯৯ টাকা ব্যাংকে থাকলেও এবার ওই ঘরটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ৯৯ হাজারের স্থলে বসেছে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯০৬ টাকা আর নির্ভরশীলদের ২ লাখ ৯২ হাজার ২৪ টাকার স্থলে বসেছে ক্রসচিহ্ন। শেয়ার বাজারে নিজের নামে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা। স্ত্রীর নামে অপরিবর্তিত আছে ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৪০০ টাকার শেয়ার। তবে সঞ্চয়পত্রে নিজের নামে ১১ লাখ ২০ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ২৫ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা। নিজের নামে ৩০ লাখ টাকার গাড়ির স্থলে হয়েছে ৯৫ লাখ ৯২ হাজার ৫৬৮ টাকা।
স্থাবর সম্পত্তিতে তার কৃষি জমির পরিমাণ কমেছে ৪২ একর, অকৃষি জমির ক্ষেত্রে অতীতে দশমিক ৯১ একর লেখা থাকলেও এবার উল্লেখ করেছেন '২টি'র মূল্য ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। দালান বা আবাসিক ভবনের অর্জনকালীন মূল্য ২০০৮ সালে ৫১ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৪ টাকা উল্লেখ করলেও এবার বলেছেন ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা! আগে তার ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি টিনশেড পাকা ঘর থাকলেও এখন সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন ৫৪ লাখ ৫ হাজার ১৮৪ হাজার টাকা। তার ২৮ একরের দুটি চা বাগানের মূল্য ২০০৮ সালে ২০ লাখ ৪৪ হাজার ৬৯ টাকা উল্লেখ থাকলেও এবার তা নেই উল্লেখ করা হয়েছে। 


১৪) সুকুমার রঞ্জন ঘোষ :মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষের পেশা ব্যবসা। তিনি ৬টি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার আয়ের উৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৩৮ লাখ ৩০৬ টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে আয় এক লাখ ২৩ হাজার ৭৩১ টাকা। এই খাতে নির্ভরশীলদের আয় ৩৮ লাখ ৩০৬ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ হাতে নগদ ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৪৯ টাকা। স্ত্রীর কাছে ৩১ লাখ ৩ হাজার ৫৫৬ টাকা। নির্ভরশীলদের রয়েছে ৫৭ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৬ টাকা। ব্যাংকে জমা নিজ নামে ১৪ লাখ ৭১০ টাকা। স্ত্রীর নামে ৯৮ লাখ ৮৭ হাজার ৩১০ টাকা। নির্ভরশীলদের ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৯২ টাকা। তালিকা ছাড়া শেয়ার আছে ৮ হাজার ৪১৫টি, যার মূল্য ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তালিকাভুক্ত শেয়ার আছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭৩টি, যার মূল্য ৩৫ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩০ টাকা। স্ত্রীর নামে শেয়ার আছে ১০ লাখ ৮১ হাজার ৬৩৬ টাকার। সঞ্চয়পত্র নিজ নামে ৭ লাখ ৯৫ হাজার ৬৪৫ টাকা ও স্ত্রীর নামে ২ কোটি ১৮ লাখ ৩২ হাজার ৯৬৯ টাকার। কোম্পানি ও নিজ নামে গাড়ির মূল্য ৭৭ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৯ টাকা। স্ত্রীর নামে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের গাড়ি আছে। স্বর্ণ নিজের ৫ ভরি, স্ত্রীর ১২ ভরি।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমির মূল্য ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৯১৬ টাকা। নির্ভরশীলদের নামে জমি ১৫ লাখ টাকার। অকৃষি জমি নিজ নামে গাজীপুরে ২৭ শতাংশ, নিকুঞ্জে ৩ কাঠা, মালিবাগে আড়াই কাঠা এবং স্ত্রীর নামে গাজীপুরে সাড়ে ৩২ শতাংশ, খিলগাঁওয়ে আড়াই কাঠা, জোয়ারসাহারায় ১০ কাঠা। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দালান একটি, যার মূল্য ৪০ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে বসুন্ধরা শপিংমলে একটি দোকান, যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা এবং ধানমণ্ডিতে ৪৮ লাখ ৪৭ হাজার ২৯ টাকার একটি বাড়ি রয়েছে। নির্ভরশীলদের নামে ধানমণ্ডিতে ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের আরও একটি বাড়ি আছে তার। তবে কোম্পানির যৌথ অংশীদার হিসেবে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ২৭ কোটি ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ টাকার তার দায়দেনা রয়েছে 



১৫) সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর : স্বামী-স্ত্রীর নগদ টাকাই আছে পাঁচ কোটি
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর শেষ সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন। মন্ত্রিত্ব ছাড়াও পেয়েছেন ব্যাংক, বিশ্ববিদ্যালয় ও কনটেইনারবাহী জাহাজের লাইসেন্স। এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তাঁর সম্পদও। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, মহীউদ্দীন খান আলমগীরের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকারও বেশি। গত এক বছরেই নিট সম্পদ বেড়েছে প্রায় এক কোটি ৮৭ লাখ টাকার। আর পাঁচ বছরে তাঁর ও স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে বহু গুণ। পাঁচ বছর আগে যেখানে তাঁর নিজের নগদ টাকা ছিল মাত্র পাঁচ লাখ, সেখানে এবার নিজের ও স্ত্রীর নগদ টাকাই আছে পাঁচ কোটিরও বেশি।মহীউদ্দীন খান আলমগীরের বার্ষিক আয়ের মধ্যে কৃষি খাতে ৬০ হাজার টাকা, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়ায় নিজের আয় তিন লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা, স্ত্রীর নামে আছে ১০ লাখ সাত হাজার ১০০ টাকা। নিজের ব্যবসায় আয় চার লাখ ৬৮ হাজার, বিভিন্ন শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক সুদ এক লাখ ৩০ হাজার ২৯১ টাকা এবং স্থায়ী আমানত থেকে সুদ আয় হয় ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নিজের চাকরি থেকে আয় আট লাখের কিছু বেশি।অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নগদ টাকা আছে তিন কোটি এক লাখ ৬০ হাজার ৬০৯ টাকা। স্ত্রীর নগদ টাকা দুই কোটি দুই লাখ ৩২ হাজার ৬৪৩ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের জমা ৫১ লাখ ১২ হাজার ২৫৯ টাকা। স্ত্রীর ৫১ লাখ ৪০ হাজার ৩৮ টাকা। ফার্মার ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ায় এখানে নিজের নামে শেয়ার আছে আট কোটি ৫০ লাখ টাকার, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যাল লিমিটেডের শেয়ার আছে ২০ লাখ টাকার, বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার আছে ১০ লাখ টাকার, আইসিএবিতে ১০ লাখ টাকা, স্ত্রীকে ঋণ দিয়েছেন ৩৫ লাখ টাকা এবং শেয়ার ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ আছে আরও ২২ লাখ ছয় হাজার ৮৬ টাকা।

স্ত্রীর নামে আছে ফার্মার ব্যাংকে দেড় কোটি টাকার শেয়ার। নিজের নামে সঞ্চয়পত্র এক লাখ ৫০ হাজার টাকার। স্থায়ী আমানত এক কোটি তিন লাখ ২০ হাজার ৪০০ টাকা। স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্র ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা তাঁর হলফনামায় স্থাবর সম্পদসহ কয়েকটি খাতের লেখা অস্পষ্ট। তবে ওই হলফনামার সঙ্গে দেওয়া আয়কর বিবরণীতে তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ দেওয়া হয়েছে ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার ৮১৪ টাকা। এর মধ্যে দায় (ঋণ) আট কোটি ৯৫ লাখ টাকা বাদ দিলে নিট সম্পদ থাকে সাত কোটি ৪৬ লাখ ৪৫ হাজার ৮১৪ টাকা। বিগত অর্থবছরের শেষের তারিখে তাঁর নিট সম্পদ ছিল পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।দায় হিসাবে আট কোটি ৯৫ লাখ টাকা দেখালেও মহীউদ্দীন খান হলফনামায় বলেছেন, এটি তাঁর জামানতবিহীন ঋণ। তবে কার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন, তা হলফনামায় উল্লেখ করেননি।
অথচ পাঁচ বছর আগে, ২০০৮ সালে মহীউদ্দীন খানের বার্ষিক আয় ছিল কৃষি খাতে ৩১ হাজার, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া হিসেবে আয় দুই লাখ ৩৫ হাজার ৪৪০ টাকা এবং ব্যবসায় আয় ছিল দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তখন নিজের নামে নগদ টাকা ছিল পাঁচ লাখ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্ত্রীর নামে জমা ছিল ১১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। দুই লাখ ছয় হাজার টাকার শেয়ার ছিল নিজের নামে এবং স্ত্রীর নামে সাত লাখ টাকার। বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানাতে স্ত্রীর নামে ছিল ৩১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ছিল স্ত্রীর নামে একটি টয়োটা গাড়ি। স্বর্ণসহ অলংকারাদি নিজের দুই লাখ টাকা মূল্যের এবং স্ত্রীর ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল নিজ নামে ১৩ দশমিক ১৮ একর কৃষি জমি, স্ত্রীর নামে ১ দশমিক ১৭ একর জমি। অকৃষি জমি নিজ নামে এক বিঘা। গ্রাম ও শহরে দালান ছিল ১৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা মূল্যের। স্ত্রীর নামে আছে তিনটি ফ্ল্যাট। গতবার তাঁর কোনো দায়দেনা ছিল না। 



১৬) অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক সম্পদ বেড়েছে কয়েক শ’ গুণ

নাটোরের এমপি পলক ও তার স্ত্রী জানেন না তাদের সম্পত্তির মূল্য কত 



আরিফা জেসমিন। কর্মজীবন শুরু করেন নাটোরের সিংড়া সদরের দমদমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিকিা হিসেবে। ২০১১ সালের শুরুতে মনোবিজ্ঞানের প্রভাষক হিসেবে স্থানীয় দমদমা স্কুল অ্যান্ড কলেজে চাকরি নিয়েছেন। ২০০৮ সালে তার সম্পদ বলতে ছিল ১৫ শতক মাঠের জমি, ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা, নগদ ১০ হাজার টাকা, ১০ ভরি সোনা, ২৫ হাজার টাকা দামের একটি রেফ্রিজারেটর ও ১০ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল ফোন। ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় এখন তিনি ভিশন বিল্ডার্স লিমিটেড কোম্পানির ৮০ ভাগ শেয়ারের মালিক। এখন তার সঞ্চয়পত্র আছে ২০ লাখ টাকার, ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের (ঢাকা-মেট্রো-গ-৩৩-০২৪৫) একটি অত্যাধুনিক প্রাইভেট কার। সোনা ১০৩ ভরি ও নগদ রয়েছে ১০ লাখ ও ব্যাংকে তিন লাখ ৮০ হাজার ৮৭৩ টাকা। একটি ডেস্কটপ ও একটি ল্যাপটপ, এসি ও ফ্রিজ। খাট, ড্রেসিং টেবিল, ডাইনিং টেবিল, সোফা, আলমারী ও ওয়্যারড্রবসহ সোনা এবং সব ইলেকট্রনিকস সামগ্রী এই শিকিা উপহার পেয়েছেন বলে তিনি এগুলোর দাম জানেন না। আগে ১৫ শতক জমির মালিক হলেও এখন তার মালিকানায় রয়েছে ৭৬২ শতক জমি। এর মধ্যে সিংড়া পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে ৩০০ শতক অকৃষি জমি উপহার হিসেবে পাওয়ায় এর দামও তিনি জানেন না! 

