Quantcast
Channel: Truth Revealer
Viewing all articles
Browse latest Browse all 358

দলদাস ‘আলু’ওয়ালা : বানরে সঙ্গীত গায়...আ ব দু ল হা ই শি ক দা র

$
0
0
নীতি, নৈতিকতা, আইন, সভ্যতা, মানবতা ও সংস্কৃতিকে বুড়িগঙ্গার দূষিত পানিতে ছুড়ে দিয়ে, গত ১২ জুন যখন আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আদালত আবার তিন দিনের রিমান্ডে পাঠায়, সেদিন মধ্য রাতে দৈনিক মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী একটি টিভি চ্যানেলের টকশো উপস্থাপন করতে গিয়ে বলেছিলেন, দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আজ কথা বলছি। আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আবারও তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট। কোথায় আছি আমরা?
আসলে এই দীর্ঘশ্বাস শুধু মতিউর রহমান চৌধুরীর একার নয়। এই দেশের বিবেকবান প্রতিটি মানুষের অন্তরভেদী আর্তনাদের মূল কথাই হলো, কোথায় আছি আমরা?
সরকার পরিণত হয়েছে ‘ঠাকুরমার ঝুলির’ রাক্ষস-খোক্কসে। রাষ্ট্র পরিণত হয়েছে নিপীড়ন যন্ত্রে। সমগ্র দেশ পরিণত হয়েছে ভয়াবহ এক মৃত্যু উপত্যকায়। ভয়ে-আতঙ্কে বোবা হয়ে আছে বেশিরভাগ মানুষ। যে-ই কথা বলতে যাচ্ছেন তার ওপরই নেমে আসছে নির্মম কুঠারাঘাত। আর এই রকম দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে শাসকদলের কৃপা পাওয়ার জন্য, শাসকদের কৃপা পাওয়ার কৃতজ্ঞতায়, যেখানে যত পদলেহী এবং প্রভুভক্ত গণমাধ্যম ও ব্যক্তিবর্গ ছিলেন তারা কোরাসে গাচ্ছেন সরকারের কীর্তন। সিন্ডিকেটেডভাবে চরম নির্যাতিত একজন বন্দি মানুষকে কেন আরও নির্যাতন করা হচ্ছে না’ কেন তাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে না— এই ক্ষোভে ছড়াচ্ছেন কুত্সা ও বিষোদগার! বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন অপপ্রচারের। সেই রকম সময়ে মতিউর রহমান চৌধুরীর মতো একজন সাংবাদিক ও সম্পাদকের কণ্ঠে দায়িত্বশীল খেদোক্তি শুনে সান্ত্বনা লাভ করলাম। যাক, তাহলে আমাদের সবকিছু এখনও শেষ হয়ে যায়নি। অন্যদিকে হঠাত্ করে সেদিন এবিএম মূসার মতো প্রবীণ ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের মুখে আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমান সম্পর্কে অসত্য কথা শুনে যুগপত্ ব্যথিত হই। মূসা ভাইও সরকারি কোরাসের কর্ণপটাহ বিদারণ করা তাণ্ডবে হয়েছিলেন বিভ্রান্ত। সেদিন শুনলাম বলছেন, ‘চাঁদে সাঈদীর ছবি দেখা গেছে’ জাতীয় সংবাদ ছাপিয়ে আমার দেশ গর্হিত অন্যায় করেছে। প্রথম কথা হলো, এই কথাটি সর্বৈব মিথ্যা। এ ধরনের কোনো খবর কোনোদিনই আমার দেশ-এ ছাপা হয়নি। বরং সরকারের গৃহপালিত পত্রিকাগুলোই এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করেছে। এখন তাদের কৃতকর্মের দায়ভার সরকার অত্যন্ত স্থূলভাবে আমার দেশ-এর ঘাড়ে স্থাপন করে নিজেদের বীরত্ব জাহির করছে। সরকার কী করে করুকগে। কিন্তু মূসা ভাই তো অন্যদের মতো নন। তিনি তো একজন জাত সাংবাদিক। তিনি কেন কোনো রকম যাচাই-বাছাই ছাড়া এই কুিসত কোরাসে গলা মেলাবেন? না, মূসা ভাই দিশা হারাননি। তিনি যখনই বুঝেছেন, সঙ্গে সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে আমাদের মতো সবাইকে মুগ্ধ করেছেন।

দুই.
ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনামলে পাদ্রী ও যাজকরা বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে চড়াও হয়ে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করে বেড়াতো। তারা হাটবাজারের লোকজনদের নানা উপঢৌকন দেয়ার লোভ দেখিয়ে একত্র করে খ্রিস্ট ধর্ম যে মহান ধর্ম, যিশু যে কত মহত্ তা প্রচার করতো। পাদ্রীদের বেশিরভাগই ছিল সাদা চামড়ার। তারা শাসকদের প্রটেকশনে হাজির হতো। আবার তাদের প্রটেকশন নিয়েই ফিরে যেত। তাদের মুখের ভাষাও ছিল অদ্ভুত। বহু কসরত করে এরা টুকটাক বাংলা শিখলেও সে বাংলার উচ্চারণ ছিল রীতিমত হাস্যকর। লোকেরা পাদ্রীদের মুখে এই কিম্ভূিকমাকার ‘বাংরেজি’ (বাংলা+ইংরেজি) ভাষা শুনে মজাও পেত। সেই সময়কার গল্প। এক পাদ্রী বক্তৃতা করছে, ‘লুক, এটা যিশু, সে হলো জগটের ‘আলু’। বাট নট পটেটো। ইট ইজ লাইট।’ লাইট মানে আলো। কিন্তু পাদ্রীর মুখের উচ্চারণের বিড়ম্বনায় ‘আলো’ হয়ে পড়লো ‘আলু’। আবার আলু মানে যে লাইট নয়, আলু যে পটেটো তা হয়তো পাদ্রীর এদেশীয় কোনো শিষ্য বলে দিয়েছিল। ফলে পাদ্রী যতবারই বলতো যিশু হলো জগটের ‘আলু’, ততবারই সংশোধনী দিত ‘নট পটেটো’, ‘ইট ইজ লাইট’। এ নিয়ে হাসির রোল পড়ে যেত সমাবেশস্থলে।
তো এখন থেকে শত বছর আগে পাদ্রীদের কল্যাণে যেভাবে আলো হয়ে পড়েছিল আলু, সেভাবে আজ বাংলাদেশেও সরকারের কদমবুচি গণমাধ্যম ও ‘বিশিষ্ট’ ব্যক্তিবর্গের মাত্রাজ্ঞানশূন্য চেঁচামেচির কারণে আমাদের আলোগুলোও এখন পরিণত হয়েছে এক একটি ‘আলু’তে। আর এসব আলুতে চেঁচামেচি আছে, কিন্তু সঙ্গীত নেই। কোলাহল আছে কিন্তু কল্যাণ নেই। কথা আছে কিন্তু তার মধ্যে কোনো কৌলিন্য নেই।
খুঁটার জোরে পাঁঠা কুঁদে। অতি পুরনো কথা। ওই পাঁঠার মতো সরকারের প্রযোজনায়, সরকারের পরিচালনায়, সরকারের অভিনয়ে, সরকারের পরিবেশনায়, চার স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে বসে জামাই আদরে পোলাও-কোর্মা খেয়ে, মিডিয়ার পাছার কাপড় খুলে যাওয়া নাচানাচির সামনে শাহবাগিরা যেভাবে আন্দোলন করেছে, আস্ফাালন করে দেশ ও জাতির বারোটা বাজিয়েছে, দেশে ডেকে এনেছে ভয়ানক বিপদ, ডেকে এনেছে বিদ্বেষ, ঘৃণা, হানাহানি, বিভক্তি; অপমান করেছে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের—তেমনিভাবে ‘বিশিষ্ট আলু’রাও মহানন্দে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের চৌদ্দগুষ্ঠী উদ্ধার করার কাজে অষ্ট্রপ্রহর নিয়োজিত রেখেছে নিজেদের কলম ও চোয়ালকে। এই কলম ও চোয়াল ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে এখন চলছে নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা— কে মাহমুদুর রহমানকে বেশি গালি দিতে পেরেছে, সেটাও এখন একটা আলোচনার বিষয় বলে মনে হচ্ছে। অর্থাত্ মাহমুদুর রহমানকে যে যত বেশি গালি দিতে পারবে যেন সে তত বেশি কাছে চলে যাবে সরকারপ্রধানের। ফলে জাতির কান ঝালাপালা। কত যে যুক্তিতর্ক উত্থাপন করা হচ্ছে তার কোনো সীমা সংখ্যা নেই! নেই তাদের ন্যায়-অন্যায়ের ভেদরেখা জ্ঞান।