তার স্বামী বর্তমান সংসদের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক। ২০০৮ সালে পলকের ব্যাংকে ছিল ২০ হাজার টাকা। নগদ ছিল ৩০ হাজার আর সঞ্চয়পত্র ছিল ১৮ হাজার টাকার। তার নিজের কোনো স্বর্ণ ছিল না। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল ৩০ হাজার টাকার একটি কম্পিউটার, ২০ হাজার টাকার একটি মোবাইল আর ৮০ হাজার টাকার আসবাবপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল এক বিঘা কৃষি জমি ও ১৮ শতক ভিটা জমি, দুইটি দোকানঘর আর একটি গুদাম। বার্ষিক আয়-ব্যয় উভয়ই ছিল এক লাখ ১৮ হাজার টাকা। চার খালাতো ভাই, দুলাভাই, চাচা ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে দান ও ঋণ নিয়ে নির্বাচনী খরচ চালানো এমপি পলক পাঁচ বছর পরে বর্তমানে তার বার্ষিক আয় ২৫ লাখ ১১ হাজার ৫২ টাকা বলে তিনি ১০ম সংসদ নির্বাচনে তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। এখন তার ব্যাংকে রয়েছে চার লাখ ৬১ হাজার ৪০৪ টাকা, নগদ দুই লাখ, বন্ড ও সঞ্চয়পত্র আছে ছয় লাখ ৯৯ হাজার টাকার। সাড়ে তিন কোটি টাকা দামের ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো অত্যাধুনিক পাজেরো গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৪২৬৯) এমপি হিসেবে শুল্কমুক্তভাবে কিনেছেন ৪৪ লাখ ৫৪ হাজার ৬২২ টাকায়। এখন তার রয়েছে ৪১ ভরি সোনা, দুইটি ডেস্কটপ, একটি ল্যাপটপ, এসি, ফ্রিজ। জমি কিনেছেন আরো সাত বিঘা ১১ শতক, উপহার পেয়েছেন ৪ শতক, দোকান দু’টি থেকে বেড়ে হয়েছে চারটি, সাথে দোতলা ভবন। স্ত্রীর মতোই তার সোনা, সব ইলেকট্রনিকস সামগ্রী উপহার পাওয়ায় তিনি এগুলোর মূল্য কত জানেন না। তবে শুধু দু’জনের উপহার পাওয়া সোনার বর্তমান বাজার মূল্য ৬১ লাখ টাকা। সব কিছু বাড়লেও এবার তার আসবাবপত্র কমেছে। ২০০৮ সালে ৮০ হাজার টাকার আসবাবপত্র থাকলেও এবার সেটা কমে হয়েছে মাত্র ২০ হাজার টাকা। স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে প্রায় এক কোটি টাকার ১৪৪ ভরি সোনা, পাঁচটি কম্পিউটার, দু’টি এসি, দু’টি ফ্রিজ, তিনটি মোবাইল ও সব আসবাবপত্র উপহার পাওয়ায় এগুলোর মূল্য হলফনামায় লেখা হয়নি। এগুলো বাদেই এবার তিনি অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন এক কোটি ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৮৯৯ টাকার অথচ ২০০৮ সালে আসবাবপত্র, কম্পিউটার মোবাইলসহ তার অস্থাবর সম্পদ ছিল তিন লাখ ৫৪ হাজার টাকার। আগে টেনশনমুক্ত জীবনযাপন করলেও এখন নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন একটি শর্টগান ও একটি পিস্তল। এসব তথ্যই পাওয়া গেছে নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেয়া এমপি পলকের হলফনামা থেকে। 

পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে সিংড়া দমদমা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক হিসেবে চাকরি নিলেও বছরের বেশির ভাগ সময় স্বামীর সাথে থাকেন ঢাকায়। তার পরিবর্তে মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা বেতনে কাস নিয়ে দেন স্থানীয় চলনবিল কলেজের প্রভাষক গোলাম রব্বানী। একজন শিক বাইরে অবস্থান করে অন্যজনকে দিয়ে বছরের পর বছর কাস নেয়াতে পারেন কি না জানতে চাইলে দমদমা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্য সিংড়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম আনু প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেছেন, বর্তমানে প্রভাষক আরিফা জেসমিন ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন।

এ ব্যাপারে দেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলকের আপন বড় ভাই জুবাইর আহমেদ নয়ন বলেছেন, হলফনামায় তার ছোট ভাই যে সম্পদের বিবরণ দিয়েছেন তা বাস্তবের শত ভাগের এক ভাগও নয়। তিনি বলেন, একই পরিবারের মানুষ হয়েও আমি মাত্র কয়েক হাজার টাকার জন্য আমার চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগে পড়–য়া মেধাবী মেয়ে ঋতি মৃত্তিকা নয়নকে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করাতে না পারায় সে মারা গেছে। 

স্ত্রী ছাড়াও মা, চাচা, শ্বশুর, শ্যালক ও তার ফাইভস্টার বাহিনীসহ অনুগত কর্মীদের নামে বেনামে পলক শত শত বিঘা জমি কিনেছেন ও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন। পলকের বড় ভাই জুবাইর আহমেদ নয়ন সম্প্রতি তার ভাইয়ের টেন্ডারবাজি, ৬৫০টি পুকুর দখল, চাকরি বাণিজ্য, কালো টাকা, হত্যা বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, চাঁদাবাজি কমিশন, খাসজমি বরাদ্দ বাণিজ্যসহ অসংখ্য অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং দখলবাজির বিষয়ে নিজের ও নিজের মারা যাওয়া মেয়ে ঋতি মৃত্তিকা নয়নের ছবিসহ ‘খাই খাই রাজনীতি আর কত দিন?’ শিরোনামে নাটোরে ব্যাপকভাবে পোস্টারিংও করেছেন। 




১৭) ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন : ইঞ্জি. মোশাররফের স্ত্রীর নগদ টাকা বেড়েছে ১৩৯ গুণ 
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন তার নগদ টাকার পরিমাণ ৫০ লাখ ৪৬ হাজার। এবার তিনি তা উল্লেখ করেছেন ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার। অর্থাৎ পাঁচ বছরে তার নগদ টাকা কমেছে। তবে তার স্ত্রীর তা বেড়েছে ১৩৯ গুণ। ২০০৮-এ তার স্ত্রীর নগদ টাকা ও ব্যাংকে ছিল ৪ লাখ ৪৮ হাজার। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি এক লাখ ৯৯ হাজারে।
অবশ্য নগদ না বাড়লেও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে অনেক। আগের নির্বাচনের সময় যেখানে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৩০ হাজার ৫০০ টাকার সেখানে এবার তা দেখানো হয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে আওয়ামী লীগের এ প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং। বছরে তার আয় কৃষিখাত থেকে ৩১ হাজার, ফিশিং প্রজেক্ট ব্যবসা থেকে ২৯ লাখ ৯৪ হাজার, শেয়ার সঞ্চয়পত্র ব্যাংক আমানত থেকে ৬ লাখ ৮৯ হাজার, হোটেল পেনিনসুলার পরিচালক ভাতা ১২ লাখ এবং এমপি সম্মানি ও টিভি সম্মানি ১৪ লাখ ১২ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে যেখানে নগদ টাকা রয়েছে ৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা, সেখানে স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬ কোটি ১ লাখ ৯৯ হাজার। ব্যাংকে জমা রয়েছে নিজ নামে ২৯ লাখ ১৬ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ২১ লাখ ৮৩ হাজার। বণ্ড, ঋণপত্র, শেয়ার রয়েছে নিজ নামে ৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ১ কোটি ২৭ লাখ ৮১ হাজার টাকা। নিজ নামে থাকা ২টি গাড়ির মূল্য ৯৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে থাকা ১টি গাড়ির মূল্য ৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। অন্যান্য ব্যবসায় মূলধন আছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে প্রায় ৬০ লাখ টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি এবং স্ত্রীর নামে সাড়ে ১৮ লাখ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। নিজ নামে থাকা বাড়ি ও এপার্টমেন্টের মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। দায় রয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকার। - See more at: http://www.jugantor.com/first-page/2013/12/24/52542#sthash.Na7XijS0.dpuf 


১৮) মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে রতন : সাংসদ মোয়াজ্জেমের বাড়িবিলাস 
সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধরমপাশা) আসনের ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে রতনের ২০০৮ সালের হলফনামায় নিজের কোনো বাড়ির কথা উল্লেখ ছিল না। কিন্তু এবার তাঁর বাড়ি হয়েছে চারটি। সাংসদ হয়ে গত পাঁচ বছরে ঢাকায় একটি, সুনামগঞ্জ জেলা শহরে একটি এবং নিজের নির্বাচনী এলাকায় আরও দুটি বাড়ি করেছেন তিনি। অবশ্য জেলা শহরের বাড়ির কথা হলফনামায় উল্লেখ নেই। মোয়াজ্জেম হোসেনের হলফনামা অনুযায়ী, ঢাকার গুলশানে তাঁর যে দুই হাজার ৬৪৪ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে, সেটির মূল্য দেখানো আছে ৭২ লাখ ৭১ হাজার টাকা। নির্বাচনী এলাকা ধরমপাশার নওধার গ্রামে দোতলা একটি বাড়ি করেছেন, সেটির মূল্য ৩৮ লাখ সাত হাজার ৫৬১ টাকা। একই গ্রামে আরেকটি টিনশেড আধাপাকা ঘরের মূল্য দেখিয়েছেন সাত লাখ টাকা। তবে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মল্লিকপুরে কেনা বাড়ির কথা হলফনামায় নেই। 
গতকাল সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির মূল ফটক লাগানো। ফটকে সাংসদের নামের সঙ্গে ২০০৭ সালের মার্চ মাসে এটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে লেখা আছে। হলফনামার স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে আট শতক জমি ও ফ্যাক্টরির মূল্য ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৭০০ টাকা দেখানো আছে। হলফনামায় মোয়াজ্জেম হোসেন আরও উল্লেখ করেছেন, বর্তমানে তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ চার কোটি ৩৫ লাখ ৪৩ হাজার ২১২ টাকা। ২০০৮ সালে সম্পদ ছিল এক কোটি ৮৯ লাখ ১০ হাজার ৪৪৭ টাকা। এবার তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২০ লাখ ৩০ হাজার ২৬৪ টাকা। ২০০৮ সালে বার্ষিক আয় দেখানো ছিল দুই কোটি ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৮৪৬ টাকা। এবার আয় কমলেও সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০০৮ সালে কৃষি ও অকৃষিজমির পরিমাণ ছিল পাঁচ একর আট শতক, যাঁর মূল্য ছিল ৩৭ লাখ ৬৬ হাজার ৫০৪ টাকা। কোনো বাড়িঘরের উল্লেখ ছিল না তখন। এবার তিনি কৃষি ও অকৃষিজমির পরিমাণ দেখিয়েছেন ৭৪ একর ১০ শতক। যার মূল্য এক কোটি ৪৮ লাখ ৫৭ হাজার ৪১ টাকা। ধরমপাশার নওধার গ্রামে মোয়াজ্জেম হোসেন ২০১০ সালে দোতলা একটি বাড়ি করেছেন। হলফনামায় এই বাড়ির যে মূল্য দেখানো হয়েছে, বাস্তবে মূল্য কয়েক গুণ বেশি হবে। এ বিষয়ে সাংসদ জানিয়েছেন, তিনি এই বাড়ির কাজ শুরু করেছিলেন ২০০৬ সালে। সেই সময়ের মূল্য ধরায় কিছুটা কম মনে হচ্ছে। পরে বাড়িটি সংস্কার করে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে। 
মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০০৮ সালে আমার হাতে প্রায় দুই কোটি টাকা ছিল। এই টাকা দিয়েই সম্পদ করেছি। এর সঙ্গে আয় কমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি আমার ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব দিয়েছি। যৌথ কোম্পানির হিসাব দেখাইনি।’ সুনামগঞ্জ জেলা শহরের বাড়ি প্রসঙ্গে মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আমি হলফনামায় এই বাড়ির কথা উল্লেখ করেছি।’ উল্লেখ নেই জানালে তিনি বলেন, ‘ভালো করে খুঁজে দেখেন, পাবেন।’ 
স্ত্রীর সম্পদ: ২০০৮ সালে সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রীর কোনো আয় ছিল না। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল ৪০ তোলা সোনা এবং ৩৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৪ টাকা মূল্যের এক একর সাত শতক জমি। এবার তাঁর বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে নয় লাখ ২০ হাজার টাকা। তাঁর কাছে ৬০ তোলা সোনা ও নগদ টাকা আছে ১২ লাখ টাকা। এর বাইরে জমিসহ সম্পদ আছে ৪০ লাখ ৩০ হাজার টাকার। 




১৯) পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান : ছিল ২০ একর হয়েছে ২৮৬৫ একর জমি
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী) আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর পাঁচ বছর আগে কৃষিজমি ছিল মাত্র ২০ একর। আর এখন সেই জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে দুই হাজার ৮৬৫ একর। অর্থাৎ এই পাঁচ বছরে তিনি দুই হাজার ৮৪৫ একর জমির মালিক হয়েছেন।২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে মাহবুবুর রহমানের বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ১৫ হাজার টাকা। এবার তাঁর বার্ষিক আয়ের মধ্যে কেবল মৎস্য উৎপাদন ও বিক্রি থেকেই এসেছে দেড় কোটি টাকা। চাকরি থেকে বার্ষিক আয় ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ টাকা। আর তাঁর নির্ভরশীলদের আয় তিন লাখ ৯৫ হাজার টাকা।পাঁচ বছর আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাহবুবুর রহমানের জমা টাকা ছিল ৮৩ হাজার ১১২ টাকা। আর স্ত্রীর নামে বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ছিল পাঁচ লাখ টাকা। গাড়ি ছিল দুটি। এ ছাড়া স্বর্ণ ২০ তোলা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী এক লাখ টাকা ও আসবাবপত্র এক লাখ টাকার।

মাত্র পাঁচ বছরে সব কিছুই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এখন তাঁর নিজের নামে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাই আছে চার কোটি ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮২ টাকা। স্ত্রীর নামে জমা আছে ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫৮ টাকা। বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে স্ত্রীর নামে বিনিয়োগ আছে ১৬ লাখ ১৪ হাজার ৩৪২ টাকা। মাহবুবের ব্যবসায় নিজের পুঁজি ৩৫ লাখ ও স্ত্রীর ৭৬ লাখ ৭১ হাজার।
গেলবার তাঁর কৃষিজমি ছিল ২০ একর। আর অকৃষি জমি (রাজউক থেকে বরাদ্দ) ছিল পাঁচ কাঠা জমি। ১০ শতাংশ জমির ওপর বাড়ির চার ভাগের এক ভাগ ছিল তাঁর। ঋণ ছিল তিন লাখ ২০ হাজার ৩৫২ টাকা।
কিন্তু আলাদিনের চেরাগ দিয়ে পাঁচ বছরেই মাহবুব ২০ একর কৃষি জমি থেকে দুই হাজার ৮৬৫ একর জমির মালিক হয়েছেন তিনি। এবার তাঁর অকৃষি জমির পরিমাণ ৬ কাঠা ১৩ ছটাক। যৌথ মালিকায় ১০ শতাংশ জমির ওপর একটি ও এক একর জমির ওপর আরেকটি বাড়ির চার ভাগের এক ভাগের মালিক তিনি। এবার তাঁর দায় আছে দেড় কোটি টাকা।মাহবুবের নিজের ও স্ত্রীর মিলে স্বর্ণসহ অলংকারাদি আছে দুই লাখ টাকার। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দুজনের দুই লাখ, আসবাবপত্রও একই, দুই লাখ টাকার। হলফনামায় তিনি বলেছেন, জনৈক বিপুল হাওলাদারের কাছ থেকে ধার নিয়েছেন ৫০ লাখ টাকা ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে নিয়েছেন আরও এক কোটি টাকা।



২০) রাজিউদ্দিন আহমেদ : রাজিউদ্দিনের চেয়ে স্ত্রীর সম্পদ বেশি
রাজিউদ্দিন আহমেদ
রাজিউদ্দিন আহমেদ ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী। পরে দেওয়া হয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রীর দায়িত্ব। নরসিংদীর মেয়র লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর ভাই ও সহকারী একান্ত সচিবের নাম আসায় সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে অভিযোগপত্র থেকে ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও মন্ত্রীর ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী (এপিএস) মাসুদুর রহমানের নাম বাদ দিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া বিশেষ কয়েক জনকে দিয়ে দলকে কুক্ষিগত করে রাখার প্রবণতা ও সার্কিট হাউসে সরকারি এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগও রয়েছে। এসব কারণে অনেক দিন এলাকায়ও যাননি তিনি। এরপরই তাঁকে কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী, লোকমানের ছোট ভাই বর্তমান পৌর মেয়র কামরুজ্জামান বলেন, ‘মন্ত্রীর কারণে আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডে বিচার আজও হয়নি। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে হত্যাকারীদের (এজাহারনামীয়) অভিযোগপত্র থেকে বাদ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আপিল করেছি।’ হলফনামা অনুযায়ী, রাজিউদ্দিন আহমেদের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নগদ আছে ৫৭ লাখ ৮৭ হাজার ৯৮৩ টাকা। আর স্ত্রীর নগদ ৪৮ লাখ ৩৩ হাজার ৯৫৩ টাকা। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের জমা আট লাখ ৫০ হাজার আর স্ত্রীর নামে ২০ লাখ। রাজুর ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকার দুটি জিপ গাড়ি আছে। নিজের ও স্ত্রীর স্বর্ণালংকার আছে ৬০ হাজার টাকার। ইলেকট্রনিকসামগ্রী আছে দেড় লাখ টাকার। আসবাবের মধ্যে নিজের আছে এক লাখ ২০ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর ২০ হাজার টাকার। রাজুর একটি শটগান ও একটি রিভলবার আছে। আর স্থাবর সম্পদের মধ্যে যৌথ মালিকানায় নরসিংদীর রায়পুরায় ৩ দশমিক ৫ বিঘা কৃষিজমি আছে।রাজিউদ্দিন আহমেদের স্ত্রীর নামেই একাধিক বাড়ি ও জমি রয়েছে। হলফনামা অনুযায়ী, ধানমন্ডিতে একটি জমির কথা উল্লেখ থাকলেও এর দাম দেখানো হয়েছে ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ টাকা। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে গুলশানে একটি ছয়তলা বাড়ি (এক-তৃতীয়াংশ) ও এলিফ্যান্ট রোডে আরেকটি তিনতলা বাড়ি রয়েছে। গুলশানের বাড়িটির দাম উল্লেখ করা হয়েছে ৫৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। তবে বাস্তবে এসব জমি ও ভবনের দাম অনেক বেশি বলে জানা গেছে। রাজিউদ্দিন আহমেদের নামে বনানীতে যৌথ মালিকানায় ১৪ কাঠার ওপর দ্বিতল বাড়ি আছে বলে হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন। এর কোনো মূল্য হলফনামায় বলা হয়নি 