এমনও দেখা যাচ্ছে, একজন যখন কষে গালাগাল করছে, অন্যরা আবার তাকে ‘বিশিষ্ট’ আখ্যা দিয়ে বলছে, ‘দেখুন তার মতো লোকও কথা বলতে বাধ্য হচ্ছে।’ এই বিশিষ্টরা আবার বন্য সারমেয়-এর মতো অনেক সময় সংঘবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ছে মাহমুদুর রহমানের ওপর। সে সময় আরেক দল তাদের পিঠ চাপড়ানি দিয়ে বলছে, কী চমত্কার এই ঝাঁপিয়ে পড়া! দেখুন এদের দাঁতগুলো কত তীক্ষষ্ট, এদের নখগুলো কত ধারালো! এদের চোখগুলো কেমন রোষকষায়িত! এদের আক্রমণভাগ কত কৌশলী! কত সমৃদ্ধ! কী অপূর্ব প্রগতিশীলতা এই হিংস্রতায়!
এসব ‘বিশিষ্টজন’ কারা? কী তাদের পরিচয়? তাদের আমলনামাই বা কী? খতিয়ে দেখারও সময় দিতে চাচ্ছে না দলদাসরা।
১৫ বুদ্ধিজীবী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কুশীলবরা তো আছেনই। ইদানীং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও কিছু কলমবাজ দলদাস। এদের মধ্যে ‘মহামহিম’ আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, ‘বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর দরকার নেই’ খ্যাত মুনতাসির মামুন দ্য গ্রেট, কলকাতায় এটা-ওটা খেয়ে ঘুরে বেড়ালো ও পান করে ‘স্মরণকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা’ ও হালের বঙ্গবন্ধুর সৈনিক শাহরিয়ার কবির এবং চট্টগ্রামের মান্নান। আমাদের রংপুরের আনিসুল হকও নাম লিখিয়েছেন এই খাতায়। ইদানীং মশিউল আলম নামের একজন ‘বিশিষ্ট’ সাংবাদিকও আমার দেশকে সাংবাদিকতা শেখানোর জন্য বিস্তর নছিহত করছেন।
তাদের অভিযোগগুলোও কৌতূহলোদ্দীপক। মাহমুদুর রহমানের লেখা নাকি যতটা না সাংবাদিকসুলভ, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক প্রচারণামূলক ছিল। আমার দেশ পত্রিকাটিও সাংবাদিকতার সংস্কৃতি ও নৈতিকতাবিরোধী এবং ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক।
মাহমুদুর রহমান ও আমার দেশ-এর কী অপরাধ? অপরাধ হলো, ‘ব্লগে নাস্তিকতার নামে কুিসত অসভ্যতা’, ‘ধর্মদ্রোহী নষ্ট তরুণের প্রতিকৃতি ব্লগার রাজিব’ জাতীয় শিরোনামের সংবাদ ছাপানো। আমার দেশ শাহবাগের মতো ‘মহান’! আন্দোলনকে বলেছে ‘নাস্তিক ব্লগারদের তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চ।’ এই জাতীয় সংবাদ পরিবেশন উস্কানিমূলক। বিপজ্জনক। এগুলো কবিরা গুনাহ! কারণ, এতে ব্লগারদের সঙ্গে জাফর ইকবাল সাহেবের নাম চলে এসেছে। এতে তার সম্মানহানি ঘটেছে। ‘প্রচণ্ড ইসলামবিদ্বেষী ব্লগার রাজীবের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে তার গার্ল ফ্রেন্ড...।’ তাদের কথা হলো, এই লেখার মাধ্যমে ওই গার্ল ফ্রেন্ডের সামাজিক সম্মান ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে! তাছাড়া ব্লগের এসব ‘মহান কর্ম’ জাতির সামনে তুলে ধরে মোটেই দায়িত্বশীল কাজ করেনি আমার দেশ। মানুষের সম্মানহানি ঘটে এমন কাজ করা খুবই অন্যায়।
তাহলে দাঁড়ালো কী? ইসলামের বিরুদ্ধে নোংরা কুিসত ভাষা ব্যবহার করে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে জঘন্য ভাষায় গালাগাল করে বিশ্বের ১০০ কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মধ্যে কোনোই পাপ নেই। দাড়ি-টুপি, পবিত্র কোরআন শরীফকে নিয়ে ইতর ইয়ার্কি করলেও কোনো দোষ নেই। বাংলাদেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রজনন কেন্দ্র বানাতে চাইলেও কোনো অন্যায় হয় না। ধর্মপ্রাণ আলেম-ওলামার মা-বাপ তুলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করলেও কোনো ভুল হয় না। জাতীয় ইতিহাসের বীর নায়কদের যাচ্ছেতাই ভাষায় অপমান করলেও কোনো দোষ হয় না। দোষ হয় যারা এসব সভ্যতা, সংস্কৃতি ও ধর্মীয়-বিদ্বেষী কুকর্ম চালাচ্ছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিলে। তারা যা বলছে তা সর্বসাধারণের কাছে তুলে ধরার মধ্যে কোনো দায়িত্বশীলতা নেই। দায়িত্বশীলতা হলো ওইসব জন্তু-জানোয়ারের পৃষ্ঠপোষকতা করা। তাদের ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ’ বলার মধ্যেই হলো ‘দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন।’ এখানে উস্কানিদাতা কে? এখানে সামাজিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজটি কার? কারা সমাজে ও দেশে ডেকে এনেছে অকল্যাণ? আমার দেশ, নাকি ওই দলদাসগুলো?

তিন.
কথায় বলে, সিংহের গর্জনের মধ্যে বীরত্ব আছে, কিন্তু বানরের ভেংচি অতিশয় বিরক্তিকর। এই বানরগুলো দায়িত্ব নিয়েছে দায়িত্বশীলতা শেখানোর। বানর দায়িত্ব নিয়েছে পিঠা ভাগ করার। বানরে সঙ্গীত গায় শিলা ভাসে জলে! এদের ‘মানুষ’ করা বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অসম্ভব। দেশ যেভাবে চলছে. এভাবে যদি চলে তাহলে এই অমানুষ, লাজ-লজ্জাহীন শাখামৃগদের বংশবৃদ্ধি হতেই থাকবে।
এরা আজ যে কারণে আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে কথা বলছে, সে কারণে তো ষাটের দশকে ইত্তেফাক, সত্তরের দশকে হক- কথা, দৈনিক গণকণ্ঠ কিংবা হলি ডে তাহলে গুরুতর পাপ করেছিল।