২১) রণজিত কুমার রায় : শুধু নিজে নন, স্ত্রীকেও ধনী করেছেন রণজিত
১২ বিঘা কৃষিজমি, ঢাকার পূর্বাচলে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট, বাঘারপাড়ার খাজুরা বাজারে দুই হাজার ২০০ বর্গফুটের দোতলা ভবন, নিজের নামে নগদ তিন লাখ ও ব্যাংকে এক লাখ ৪২ হাজার টাকা, সাত লাখ টাকা দামের দুটি গাড়ি, দেড় লাখ টাকার সোনা।স্ত্রীর নামে দুটি ফ্ল্যাট ও ৪৪ লাখ টাকার দালান; ব্যাংকে এক কোটি ১৩ লাখ টাকা ও নগদ তিন লাখ টাকা, ডিপিএস চার লাখ ৮০ হাজার, ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা দামের একটি গাড়ি ও এক লাখ ৮০ হাজার টাকার সোনা।এত সব সম্পদ আওয়ামী লীগের সাংসদ রণজিত কুমার রায়ের। যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর ও সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) আসন থেকে এবারও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করা তাঁর হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তাঁর স্ত্রী নিয়তি রায় গৃহিণী হয়েও পাঁচ বছরে সাংসদ স্বামীর চেয়ে অনেক বেশি অর্থ-সম্পত্তির মালিক হয়েছেন।২০০৮ সালে দেওয়া হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রণজিতের নিজের নামে ছিল এক লাখ টাকার বাঘারপাড়ায় চার বিঘা পৈতৃক জমি এবং ৫০ হাজার টাকা দামের খাজুরা বাজারে আধা পাকা টিনের বাড়ি। স্ত্রীর নামে কিছুই ছিল না।রণজিত কুমার রায়ের আড়তদারি ব্যবসা এবং কৃষিজমি থেকে বছরে আয় ছিল এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা। পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তাঁর আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। ক্ষমতার পাঁচ বছরে এইচএসসি পাস এই সাংসদ কীভাবে সম্পদের পাহাড় গড়লেন, সেটা নিয়ে এলাকায় নানা কৌতূহল। এমনকি নিজের দলেও আছে নানা সমালোচনা।
আওয়ামী লীগের বাঘারপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমপি হওয়ার আগে যে রণজিতের একটা সাইকেল কেনার আর্থিক সংগতি ছিল না, সেই রণজিত এখন রাজার হালে তিনটা গাড়িতে চড়েন। পাঁচ বছরে তিন শ থেকে পাঁচ শ কোটি টাকা লুটপাট করে তিনি বিশাল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন।’সাংসদ রণজিত অবশ্য নিজেকে ‘খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন’ মানুষ হিসেবে দেখতে পান। তাঁর ভাষায়, ‘যশোরের ছয় এমপির মধ্যে আমি খুবই ভালো লোক। এটা আমি গর্ব করে বলছি। এখন আমাকে কালার করার জন্য অনেকে বলবে যে এমপি শিক্ষক নিয়োগের বাণিজ্য করে সম্পদ গড়েছেন।’ তাঁর যুক্তি, রাজনীতি করতে গেলে এমন অনেক অভিযোগ উঠবে।সর্বশেষ হলফনামায় আয়ের উৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে, বেতনের তিন লাখ ৩০ হাজার, বাড়ি, দোকান ও অন্যান্য ঘর ভাড়া দুই লাখ ১০ হাজার, মাছ চাষের ব্যবসায় তিন লাখ ৯২ হাজার, কৃষি খাতের ৬৩ হাজার ও অন্যান্য ভাতা থেকে চার লাখ টাকা। সব মিলিয়ে বছরে মোট ১৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা তাঁর আয়।
হলফনামার বাইরে আরও সম্পদ: সরেজমিনে জানা গেছে, যশোর শহরের পিটিআই সড়কে তিনি কিনেছেন চারতলা বাড়ি। খাজুরা বাজারের টিনের আধা পাকা বাড়িটি এখন তিনতলা ভবন। এর নিচতলায় মার্কেট ও দোতলায় সোনালী ব্যাংকের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বাঘারপাড়া বাজারে রয়েছে আরেকটি ভবন। বড় ছেলেকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ঢাকায় ব্যবসা বানিয়ে দিয়েছেন।
এসব নিয়ে কথা হয় সাংসদ রণজিতের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যশোর শহরে যে বাড়ি করিছি, তা ইনকাম ট্যাক্সের খাতায় ঢুকানো আছে। খাজুরা বাজারের বাড়িটা আমার পৈতৃক বাড়ি। সেটিও ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলে নথিভুক্ত করা আছে। লোন নিয়ে ছেলেকে একটা গাড়ি কিনে দিছি, তাতে অসুবিধা কী? লোন নিয়ে গাড়ি-বাড়ি কিনতি পারব না, এমনকি কোনো নিষেধ আছে?’এলাকার বিভিন্ন সূত্র ও দলীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁর এত অবৈধ সম্পদ এসেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ-বাণিজ্য থেকে। অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার কারণে সম্প্রতি বাঘারপাড়ার বাঁকড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ-প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন আদালত।
‘বাঁকড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চার পদে নিয়োগ, সাংসদের পক্ষে ২০ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ’ শিরোনামে গত ২ নভেম্বর প্রথম আলোর শেষের পাতায় একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হয়। 
ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগ-সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সহকারী প্রধান শিক্ষক পদপ্রার্থী কুমারেশ চন্দ্র বিশ্বাস ও হিমা বিশ্বাস যশোরের সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নিয়োগের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।বাঘারপাড়া ও যশোর সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, এ বছরে সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় ২৫ জন এবং বাঘারপাড়া উপজেলায় ২০১২ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের কোনো হিসাব রাখা হয় না। ফলে গত পাঁচ বছরে কতজন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। চাকরি দেওয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে তিন থেকে ছয় লাখ টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।




২২) আফছারুল আমীন: চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসনের প্রার্থী সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীনের স্ত্রীর ব্যাংক ও নগদ জমা গত পাঁচ বছরে বেড়েছে। এবার তাঁর মোট ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৫১৪ টাকা নগদ ও ব্যাংকে রয়েছে। গতবার তা ছিল সাত লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ টাকা। তবে তাঁর স্থাবর সম্পদ বাড়েনি। মন্ত্রীর স্থাবর সম্পদও আগের মতো রয়েছে। তবে তাঁর ব্যাংক ও হাতে নগদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকায়। আগে তা ছিল ৩৬ হাজার দুই টাকা।


২৩) এম এ লতিফ: চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর পতেঙ্গা) আসনের প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ এম এ লতিফের স্ত্রীর নগদ টাকা গত পাঁচ বছরে বেড়েছে বহুগুণ। এবার হাতে এবং ব্যাংকে মিলে লতিফের স্ত্রীর নগদ টাকা দেখানো হয় দুই কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি। পাঁচ বছর আগে লতিফের স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ছিল ৭৬ হাজার ১১৫ টাকা এবং হাতে ছিল ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ তখন ছিল না। এবার স্ত্রীর নামে ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্যের একটি অকৃষি জমি দেখানো হয়। লতিফের নগদ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকায়। পাঁচ বছর আগে তা ছিল তিন লাখ ৫৫ হাজার টাকা মাত্র।


২৪) সামশুল হক চৌধুরী: চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সাংসদ হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে সরকারদলীয় সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর স্ত্রীর স্থাবর অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে। স্ত্রীর নামে এবার নগদ টাকা দেখানো হয় সাত লাখ ৫২ হাজার ৩২৬ টাকা। আর স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা দেখানো হয় ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬২১ টাকা। স্ত্রীর নামে আগে কোনো সম্পদ ছিল না। গতবার স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ না থাকলেও এবার ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার ভূসম্পদ দেখানো হয়। ব্যবসা খাতে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার এবং বাড়ি ও দোকানভাড়া খাতে সাত লাখ ৩৯ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে। অথচ গতবার এ দুটি খাতে মোট আয় ছিল দুই লাখ ৯৫ হাজার টাকা। 
সাংসদ সামশুল হকের হাতে নগদ বেড়েছে ৭৭ গুণ। দশম জাতীয় সংসদের হলফনামায় তাঁর হাতে নগদ দেখানো হয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৪৭ টাকা। আর ব্যাংকে জমা রয়েছে ৪০ লাখ ১২ হাজার ৩৬৬ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর কাছে নগদ এক হাজার ৩৬৯ টাকা ছাড়া ব্যাংকে কোনো টাকা নেই বলে হলফনামায় বলা হয়েছিল। 


২৫) মোয়াজ্জেম হোসেন : সুনামগঞ্জ-১:এ আসনে (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধরমপাশা) প্রার্থী আছেন দুজন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেনের সম্পদের পরিমাণ চার কোটি ৩৫ লাখ ৪৩ হাজার ২১২ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর সম্পদ ছিল এক কোটি ৮৯ লাখ ১০ হাজার ৪৪৭ টাকার। অর্থাৎ তাঁরও সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।




২৬) কামাল মজুমদার:  কামাল মজুমদারের সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি টাকা..ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ সদস্য কামাল আহম্মেদ মজুমদারের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় দেয়া তথ্যে তার স্থাবর সম্পত্তির পুরো বিবরণ উল্লেখ করা হয়নি। ২০০৮ সালে তার স্থাবর সম্পত্তি ছিল ৩ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার ৪৭৬ টাকা। তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি ছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও চা-বাগান, রাবার বাগান ও মৎস্য খামার থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন। ২০১৩ সালে তার বাৎসরিক আয় ১ কোটি ২১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩০ টাকা। সংসদ সদস্য হিসেবে প্রাপ্ত সম্মানী উল্লেখ করেননি তিনি। এছাড়া, অন্যান্য খাত থেকে ১৪ লাখ টাকা আয় দেখিয়েছেন।  ২০০৮ সালে তার আয় ছিল প্রায় ৫৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। পরিবারের অন্য সদস্যদের আয় দেখিয়েছেন ১৬ হাজার ৮২৫ টাকা। তার ও স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৮ হাজার ৮২৭ টাকা। ২০১৩ সালে তার অস্থাবর সম্পত্তি দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৩৫ হাজার ১৪৪ লাখ টাকা।  তার নামে মামলা রয়েছে ২২টি।  


২৭)  নুরুল ইসলাম নাহিদ: নাহিদের স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৮ গুণ....
বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৮ গুণ। ২০০৮ সালের হলফনামায় দেয়া তথ্যে নুরুল ইসলাম নাহিদের অস্থাবর সম্পদের মূল্য ছিল প্রায় ২১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর সম্পদ ছিল ৬ লাখ ১৯ হাজার ৬১৯ টাকা। ২০১৩ সালে তার নিজের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ চার গুণেরও বেশি বেড়ে ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৫০ টাকা হয়েছে। আর স্ত্রীর সম্পদ প্রায় ৮ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮৪৩ টাকায়। ২০০৮ সালে তার বাৎসরিক আয় ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ টাকা। বর্তমানে তার বাৎসরিক আয় ১৭ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামা অনুসারে তার স্থাবর সম্পদের মূল্য ছিল ৫ লাখ টাকা। এছাড়া, যৌথ মালিকানায় ৫ একর একটি জমি থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে যৌথ মালিকানার জমি ছাড়াও প্রায় ৭৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা মূল্যের জমি রয়েছে তার। 

২৮) গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স: প্রিন্সের সম্পদ বেড়েছে আড়াই গুণ....
পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্সের স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বর্তমানে ৮৪ লাখ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামায় দেয়া তথ্যে স্থাবর সম্পত্তির কোন উল্লেখ ছিল না। ২০১৩ সালে ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছেন ৯ লাখ ৬ হাজার টাকা। আর শেয়ার থেকে আয় ১০ হাজার ২৬০ টাকা। কিন্তু সংসদ সদস্য হিসেবে প্রাপ্ত সম্মানী ভাতার উল্লেখ করেননি। ২০০৮ সালে তার অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩১ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে এসে তা দ্বিগুণ হয়ে ৬৪ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। 




২৯) রওশন এরশাদ : রওশনের ব্যাংকে জমা ২৬ কোটি
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের স্ত্রী ও দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম রওশন এরশাদ। তিনি ময়মনসিংহ-৪ আসন থেকে ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তারও সম্পদ বেড়েছে অবিশ্বাস্য হারে। ২০০৮ সালে তার ব্যাংকে রাখা টাকার পরিমাণ ছিল এক কোটি দুই লাখ টাকা। এবার তা বেড়ে হয়েছে ২৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।পাঁচ বছর আগে শেয়ারবাজারে মাত্র ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ ছিল রওশন এরশাদের। ১০০ ভরি স্বর্ণের মালিক রওশন এরশাদ নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় মূল্য দেখিয়েছেন এক লাখ ২৫ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ৩০ ভরি স্বর্ণ ছিল তার। ওই সময়ও তিনি ৩০ ভরির মূল্য দেখিয়েছিলেন এক লাখ ২৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে ৭০ ভরি স্বর্ণ বেড়েছে।  এবোরের ৭০ ভরি স্বর্ণের দাম তিনি দেখাননি।

২০০৮ সালে রওশন এরশাদ তার মোট বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন তিন লাখ ৪৮ হাজার টাকা। এবার তার আয় দুই কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে এক কোটি ৯৪ লাখ টাকাই আয় করেছেন শেয়ারবাজার ও ব্যাংকের আমানত থেকে। গতবার নির্বাচনের আগে দেয়া হলফনামায় ৬৫ লাখ টাকা দামের একটি গাড়ি থাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন রওশন। এবার গাড়ির সংখ্যা আরো দুটি বেড়েছে। সব মিলিয়ে তিনটি গাড়ির দাম দেখিয়েছেন এক কোটি ২৮ লাখ টাকা।স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমির পরিমাণ ১ দশমিক ৩১৭৫ একর। যার মূল্য ৩৩ লাখ টাকা (অর্জনকালীন সময়)। তার দুটি ফ্ল্যাট ও একটি বাড়ি আছে, যার মূল্য ছয় কোটি ৮০ লাখ টাকা।

৩০) কাজী ফিরোজ রশিদ : ২০টি বাড়ি-ফ্ল্যাটের মালিক ফিরোজ রশিদ
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশিদ। ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী তিনি। নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া তার হলফনামায় বলা হয়েছে- বছরে কৃষি খাতে তিনি আয় করেন ৪০ হাজার টাকা। বাড়িসহ অন্যান্য ভাড়া পান বছরে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা। ব্যবসায়িক আয় তিন লাখ ৩০ হাজার। বছরে মৎস্য খামার থেকে আয় করেন ১৫ লাখ টাকা। নিজের নগদ অর্থ আছে আট লাখ ৪৩ হাজার ও স্ত্রীর নামে আছে ৯১ লাখ টাকার বেশি। ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২৫ লাখ ও স্ত্রীর নামে গচ্ছিত আছে ৩৫ লাখ টাকা। শেয়ার বন্ড ও ঋণপত্র আছে প্রায় এক কোটি ১৬ লাখ টাকা। অর্জনকালীন সময়ে কৃষিজমির আর্থিক মূল্য ৭৪ লাখ টাকা, স্ত্রীরসহ জমির পরিমাণ ৪ হাজার ১৯৩ শতক। অর্জনকালীন সময়ে অকৃষি জমির অর্থমূল্য ৩০ লাখ টাকা। স্ত্রীরসহ জমির পরিমাণ এক হাজার ১৫৩ শতক। সাভারে রয়েছে বাগানবাড়ি। এ বাড়ির অর্জনকালীন অর্থমূল্য দেখানো হয়েছে ৬৫ লাখ টাকা। বাড়ি এ্যাপার্টমেন্ট সব মিলিয়ে রয়েছে ২০টি। এর অর্জনকালীন অর্থমূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৬০ লাখ টাকা।

৩১) আনিসুল ইসলাম মাহমুদ : আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ
চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ২০০৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় দেয়া তথ্যে তার স্থাবর সম্পত্তি ছিল প্রায় এক কোটি ৬৫ লাখ  টাকা। ২০১৩ সালে তার সেই সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তার বাৎসরিক আয় ছিল ৩৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩৮০ টাকা। তার পরিবারের অন্য সদস্যদের আয় ছিল প্রায় ২৩ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি ছিল প্রায় ৪১ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি ছিল প্রায় ৪৭ লাখ টাকা।  স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি ছিল ৪ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে তার আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ লাখ টাকা। পরিবারের অন্য সদস্যদের আয়ও দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তার অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় চার কোটি ৩৭ লাখ টাকা। তার স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ না বাড়লেও  স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ।


৩২) রুহুল আমিন হাওলাদার : অস্বাভাবিক সম্পদ বেড়েছে হাওলাদারের
রুহুল আমিন হাওলাদার নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, তাঁর বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকানভাড়া থেকে আয় হয়েছে এক কোটি ৬২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। গতবার এই খাত থেকে আয় ছিল মাত্র ১৩ লাখ আট হাজার ৯৩৮ টাকা। সাংসদের পারিতোষিক হিসেবে তাঁর বার্ষিক আয় ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬২৫ টাকা।গত পাঁচ বছরে রুহুল আমিন ৬৭ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ টাকা দামের একটি ও স্ত্রী ৫৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৩০ টাকা দামের আরেকটি গাড়ির মালিক হয়েছেন। দুটিই ল্যান্ডক্রুজার ব্র্যান্ডের। স্ত্রীর ১০০ ভরি স্বর্ণসহ অন্যান্য অলংকার আছে। তাঁর আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে নাইন এমএম পিস্তল, ২২ বোর রাইফেল, দোনালা বন্দুক, রিভলবার ও একটি শটগান আছে। হলফনামায় উল্লেখ আছে, তিনি ধার দিয়েছেন ১০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। স্ত্রীকেও অর্থ ধার দিয়েছেন তিনি।

রুহুল আমিনের অকৃষি জমির মধ্যে গুলশানে নিজের নামে রয়েছে ১২ দশমিক ৭ কাঠা; যার মূল্য দেখানো হয়েছে অর্জনের সময়ে নয় লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৯ টাকা। তবে বর্তমানে গুলশান এলাকায় জমির দাম গড়ে কাঠাপ্রতি প্রায় সাত কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট একজন ব্যবসায়ী। স্ত্রীর নামে এবার পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠা জমি দেখিয়েছেন; যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। রুহুল আমিনের আবাসিক ও বাণিজ্যিক দালান আছে দুই কোটি ৩৩ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৮ টাকার। ঢাকা ও বরিশালের বাকেরগঞ্জের এসব দালানের সংখ্যা বা কতটুকু জমির ওপর করা হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি হলফনামায়। স্ত্রীর নামে গতবারের মতো এবারও ১০ লাখ টাকার দালান ও একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।গতবার স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন ও বাড়িভাড়ার অগ্রিমসহ তার দায় দেখানো হয়েছিল এক কোটি ৭০ লাখ ৩৫ হাজার ২১৫ টাকা। এবার তিনি দায় দেখিয়েছেন ২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৩২ হাজার ৭১৯ টাকা। বলা হয়েছে, এই দায় আত্মীয়স্বজন, ব্যক্তিগত বন্ধুবান্ধব, বাড়িভাড়া অগ্রিম ও ব্যাংকঋণ। রুহুল আমিনের নামে দুর্নীতি দমন আইনে তিনটি মামলা এখনো চলছে।

৩৩) জিয়াউদ্দিন বাবলু : জিয়াউদ্দিন বাবলুর ফার্মের আয় ৮২ লাখ
চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। বাড়িভাড়া থেকে বছরে আয় করেন ১১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। ফার্মের বার্ষিক আয় ৮২ লাখ ৫০০ টাকা। নগদ অর্থ আছে ২৬ লাখ ১৬ হাজার টাকার বেশি, ব্যাংকে জমা ১০ লাখ, আছে ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার। দুটি ফ্ল্যাট ও ১১ কাঠার বেশি জমি রয়েছে তার। দেনা আছে ৩৯ লাখ টাকা।

৩৪) মজিবুল হক চুন্নু : চুন্নুর আয় বেড়েছে ৮ গুণ, স্ত্রীর বেড়েছে ৪ গুণ
কিশোরগঞ্জ-৩  আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুল হক চুন্নুর আয় বেড়েছে প্রায় আট গুণ। ২০০৮ সালের হলফনামা দেয়া তথ্যে তার কোনো আয়ের পরিমাণ উল্লেখ ছিল না। আয়ের উৎস হিসেবে শুধু একটি বাস ও সঞ্চয়পত্র থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা বাৎসরিক আয় দেখানো হয়। ২০১৩ সালে তার বাৎসরিক আয় বেড়ে দাঁড়ায় এক কোটি আট লাখ টাকা। তিনি ব্যবসা থেকে প্রতিবছর আয় করেছেন ৯৬ লাখ টাকা। পেশা থেকে আয় করেছেন আট লাখ টাকা। কিন্তু সংসদ সদস্য হিসেবে তার সম্মানী-ভাতা হলফনামায় উল্লেখ করেননি।২০০৮ সালে তার অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৪৪ লাখ টাকা। আর স্ত্রীর ছিল ১৯ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে টঙ্গীতে স্ত্রীর নামে ৫ কাঠার একটি জমি দেখিয়েছেন। এর মূল্য চার লাখ ৪৭ হাজার টাকা। আর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বাড়ির একটি অংশের কথা উল্লেখ করেছেন। ২০১৩ সালে তার অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে নগদ ৩৭ লাখ টাকা। আর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি ৪ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমি দেখিয়েছেন নিজের সম্পদ বিবরণীতে।

৩৫) সালমা ইসলাম : ১৭ কোটি টাকার বন্ড-শেয়ার আছে সালমার
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সালমা ইসলাম ঢাকা-১ আসন থেকে নির্বাচন করছেন। তিনি বছরে বাড়িভাড়া পান ৩৫ লাখ টাকা। ব্যাংকে আছে ৪৫ লাখ টাকার বেশি। শেয়ার-বন্ডসহ ঋণপত্র কিনেছেন ১৭ কোটি ২২ লাখ টাকার বেশি। স্বামীর মিলিয়ে স্বর্ণ আছে ৪০ লাখ টাকার। অর্জনকালীন মূল্যে কৃষিজমি আছে প্রায় ৫ কোটি টাকার। ভবন মূল্য দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকার বেশি।

৩৬) তাজুল ইসলাম চৌধুরী : সম্পদের অভাব নেই তাজুলের
কুড়িগ্রাম-২ আসন থেকে নির্বাচন করছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজুল ইসলাম চৌধুরী। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ছয়বারের এই এমপি। কৃষিখাতে তার বছরে আয় ৬০ হাজার টাকা। শিক্ষকতা- চিকিৎসা ও আইন পেশায় বছরে আয় দুই লাখ ৩১ হাজার। ব্যাংক মুনাফা পান দুই লাখ ৭১ হাজার টাকার বেশি। নিজের নগদ অর্থ আছে প্রায় ২৬ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা অর্থের পরিমাণ দুই লাখ টাকার বেশি। আছে গাড়িসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী। রিভলবার ও শটগানের অর্থমূল্য ৮০ হাজার টাকার বেশি। অর্জনকালীন সময়ে কৃষিজমি সাত একর অকৃষি জমি ৭ শতক। রয়েছে পৈতৃক বাড়ি ও ফ্ল্যাট।