সেদিন এই পত্রিকাগুলো যে দেশপ্রেম, মানবপ্রেম ও দায়িত্বশীলতা দেখিয়েছিল, আজকের দলদাস আক্রান্ত বাংলাদেশে তো আমার দেশ সেই কাজটিই করছে। বরং উল্টো শিবিরে অবস্থান নিয়েছে দলদাসরা। এই দলদাসদেরই বিচার হওয়া উচিত জনতার আদালতে। কারণ তারা দেশের সংস্কৃতি, সম্প্রীতি এবং বিরাজমান ধর্মীয় ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, নিজেদের নিয়ে গেছে আধিপত্যবাদের পায়ের নিচে। তারা পরিণত হয়েছে নিছক পা-চাটা প্রাণীতে। আর আমার দেশ হয়ে উঠেছে সত্যের শিখা। এই শিখার রক্ষক বাংলাদেশের জনগণ। মাহমুদুর রহমান তো শত লাঞ্ছনা ও অত্যাচারের মুখেও দেশ ও জনগণের জন্য ঊর্ধ্বে তুলে রেখেছেন ন্যায়ের আলো। এক্ষেত্রে মাহমুদুর রহমান যদি নায়ক হন, তাহলে এই দলদাসরা তো নিছকই দোজখের বাসিন্দা।
এসব খ্যাতি ও প্রতিপত্তির ভিক্ষুকদের তো উচিত মাহমুদুর রহমানের কাছ থেকে প্রতিদিন দায়িত্বশীলতার শিক্ষা নেয়া। কীভাবে দেশ ও জনগণের জন্য নিজেকে উত্সর্গ করতে হয় তার শিক্ষা নেয়া। কীভাবে প্রবল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সাহস ও সততা নিয়ে লড়াই করতে হয় তার শিক্ষা নেয়া। কিন্তু সেই শিক্ষা কি এই আধিপত্যবাদের কাছে আত্মা বিক্রিকারী গোষ্ঠী কখনও নেবে? নেবে না। এরা হলো অন্ধকারের পেঁচা। পেঁচা কোনোদিনই সূর্যকে সহ্য করতে পারে না। কারণ সূর্যের আলো ফুটলে তো তার কেরদানি শেষ হয়ে যায়। সেজন্য এরা অহর্নিশ সূর্যকে গালমন্দ করে। যেভাবে তেঁতুল গাছের ঝোপের জোনাকি চাঁদকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে নিজের বীরত্ব জাহির করে।
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম যখন ধূমকেতুর মাধ্যমে এদেশে গণমুখী সাংবাদিকতা প্রবর্তন করেন, সে সময় আজকের অন্ধকারের প্রাণীদের পূর্বপূরুষরা ‘গেল গেল’ বলে পাড়া মাথায় তুলেছিল। তারাও নজরুলকে সাংবাদিকতা শেখাতে গিয়েছিল। শেখাতে গিয়েছিল দায়িত্বশীলতা। নজরুল এদের ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন। পাত্তাই দেননি। ভাগ্যিস নজরুল এসব সাম্রাজ্যবাদের দালাল-বাটপাড়দের হাড়ে হাড়ে চিনতেন। নইলে এদের গোশালায় জায়গা হতো তার। তার পক্ষে আর যাই হোক ‘জাতীয় কবি’ হওয়া হতো না।
এসব দালাল ও চামচা হলো অনেকটা গ্রাম দেশের খাঁচার ঘুঘুর মতো। চতুর লোকেরা খাঁচার ঘুঘু দিয়ে বনের ঘুঘুকে লোভের ফাঁদে ফেলে। তারপর আটক করে ওটাকেও খাঁচার ঘুঘু বানিয়ে ফেলে। আমাদের সৌভাগ্য মাহমুদুর রহমান এই পদলেহন করা, লেজ নাড়ানো দলদাসদের চিরদিন পা দিয়েই মাড়িয়ে গেছেন, পাশে বসার সুযোগ দেননি। দিলে আমার দেশও ডুবতো, আর তিনিও হতে পারতেন না বাংলাদেশের জনপ্রিয়তম সংবাদ-ব্যক্তিত্ব।

চার.