৩৭) মাহবুবুল ইসলাম হানিফ : ৫ বছরেই সম্পদের পাহাড়।পাঁচ কোটি টাকায় ৭০ একর জমি কিনেছেন 

গত পাঁচ বছরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকায় ৭০ একর জমি কিনেছেন। এর মধ্যে ৬৬ একরই সুন্দরবনের পাশে বাগেরহাটের মংলা উপজেলার জয়মনিগোল গ্রামে। তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনটি নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গাজীপুরে কিনেছেন তিন একর জমি। হাতে আছে আরও প্রায় ৪৪ লাখ টাকা। স্ত্রী ও নিজের নামে শেয়ার কেনা আছে এক কোটি ২২ লাখ টাকার। এক কোটি ১৮ লাখ টাকায় দুটি গাড়িও কিনেছেন।এই ‘সফল’ ব্যক্তিটি হলেন মাহবুব উল আলম হানিফ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। কিছুদিন আগ পর্যন্ত এ সরকারের প্রায় পুরো মেয়াদেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ছিলেন।বিপুল এই সম্পদের হিসাব হানিফের নিজেরই দেওয়া। ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হলফনামায় হানিফ এ তথ্য দিয়েছেন। তবে এই হিসাবের বাইরে বেনামে আরও সম্পদ রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।হলফনামায় হানিফ লিখেছেন, নতুন তিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে তাঁর কোনো আয় হয় না। প্রধান আয়ের উৎস হিসেবে তিনি মৎস্য খাতের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর দাবি, বছরে সেখান থেকে আয় তিন কোটি ৭০ লাখ টাকা। তবে মৎস্য খামারটি কোথায়, তার উল্লেখ করেননি।
জানতে চাইলে প্রথম আলোকে তিনি জানান, খুলনার দাকোপ ও পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালিতে তাঁর মাছের ঘের রয়েছে। সেখান থেকেই ওই আয় হয়। কিন্তু ওই দুই জায়গায় প্রথম আলো অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পারে, নব্বইয়ের দশকের দিকে তিনি সেখানে দুটি মাছের ঘের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দুটিই বর্তমানে বন্ধ। হানিফের দাবি, বেশ কয়েকটি খামারে তার অংশীদারি রয়েছে। সেখান থেকেও তাঁর আয় হয়।পরিবেশ আইন ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সুন্দরবনের চারপাশে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন নিষিদ্ধ। কিন্তু হানিফের কেনা জমি সুন্দরবনের ২০০ মিটারের মধ্যে। সেখানে একটি শিপইয়ার্ড স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থানগত ছাড়পত্রও নিয়েছে হানিফের প্রতিষ্ঠিত সানমেরিন শিপইয়ার্ড লি.।বর্তমান সরকারের আমলে ২০১০ সালে নিবন্ধন পাওয়া সানমেরিন শিপইয়ার্ড কোয়েস্ট গ্রুপ অব কোম্পানির একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। কোয়েস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহবুব উল আলম হানিফ। আর সানমেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁর ভায়রা কাজী হাসান শরীফ। তাঁর নামেও জয়মনিগোল গ্রামে ১৮০ একর জমি কেনা হয়েছে।এই জমি কেনা এবং শিপইয়ার্ড স্থাপন সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহবুব উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জয়মনিতে খাদ্য বিভাগ গুদাম নির্মাণ করেছে। নৌবাহিনী একটি শিপইয়ার্ড তৈরি করছে। আমরাও বিদেশি বিনিয়োগ মাথায় রেখে সেখানে জমি নিয়েছি। সেখানে শিপইয়ার্ড স্থাপনের জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহও দেখিয়েছে। তবে কোনো আইন লঙ্ঘন করে বা সরকার অনুমোদন না দিলে সেখানে শিপইয়ার্ড স্থাপন করা হবে না।
আয়কর বিবরণীতে বলা হয়েছে, মাহবুব উল আলম ব্যবসায় এক কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। আরও চারটি প্রতিষ্ঠানে তাঁর শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে কোয়েস্ট ইন্টারন্যাশনালে তিন লাখ ২৫ হাজার টাকা, লুনা এভিয়েশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডে ১০ লাখ, সানমেরিন শিপইয়ার্ডে ৮০ লাখ, ব্লু লাইন এয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডে ১০ লাখ টাকা তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে।ওয়েবসাইটে কোয়েস্ট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এইচআরএফ ইঞ্জিনিয়ারিং লি., এমবি ট্রেডার্স, কেসিওপিয়া ইনকের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এই তিন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেননি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ভবনের অষ্টম তলায় কোয়েস্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়।ওয়েবসাইটে আছে, হলফনামায় ওই তিন প্রতিষ্ঠানের নাম নেই কেন? জানতে চাইলে হানিফ বলেন, ওয়েবসাইটে ভুলে তিন প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে তাঁর দাবি।হলফনামায় হানিফের সম্পত্তি হিসেবে কোনো কৃষিজমি থাকার কথা উল্লেখ নেই। কিন্তু মংলা ভূমি নিবন্ধন কার্যালয় থেকে তাঁর জমির ৩০টি দলিলের অনুলিপি পাওয়া গেছে। মংলা উপজেলা ভূমি নিবন্ধন কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হানিফের নামে কেনা জমির পুরোটাই কৃষিজমি।
সম্পদ ও আয়: গাজীপুরে এক কোটি ৯৮ লাখ টাকায় তিন একর জমি, বাগেরহাটের মংলা উপজেলার জয়মনিতে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৬ টাকা দিয়ে ৬৬ দশমিক ৫৯৩ একর জমি, জয়মনিতেই দশমিক ৭০ একর জমি দুই লাখ ৮৬ হাজার টাকায়, কুষ্টিয়ার জোড়হাঁসে ১১ লাখ টাকায় জমি কিনে সেখানে ২০ লাখ টাকায় একটি বাড়ি নির্মাণ করছেন তিনি। এ ছাড়া সানমেরিন শিপইয়ার্ডে শেয়ার কেনা বাবদ অগ্রিম দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন এবং সুদমুক্ত ঋণ হিসেবে তিনি দিয়েছেন এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা।হানিফ তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে হলফনামায় লিখেছেন, এক কোটি পাঁচ লাখ ও ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের দুটি গাড়ি রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া নগদ ও ব্যাংকে মিলিয়ে তাঁর মোট ব্যবসাবহির্ভূত অর্থের পরিমাণ ৪৪ লাখ ৬০ হাজার ৬২৮ টাকা। গত অর্থবছরে হানিফ মোট ২০ লাখ ৩০ হাজার ৪০৫ টাকা আয়কর দিয়েছেন। গত বছর মোট ব্যয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৩৬ লাখ ১৯ হাজার ৯৪৫ টাকা। ব্যাংকঋণ শোধ করেছেন ৩১ লাখ ১৫ হাজার ৩০৫ টাকা।
বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে তিনি বছরে সাত লাখ ২৩ হাজার ৮০০ টাকা আয় করেন। চাকরি বাবদ বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক সুদ বাবদ বছরে চার হাজার ৭৯৯ টাকা দেখানো হয়েছে।এ ছাড়া হানিফের নামে ন্যাশনাল ব্যাংক কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ১২ কোটি ৫০ লাখ ও এক কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯৭ টাকা এবং রূপালী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখা থেকে ৩৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।



৩৮) মজিবুল হক : কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচনকালীন সরকারের রেলপথ ও ধর্মমন্ত্রী মো. মুজিবুল হকের এবারের হলফনামা অনুযায়ী অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ৭৭ লাখ এক হাজার ১৯৫ টাকার একটি গাড়ি আছে। পাঁচ বছর আগে ছিল সাত লাখ আট হাজার টাকার গাড়ি। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৭২ লাখ ৯৩ হাজার ৫৯২ টাকার দুটি দালান রয়েছে। আগে ছিল ২১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকার একটি দালান। এ ছাড়া ৩০ লাখ টাকা দামের ১০ কাঠার একটি রাজউক প্লট রয়েছে। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে ৭৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকার ঋণ নিয়েছেন। হুইপ ও মন্ত্রী হিসেবে পারিতোষিক পেয়েছেন ২২ লাখ ২০ হাজার ৮০২ টাকা। পাঁচ বছর আগে আইনি পরামর্শক হিসেবে তিন লাখ টাকা আয় করেছিলেন। 

৩৯) আ হ ম মুস্তফা কামাল: কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট ও সদর দক্ষিণ) আসনের প্রার্থী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্থাবর সম্পদ অনেক বেড়েছে। পাঁচ বছর আগের তিন কোটি ৪৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৭ টাকা মূল্যের দালান থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৬৭ টাকার দালান। 

৪০) তাজুল ইসলাম : কুমিল্লা-৯ (লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ মো. তাজুল ইসলাম এবার ব্যবসায়িক পরামর্শক হিসেবে ২৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন। আগে এ খাতে আয় ছিল না। এখন এক কোটি ৮৯ লাখ চার হাজার ৩৪৪ টাকার একটি জিপ ও একটি কার রয়েছে। আগে তা ছিল না। 
৪১) শেখ হেলাল : ব্যবসা থেকে শেখ হেলালের আয় বেড়েছে 
বাগেরহাট-১ আসনের এমপি প্রার্থী শেখ হেলাল উদ্দিন। তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ আছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৭ টাকার। পাঁচ বছর আগে দেওয়া হলফনামার তুলনায় এবার তার বার্ষিক আয় বেড়েছে ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৩০ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামায় তিনি ব্যবসা থেকে আয় উল্লেখ করেছিলেন বছরে ৮ লাখ ৮ হাজার ৩০০ টাকা। এবার একই খাত থেকে আয় হয়েছে ৯১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩০ টাকা।

হেলালের হাতে এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত নগদ আছে ১ কোটি ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৩ টাকা ও স্ত্রীর কাছে নগদ আছে ৬০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে ছিল যথাক্রমে ২৮ লাখ ৪৮ হাজার ১০৮ টাকা ও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার নামে বর্তমানে ব্যাংকে জমা আছে ৩২ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮৩ টাকা ও স্ত্রীর নামে আছে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৩ টাকা। পাঁচ বছর আগে শুধু নিজ নামে জমা ছিল ৭ হাজার ৩২৫ টাকা। একটি পরিবহন কোম্পানিতে নিজ নামে শেয়ার আছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০০৮ সালেও এই কোম্পানিতে এ অঙ্কের শেয়ার ছিল। আগে তার কোনো সঞ্চয়পত্র না থাকলেও এবার ৫ বছর মেয়াদি ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের কথা উল্লেখ আছে। পাঁচ বছর আগে তার ৩১ লাখ ৬৭ হাজার টাকার দুটি গাড়ির সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে আরও ৬৭ লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ টাকার একটি নতুন গাড়ি। নিজ নামে ১১ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র আছে। এ ছাড়াও ৩০ জুন পর্যন্ত মূলধনের জের আছে ১ কোটি ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৭২৪ টাকা। ব্যবসায় নগদ ও ব্যাংক উদ্বৃত্ত আছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৯২ হাজার ২৪৬ টাকা। স্ত্রীর নামে মূলধনের জের আছে ১ কোটি ৪১ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৪ টাকা এবং ব্যবসায় নগদ ও ব্যাংক উদ্বৃত্ত ২০ লাখ ৩১ হাজার ২৪০ টাকা।শেখ হেলালের স্থাবর সম্পদ আছে বসুন্ধরায় ২ কোটি ৭৯ লাখ ২৭ হাজার ৫৬০ টাকার একটি ও পূর্বাঞ্চল প্রকল্পে ৩৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার অকৃষি জমি। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার বাবার দান করা ৬০ কাঠা অকৃষি জমি আছে, যার মূল্য অজানা বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। তার কোনো দায়-দেনা নেই।

সূত্র : http://www.samakal.net/2013/12/25/28550

৪২) শামিম ওসমান : গত ২ বছরে শামীম ওসমান ও তার স্ত্রীর সম্পদ বহুগুণ বেড়েছে .... ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের এমপি থাকলেও গত ৫ বছর শামীম ওসমান ওই পদে ছিলেন না। এর মধ্যে তিনি ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময় শামীম ওসমান যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য জমা দেওয়া হলফনামার সঙ্গে আগের হলফনামার অনেক পার্থক্য দেখা গেছে। গত ২ বছরে শামীম ওসমান ও তার স্ত্রীর সম্পদ বহুগুণ বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে হলফনামায় উল্লেখ করলেও আশ্চর্যজনকভাবে শামীম ওসমানের কোনো গাড়ি নেই।অথচ বাস্তবে তিনি দামি জিপ গাড়িতে চলাচল করেন। নাসিক নির্বাচনের সময় জমা দেওয়া হলফনামায় শামীম ওসমান তার আয়ের বর্ণনায় উল্লেখ করেছিলেন বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ বছরে তার ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৩ টাকা আয় হয়। একই আয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায়ও উল্লেখ করা হয়েছে।
গত হলফনামায় ব্যবসা থেকে বার্ষিক ৯ লাখ ৪০ হাজার ৮শ'টাকা আয় দেখানো হলেও এবারের হলফনামায় এ খাত থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। গত হলফনামায় ব্যাংক জমার সুদ থেকে কোনো আয় দেখানো না হলেও এবার এ খাত থেকে আয় দেখানো হয়েছে ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৬৪ টাকা।
নগদ টাকার পরিমাণ আগের হলফনামায় উল্লেখ ছিল মাত্র ২ লাখ টাকা। এবারের হলফনামায় তা উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৮৫৪ টাকা। আগের হলফনামায় পোস্টাল সেভিংসে এফডিআর দেখানো হয়েছিল ১ কোটি ১ লাখ টাকা। এবারের হলফনামায় ওই খাতে কোনো জমা নেই উল্লেখ করা হয়েছে।
আগের হলফনামায় ব্যাংকে জমার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছিল ৬৪ লাখ ৯১ হাজার ৪০৩ টাকা। এবারের হলফনামায় ব্যাংকে জমার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৬২ হাজার ৫৩৮ টাকা। আগে শেয়ারে বিনিয়োগ ছিল ৫৭ লাখ টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ লাখ ২৪ হাজার ১শ'টাকা।
শামীম ওসমানের কাছে ১০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে। যা গত এবং বর্তমান হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। আগের হলফনামায় তার নামে ৩ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী দেখানো হলেও এবারের হলফনামায় তা ৫ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। আগের হলফনামায় তার নিজ নামে দেড় লাখ টাকার আসবাবপত্রের কথা উল্লেখ থাকলেও এবারে তা দেখানো হয়েছে ২ লাখ টাকা।
শামীম ওসমানের নিজ নামে ১০ শতাংশ কৃষি জমি, ১৬ শতাংশ জমির ওপর দোতলা বাড়ির কথা আগের হলফনামায় উল্লেখ থাকলেও এবারের হলফনামায় ওই সম্পদের সঙ্গে আরও যুক্ত হয়েছে হেবা সূত্রে ঢাকার উত্তরায় পাওয়া ৯ কাঠা ১৩ ছটাক ২২ বর্গফুট জমি যার মূল্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে কার কাছ থেকে ওই জমি পেয়েছেন তা উল্লেখ নেই হলফনামায়।
শামীম ওসমানের পাশাপাশি তার স্ত্রী-সন্তানেরও রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ। ২টি হলফনামা পর্যালোচনা করে জানা গেছে, গত হলফনামায় শামীম ওসমানের স্ত্রী লিপি ওসমানের ব্যবসা থেকে বছরে আয় ছিল ৯ লাখ ৪০ হাজার ৮শ'টাকা যা এবারের হলফনামায় দেখানো হয়েছে ১৫ লাখ ৬ হাজার ৩৪৩ টাকা।
এছাড়া গত হলফনামায় চাকরি থেকে স্ত্রীর আয় ২৪ লাখ টাকা দেখানো হলেও এবারের হলফনামায় ওই খাত থেকে তার স্ত্রীর কোনো আয় নেই। গত হলফনামায় ব্যবসা থেকে তার ছেলে অয়ন ওসমানের আয় ১৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৮০ টাকা হলেও এবারের হলফনামায় তা কমে ১৩ লাখ ২১ হাজার ২২২ টাকা দেখানো হয়েছে।
স্ত্রীর নামে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক জামানত আছে ৯২ হাজার ১৫০ টাকা। যা উভয় হলফনামাতে একই দেখানো হয়েছে। গত হলফনামায় স্ত্রীর নামে নগদ ১ লাখ এবং নির্ভরশীলদের নামে ৫০ হাজার টাকা দেখানো হলেও এবার তা বেড়ে স্ত্রীর নামে ৯১ লাখ ৩১ হাজার ৬৮ টাকা এবং নির্ভরশীলদের নামে ১০ হাজার টাকা কমিয়ে ৪০ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।
গত হলফনামায় স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ১৯ লাখ ৯২ হাজার ১২৮ টাকা উল্লেখ থাকলেও এবার তা বেড়ে ৪০ লাখ ১ হাজার ৯৯৫ টাকা দেখানো হয়েছে। গত হলফনামায় নির্ভরশীলদের নামে ব্যাংকে ৪৫ হাজার টাকা দেখানো হলেও এবার দেখানো হয়েছে মাত্র ৬ হাজার ৯৫০ টাকা।
গত হলফনামায় স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের নামে ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার থাকলেও এবার তা দেখানো হয়েছে ৯১ লাখ ২৪ হাজার ১শ'টাকা। গত হলফনামায় স্ত্রীর নামে ২৫ লাখ এবং নির্ভরশীলদের নামে ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার এফডিআর থাকলেও এবার স্ত্রীর নামে ২৫ লাখ টাকার এফডিআর দেখানো হলেও নির্ভরশীলদের নামে কোনো এফডিআর দেখানো হয়নি।
শামীম ওসমানের স্ত্রীর কাছে ৪০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে যা গত এবং বর্তমান হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া নির্ভরশীলদের নামে উভয় হলফনামায় ৩২ হাজার ৫শ'টাকার স্বর্ণ রয়েছে।
শামীম ওসমানের স্ত্রীর নামে গত হলফনামায় ৩ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী দেখানো হলেও এবার তা কমিয়ে ২ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। এছাড়া নির্ভরশীলদের নামে গত হলফনামায় ১ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমান হলফনামায় তা ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
শামীম ওসমানের স্ত্রীর নামে গত হলফনামায় দেড় লাখ টাকার আসবাবপত্র থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমান হলফনামায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকার আসবাবপত্রের কথা উল্লেখ রয়েছে। আর নির্ভরশীলদের নামে গতবার ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্রের কথা উল্লেখ থাকলেও এবার ৩০ হাজার টাকা উল্লেখ রয়েছে।
২০১১ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় দেওয়া হলফনামায় শামীম ওসমান তার স্ত্রী লিপি ওসমানের নামে ১৪ শতাংশ জমির কথা উল্লেখ করেন। ওই জমি থেকে ওই বছর (২০১১) ৫ শতাংশ বিক্রি করে ৯ শতাংশ জমি তার স্ত্রীর নামে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

সূত্র : http://www.samakal.net/2013/12/24/28343


৪৩) এনামুল হক :এনামুল হকের হিসাব ঠিক নেই! ২০০৮ সালে শুধু বেতন-ভাতা থেকে তার বছরে আয় ছিল ২০ লাখ টাকা
এনামুল হক। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী।তিনি সংসদ সদস্য হয়ে নিজেই সরকারের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ায় কয়েক বছর আগে আলোচনায় আসেন। ২০০৮ সালে শুধু বেতন-ভাতা থেকে তার বছরে আয় ছিল ২০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর পরে এখন কৃষি, বাড়ি ও দোকান ভাড়া, ব্যবসা ও পেশা থেকে বছরে তার আয় হয় ৫০ লাখ টাকা। তবে এই হিসাব নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
পাঁচ বছর আগে তার ওপর নির্ভরশীলদের ৭ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টাকা বার্ষিক আয় থাকলেও এবারের হলফনামায় নির্ভরশীলদের কোনো আয়ের উৎস নেই। তার নিজের, স্ত্রীর ও নির্ভরশীলদের মোট ১৬ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার সাধারণ শেয়ার থেকে কোনো আয় নেই।পাঁচ বছর আগে তার স্ত্রীর থাকা ২ কোটি ৮৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকায়। যার মধ্যে এবার নিজের হাতে নগদ রয়েছে ১০ লাখ টাকা ও স্ত্রীর হাতে ৫ লাখ টাকা। নিজ নামে ব্যাংকে আছে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৯১ টাকা ও স্ত্রীর নামে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা।
শেয়ার ও বন্ডে নিজ নামে ৪ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ২৫০টি সাধারণ শেয়ার, স্ত্রীর নামে ৮ কোটি ২ লাখ ১০ হাজার টাকার ৬১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫০টি শেয়ার ও নির্ভরশীলদের নামে ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার ৩ লাখ ২৯ হাজার ৯০০টি শেয়ার আছে। নিজের নামে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে আমানত আছে ২৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩৬২ টাকার।নিজ নামে ৬৩ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকার টয়োটা জিপ ও ১৬ লাখ টাকার স্ত্রীর নামে একটি টয়োটা জিপ রয়েছে। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নামেই স্বর্ণ আছে ৪০ তোলা করে। নিজের নামে ইলেট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র আছে ৯ লাখ ১০ হাজার টাকার ও স্ত্রীর নামে ১০ লাখ টাকার।
২০০৮ সালে তার নিজের হাতে ছিল ৫৮ লাখ ১৯ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর হাতে ছিল ৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। নিজ নামে ব্যাংকে ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে ব্যাংকে কোনো টাকা ছিল না। শেয়ার ও বন্ডে নিজ নামে ছিল ৯ কোটি ২০ লাখ টাকা ও স্ত্রীর নামে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। নিজের নামে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে আমানত ছিল ১৫ লাখ ৭ হাজার টাকার।নিজ বা স্ত্রীর নামে কোনো গাড়ি ছিল না। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নামেই বিয়ের উপহার থাকলেও স্বর্ণের পরিমাণ উল্লেখ ছিল না। নিজের নামে ইলেট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র ছিল ১ লাখ টাকার ও স্ত্রীর নামে মাত্র ১০ হাজার টাকার।স্থাবর সম্পদের মধ্যে এনামুল হকের নিজ নামে কৃষি জমি বেড়েছে পাঁচ বছর আগের তুলনায় ২০ গুণ মূল্যের। পাঁচ বছর আগে নিজ নামে মাত্র ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার কৃষি জমির স্থলে এবার উল্লেখ করেছেন ১ কোটি ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ২০০ টাকা, স্ত্রীর নামে রয়েছে আরও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার কৃষি জমি।