মাহমুদুর রহমান ও আমার দেশ-এর ওপর এই দলদাসদের বিরক্তি ও ক্রোধের কারণ অন্য জায়গায়। মাহমুদুর রহমান ও আমার দেশ-এর জন্যই এই দলদাসদের বহু কোশেশ ও যত্নে গড়ে তোলা শাহবাগ মঞ্চ ভেস্তে গেছে। মাহমুদুর রহমানের জন্যই শাহবাগের স্বরূপ চিনে ফেলেছিলেন এদেশের মানুষ। মাহমুদুর রহমানের জন্যই ধর্মদ্রোহী ব্লগারদের ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের নায়ক’ হওয়া হয়নি। মাহমুদুর রহমানের জন্যই আধিপত্যবাদের একটি জটিল-কুটিল নীলনকশা বরবাদ হয়ে গেছে। আর দালালগুলো দালালই রয়ে গেছে। মাঝখান থেকে উন্মোচিত হয়ে গেছে তাদের আসল চেহারা। ব্যর্থতার এই জ্বালা কি সহজে ভুলতে পারবে এই দালালগুলো? ভুলতে পারে না বলেই এরা তাদের স্বভাব চরিত্র অনুযায়ী যা তা বলে বেড়ায়। আর জ্ঞান দিতে আসে আমার দেশকে। ভ্যাম্পায়ার বা পিশাচ যেমন আলোকে সহ্য করতে পারে না, আলোকে গালাগাল করে সাফাই গায় অন্ধকারের পক্ষে, এরাও তেমনি করছে।
তো সেজন্যই দলদাস বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকদের বলি, মাহমুদুর রহমান কিংবা আমার দেশকে জ্ঞান দিতে না এসে নিজেদের কৃত পাপের জন্য অনুশোচনা করুন। দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আর ‘মানুষ’ হওয়ার জন্য নিজের চরকায় তেল দিন। চালুনির কখনোই উচিত নয় সুঁইকে নিন্দা করা। আপনারা আপনাদের রক্তে মিশে থাকা ভ্যাম্পায়ারের জীবাণু থেকে মুক্ত হোন। আগে জমজমের পানিতে গোসল করে তওবা করুন। আগে সুস্থ হোন। স্বাভাবিক হোন। তারপর দেশকে ভালোবাসার প্রশিক্ষণ নিন। তারপর আপনি আচরি বচন পরকে শেখাবেন।
আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে এই বিকারগ্রস্ত লোকগুলোর রাগের অন্ত নেই। আমার দেশ-এর প্রচার কেন বেড়ে গিয়েছিল তা দেখেও তাদের ব্রহ্মতালু গরম হয়ে গিয়েছিল। এই প্রচার বাড়ার মধ্যেও তারা আবিষ্কার করেছে উস্কানি। নীতিমালার লঙ্ঘন। চমত্কার! আপনাদের প্রচার বাড়ার কারণও কি তাহলে একই? না কি আপনাদের বেলায় আইন অন্য রকম হবে?
বাবাজীগণ, আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন আগে। আপনাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হোন আগে। তারপর যদি দেখা যায় আপনাদের বিশ্বাস, উচ্চারণ, লেখালেখি, আচরণ ও কর্ম সত্যি সত্যি বাংলাদেশের পক্ষে; তখন না হয় আমরা কথা বলবো। আপনাদের সুস্থতার আগে তো আমাদের বলতেই হবে, মিরজাফরের কাছ থেকে দেশপ্রেম শেখার কিছু নেই। আমার দেশ কোনোদিনই আপনাদের মতো পোঁদ পাকামী শিখবে না। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেবে না। আপনাদের মতো আধিপত্যবাদের দালালি নয়, বড় করে দেখবে দেশের স্বার্থকে। সেজন্যই বাংলাদেশের পথই আমার দেশ-এর পথ। এই পথের নিঃশঙ্কচিত্ত নায়ক মাহমুদুর রহমান। তারই মুখপত্র আমার দেশ।
a_hyesikder@yahoo.com
 
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/06/16/204471#.UdXfupyjJio

Viewing all articles
Browse latest Browse all 358

Trending Articles