সূত্র : http://www.samakal.net/2013/12/24/28344


৪৪) দিপু মনি : দীপু মনির ৫ লাখ টাকার সম্পদ বেড়ে ৮৪ লাখ 
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। নবম সংসদের পুরো মেয়াদেই ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে। ভাগ্যবতী দীপু মনি জীবনে প্রথম এমপি হয়েই মন্ত্রিত্ব পেলেন। তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। তার বিদেশ ভ্রমণ একটি রেকর্ড বলেও অনেকে মনে করেন। আলোচিত এই সাবেক মন্ত্রীর পাঁচ লাখ টাকার সম্পদ পাঁচ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ লাখ ২ হাজার ১৫১ টাকায়। এ সময় তার স্বামীর সম্পদ আট লাখ ৮০ হাজার টাকা বেড়েছে এবং যুক্ত হয়েছে একটি বিলাসবহুল গাড়ি; নিজের নামে ৩৩ লাখ টাকার ১০ কাঠা জমি, আট লাখ টাকার স্বর্ণসহ অনেক অর্থ।চাঁদপুর-২ আসন থেকে এবারও আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী হয়েছেন। তবে তিনিসহ চাঁদপুর জেলার সব প্রার্থীই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৪ জনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে ডা. দীপু মনির পেশা থেকে বছরে তিন লাখ টাকা আয় থাকলেও এবার তার আয় শুধু মন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্ত পারিতোষিক ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা ভাতা।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে নগদ আছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা ও স্বামীর নামে চার লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে নিজের নামে ছিল দুই লাখ ৭০ হাজার ও স্বামীর নামে আট লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
আগে তাদের কোনো টাকা না থাকলেও পাঁচ বছর পর এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে ১৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৮ টাকা এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন তথ্য অনুযায়ী স্বামীর নামে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার টাকা আছে। শেয়ার ও বন্ডে স্বামী-স্ত্রী কারও নামে কোনো বিনিয়োগ না থাকলেও সঞ্চয়পত্রে নিজের নামে আছে ২২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬৩ টাকা। আগে স্বামীর ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণ থাকলেও এবার ঘরটি ফাঁকা রয়েছে। আসবাবপত্র নিজ নামে দ্বিগুণ হয়ে এক লাখ টাকা হলেও স্বামীর নামে ৫০ হাজার টাকার আসবাব অপরিবর্তিত আছে। এ ছাড়া অন্যান্য হিসাবে স্বামীর নামে আছে আরও আট লাখ ৭৫ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে পাঁচ বছরে তার নিজের নামে ৩৩ লাখ টাকা দামে ১০ কাঠা অকৃষিজমি যুক্ত হয়েছে। স্বামীর নামের আগের ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা অকৃষিজমি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় উল্লেখ করে একই দামে এবার দুটি ফ্ল্যাটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তার দায়দেনার ঘরে লেখা হয়েছে 'প্রযোজ্য নয়'।

সূত্র :http://www.samakal.net/2013/12/25/28549



৪৫) শেখ আসলাম : নন-মেট্রিক আসলামের শতকোটি টাকা 
অষ্টম শ্রেণি পাশ করা ঢাকা- ১৪ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক পাঁচ বছরে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ল্যান্ড ডেভলপমেন্ট, রিয়েল এস্টেট, কেমিক্যাল আমদানি, কনজ্যুমার প্রোডাক্টস ও ট্রেডিং ব্যবসা করে নিজের নামের পাশাপাশি স্ত্রীর নামেও শত শত কোটি টাকার সম্পদ তৈরি করেছেন। এছাড়া নবম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। দশম শ্রেণি পাশ করা মমতাজ গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ।ব্যবহার করেন ল্যান্ড ক্রুজার এবার তিনি মানিকগঞ্জ-২ আসনে থেকে এমপি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। অষ্টম শ্রেণি পাশ আসলামুল হক যেন টাকার মেশিন: ২০০৮ সালে ইসিতে দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এমপি আসলামের মোট করযোগ্য আয় ছিল ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা।এর মধ্যে কর প্রদান করেন ১১ হাজার ৮৫০ টাকা। বর্তমানে মিরপুরের এমপি আসলামের সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ। আয়ের উৎস হিসেবে দেখা গেছে, তিনি বছরে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা আয় করেন এবং স্ত্রী আয় করেন ২ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ টাকা। তবে স্ত্রীর কোনো পেশার কথা উল্লেখ করেননি। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে অস্থাবর সম্পদ বানিয়েছেন। সালে এমপি আসলামের কাছে নগদ টাকা ছিল ১৫ হাজার ৫০০ টাকা। এখন তার কাছে নগদ টাকার পরিমাণ ২ কোটি লাখ ১৩ লাখ ১৯ হাজার ০৩৯ টাকা।এছাড়া স্ত্রীর কাছে নগদ টাকার পরিমাণ ৫৭ লাখ ৮২ হাজার ৯ টাকা। ২০০৮ সালে ব্যাংকে জমা ছিল ৮ লাখ টাকা।বর্তমানে নিজের নামে ২৪ হাজার ৪৩ টাকা জমা থাকলেও স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫০৬ টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখা গেছে বন্ড, ঋলপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত ও তালিকাভূক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার আছে ৮৫ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকার। এছাড়া স্ত্রীর নামে ১১ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার আছে। পোস্টাল সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ আছে ১২ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকার। এছাড়া একই খাতে স্ত্রীর নামে আছে ৫৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪২৯ টাকার। পরিবহন ব্যবসায় নিজের নামে ৮৭ লাখ ও স্ত্রীর নামে ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদ আছে। এছাড়া নিজের ও স্ত্রীর নামে ৮৩ ভরি স্বর্ণ আছে, যার কোনো মূল্য দেওয়া হয়নি। এছাড়া নিজে অন্যান্য খাত তিনি ৭ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৩ টাকা আয় করেন এবং স্ত্রী আয় করেন প্রায় ৯ লাখ টাকা। ৫ বছরে তিনি কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমির মালিক হয়েছেন। ২০০৮ সালে নিজ নামে সাড়ে ৩ বিঘা ও স্ত্রীর নামে ৮ বিঘা জমি ছিল। বর্তমানে এমপি আসলামুল হকের নামে ১৪ হাজার ১৭৮ শতাংশ জমি আছে এবং স্ত্রীর নামে ৩৯০র শতাংশ জমি আছে। এছাড়া এমপি আসলাম প্রতি বছর বাড়ি ভাড়া বাবদ ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আয় করেন। ২০০৮ স্ত্রীর নামে গাবতলী ও মিরপুর এলাকায় ৫২ কাঠা সম্পত্তির কথা উল্লেখ করলেও এবার তা এড়িয়ে গেছেন এমপি আসলাম

৪৬) মমতাজ : চড়েন অর্ধকোটি টাকা দামের গাড়িতে 
 মমতাজের অর্ধকোটি টাকার ল্যান্ড ক্রুজার মানিকগঞ্জ-২ আসনে একমাত্র বৈধ প্রার্থী হিসাবে এবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ। পেশা হিসাবে কণ্ঠশিল্পীর কথা উল্লেখ করেছেন। ২০০৮ সালের হলফনামায় আয়ের উৎস হিসাবে ব্যবসায় ২৬ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩ টাকা এবং কৃষি খাতে আয় দেখিয়েছিলেন ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে তার আয় কয়েকগুণ বেড়েছে। বর্তমানে বাৎসরিক আয়ের থেকে বেশি টাকা মূল্যের গাড়ি ব্যবহার করেন মমতাজ। তিনি বর্তমানে ৬৫ লাখ ৬ হাজার ২৫০ টাকা মূল্যের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার জিপও ব্যবহার করেন। পাশাপাশি তিনি কৃষিখাতে ৭০ হাজার এবং ব্যবসায় ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৩ টাকা আয় করেন। তবে তিনি কি ব্যবসা করেন এর কোনো কিছু উল্লেখ করেননি মমতাজ। ২০০৮ সালে তার কাছে নগদ টাকা ছিল মাত্র ৭ লাখ ১১ হাজার ৫৭ টাকা, ২০১৩ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার। নগদ টাকার পরিমাণ কমলেও বেড়েছে ব্যাংকে জমাকৃত টাকার পরিমাণ। ২০০৮ সালে মমতাজের ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ৫০ হাজার টাকা, বর্তমানে তার ব্যাংকে জমা ৩০ লাখ টাকা। বেড়েছে ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে তার কাছে ৩৫ ভরি স্বর্ণের গহনা আছে। ২০০৮ সালে নিজ নামে ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭৩৪ টাকা মূল্যের কৃষি জমি থাকার কথা উল্লেখ করা হলেও এবার এড়িয়ে গেছেন। ২০০৮ সালে পেশার আয়ের কথা উল্লেখ না করলেও বর্তমানে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া এমপি হিসাবে পারিতোষিক ও অন্যান্য খাতে বছরে আয় দেখিয়েছেন ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮৮১ টাকা। এবার তিনি ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাব পত্রের কথা উল্লেখ করেছেন ২০০৮ সালে যা উল্লেখ ছিল না। সংরক্ষিত আসনের এমপি পদ মমতাজের জীবনের যেন সব কিছু পরিবর্তন করে দিয়েছে। 

source : http://www.bdtomorrow.org/newsdetail/detail/41/59854





এগুলো হলো হলফনামাতে দেওয়া তথ্য।  কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এরা আরো বেশি সম্পদের মালিক।  ডিজিটালের নাম পদ্মা সেতু খেয়ে আর শেয়ার বাজার লুটপাট করেই আজ তারা এত সম্পদের মালিক 

এই লিস্ট আরো বড় হবে ইনশাল্লাহ 
















Viewing all articles
Browse latest Browse all 358

Trending Articles